সালেক সুফী
কাল ছিল ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অনুশীলন ম্যাচ। তিনটি খেলা ছিলো কাল. আসামের গৌহাটিতে আমাদের বাংলাদেশ ভালো খেলে জিতেছে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যাবধানে। হায়দ্রাবাদে হাই স্কোরিং ম্যাচে নিউজিল্যান্ড হারিয়েছে পাকিস্তানকে পাকিস্তানকে। বৃষ্টি পন্ড করে দিয়েছে আফগানিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি কোন বল না খেলেই। আমাদের নজর ছিল নিবিষ্ট বাংলাদেশ শ্রীলংকা ম্যাচ নিয়ে। যদিও অনুশীলন ম্যাচ সবার একটু গা ছাড়া ভাব থাকে। তবুও অনেক নাটক এবং বিতর্কের পর যে দল নিয়ে বাংলাদেশ গেলো সেই দলের আত্মবিশ্বাসের জন্য কাল অনুষ্টিত প্রথম ম্যাচ এবং একই মাঠে কয়েকদিন পরে শক্তিশালী ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় ম্যাচটি নিজেদের ঝালিয়ে নিয়ে যাচাই করার মোক্ষম সুযোগ। কাল আবার শঙ্কা ছিল অনুশীলনে আহত হয়ে অধিনায়ক সাকিবের অনুপস্থিতি। স্বস্তির জয় বাংলাদেশকে অনেক আত্মবিশ্বাসী করবে পরের অপেক্ষাকৃত কঠিন ম্যাচটিতে ভালো করার উৎসাহ যোগাবে।
দেয়ালে পিঠ রেখে বাংলাদেশ কাল ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যেভাবে ভালো বোলিং এন্ড তুখোড় ফিল্ডিং করে শ্রীলংকা দলকে ২৬৩ রানে সীমিত রেখেছিলো সেখান থেকে অনেকটাই দারুন ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত ছিল. জবাবে বাংলাদেশ তামিম জুনিয়র এবং লিটন দাসের ঝলমলে প্রথম উইকেট জুটির ১৩২ রানের পারটনশিপকে ভিত্তি করে ৭ উইকেটের বিশাল জয় ১৭ কোটি বাংলাদেশিদের আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার জ্বালানি দিয়েছে। জুনিয়র তামিমের ১০ চার আর ২ দৃষ্টিনন্দন ছক্কায় সাজানো ৮৪ রানের ইনিংসটি যদি বড় কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে থাকা সেটি হবে আশীর্বাদ। একই সঙ্গে কাল দীর্ঘ রান খরা থেকে বেরিয়ে এসে সাবলীল ছন্দময় ৬১ রান করেছে লিটন। এমনিতেই নানা কারণে কিংবদন্তি ওপেনার তামিম ইকবাল ছাড়া দল গেছে বিশ্বকাপ আসরে। বিগত বেশ কিছু ম্যাচে বাংলাদেশের ওপেনাররা হলে পানি পাচ্ছিলো না. টপ অর্ডার ছিল নড়বড়ে। সেখানে কাল জুনিয়র তামিম ( ৮৪) ,লিটন ( ৬১) ,তিনে খেলা মেহেদী মিরাজ (৬৭*) এবং মুশফিক ( ৩৫*) বাংলাদেশকে অনায়েসে জয় এনে দিয়েছে শ্রীলংকা দলের বিরুদ্ধে যাদের কাছে কিছু দিন আগে এশিয়া কাপে পর পর দুইবার হেরে বাংলাদেশের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল।
আমি ব্যাটিং স্বর্গ গুয়াহাটি উইকেটে টস হেরে বাংলাদেশের চমৎকার বোলিংকে বাহবা দিবো। শ্রীলংকা কিন্তু উড়ন্ত সূচনা করেছিল। নিশাঙ্কা ,কুশল পেরেরার মাধ্যমে। ওদের মারকুটে সাবলীল ব্যাটিং দেখে শঙ্কা জেগেছিলো। কাল কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে মেহেদী মিরাজ চমৎকার অধিনায়োকোট করেছে। বোলিং সম্পদ ব্যবহার ,ফিল্ডিং সাজানোতে মুন্সিয়ানা ছিল. স্পিনার্সরা উইকেট থেকে খুব একটা সহায়তা না পেয়েও আঁটোসাঁটো বোলিং করেছে। শেখ মেহেদী (৩/৩৬) , মেহেদী মিরাজ (১/৩২) ১৯ ওভারে মাত্র ৬৮ রান দিয়ে লংকান ব্যাটসম্যানদের নিয়ন্ত্রণের শেকলে বেঁধে রেখেছিলো। তাসকিন , শরিফুল ,তানজিম সাকিব নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। পুরো দলের তুখোড় ফিল্ডিং ছিল চোখ চেয়ে দেখার মত। পিথুন নিশাঙ্কার (৬৫) এবং ধনঞ্জয়া (৫৫) ছাড়া আর কেন লংকান ব্যাটসম্যান উইকেটে স্থিতু হতে পারে নি. ৭ উইকেটের এই বিশাল জয় বাংলাদেশকে অবশ্যই বড় কিছু করার জ্বালানি দিবে।
অনেকে বলবেন অনুশীলন ম্যাচ কিন্তু এটিও প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিরুদ্ধে নিজেদের যাচাই করার প্রস্তুতি ম্যাচ। সকালের সূর্য দেখে এখন যদিও দিন চেনা দায়। সকালে উজ্জ্বল সূর্য থাকলেও এখন কিন্তু অপরাহ্নে আকাশ কালো করে বর্ষা নামে। আশা করি বাংলাদেশের জন্য বর্ষায় যেন আশীর্বাদ হয়ে আসে. ভালো বোলিং ,তুখোড় ফিল্ডিং এবং টপ অর্ডারের দুরন্ত ব্যাটিং সব কিছুই ছিল মেঘ না চাইতেই আষাঢ়ের বারিধারা।