মাহবুব আলম
অর্ন্তবর্তী সরকারের এক মাস শেষ হলো মাত্র। এরই মধ্যে একের পর এক অসংখ্য দাবি উঠতে শুরু করেছে। এইসব দাবিতে সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্মারকলিপি পেশ। দেখে শুনে মনে হচ্ছে এখন বাকি আছে একমাত্র কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাদের পথে নামা। হয়তো দেখা যাবে দু’চার বা দশ দিনের মধ্যে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতারাও মাঠে নেমে পড়ছে তাদের কন্যাদের বিয়ের ব্যবস্থা করার দাবিতে। অথবা এমনও হতে পারে হতভাগা স্বামীরা মাঠে নেমে পড়েছে স্ত্রীদের নির্যাতন থেকে মুক্তির দাবিতে। এতে দোষের কিছু নেই। বরং এটাই স্বাভাবিক। কারণ দীর্ঘ বছর ধরে বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতাহীন সময়ে ভয়-ভীতি ও সন্ত্রস্ত অবস্থায় মানসম্মান এমনকি জীবন রক্ষার্থে মানুষ নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল। ঠিক যেমন করে শামুক তার নিজেকে খোলের মধ্যে গুটিয়ে নেয় ঠিক সেইভাবে। কিন্তু এখন সেই অবস্থার অবসান হয়েছে। মানুষ ভয় ভীতিহীন পরিবেশে মুক্ত বাতাসে ইচ্ছামতো নিঃশ্বাস নিতে পারছে। এ যেন বাঁধ ভাঙা পানির মতো উচ্ছ্বাস আবেগ। তাই দীর্ঘদিনের জমাকৃত দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে নেমেছে। শির উঁচু করে মুক্ত কণ্ঠে প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ দাবি তুলছে। মনের কথা বলছে। দীর্ঘদিনের জমানো কথা। দীর্ঘদিনের মনের ব্যথা। তাই একে অবজ্ঞা বা উপেক্ষা অথবা পরিহাস নয়, একে বাড়াবাড়ি নয়, একে স্বাগত জানাতে হবে। এটাই তো মুক্তির লক্ষ্য। এটাই তো স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতাকে হরণ করা যাবে না। হরণ করা ঠিক হবে না। একে বরং উৎসাহিত করতে হবে। বলতে হবে আপনাদের আর কার কার দাবি আছে নিয়ে আসুন। দেখি কী করা যায়। যদি তা হয় তাহলে হবে জুলাই অভ্যুত্থান ও আগস্ট বিপ্লবের সার্থকতা। এটা অন্য কেউ না বুঝলেও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা বুঝেছেন। এবং তারা যে বুঝেছেন তা তাদের বক্তব্য বিবৃতি ও কর্মকাণ্ডেই স্পষ্ট। বিশেষ করে জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে।
জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা অনুধাবন করছি যে, আমাদের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা অনেক। এই প্রত্যাশা পূরণে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি বলেছেন এজন্য আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি আরো বলেছেন, গত ১৬ বছরের দুঃখ কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আপনাদের যা চাওয়া তা লিখিত দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসঙ্গতভাবে যা কিছু করার আছে আমরা অবশ্যই করবো। দয়া করে আমাদের কাজ করতে দিন।
এখানে প্রশ্ন হলো প্রত্যাশাগুলো কি? এই প্রত্যাশাগুলো হচ্ছে – নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে তা জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, পেট্রোল ডিজেল গ্যাস বিদ্যুৎ পানির মূল্য হ্রাস, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষাঙ্গনের নৈরাজ্য ও দখলদারিত্ব দূর এবং মানসম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা করা, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নামে যে হয়রানি হয় তা বন্ধ করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা এবং তা উন্নত করা, হাট-বাজার, রাস্তাঘাট ও ফুটপাতের চাঁদাবাজি বন্ধ করা, পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়া এনে গণপরিবহনে নৈরাজ্য দূর করা, বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, রাস্তাঘাটে চলাফেরার নিরাপত্তা এবং ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা।
এছাড়াও জনগণ চায় খুনি, দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, লুটেরাদের শাস্তি। বিশেষ করে ব্যাংক লুটেরাদের শাস্তি। সেই সাথে গুম, হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য, কৃষক ও কৃষকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ সম্মান, ক্ষেত মজুর, গার্মেন্টস শ্রমিকসহ বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত শ্রমিকদের মর্যাদা ও ন্যায্য মজুরি, বেকারদের জন্য বেকার ভাতা, বয়স্কদের জন্য বয়স্ক ভাতা, মাদকমুক্ত জ্ঞানভিত্তিক মানবিক সমাজ। যে সমাজে সবাই মান-সম্মান নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। এক কথায় মানুষ চায় শান্তি। সর্বোপরি রাষ্ট্র সংস্কার বা রাষ্ট্রব্যবস্থার অমূল পরিবর্তন।
এ বিষয় ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রথম প্রত্যাশা, মুক্তির যে আকাক্সক্ষা ও আবহাওয়া তৈরি হয়েছে, তাকে মর্যাদা দেওয়া ও স্থায়ী করা। এরপর অনেকগুলো প্রত্যাশা আছে, যেমন অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দান। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ও মানুষকে আহত করেছে সেই অপরাধ আইনি ব্যবস্থার অধীনে আনা। পুলিশ ও র্যাবের হাতে যে আপামর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল তা লাগাম টেনে ধরা, সম্পদ পাচার লুন্ঠন ও দুর্নীতি বন্ধ করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, সব ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া, পুঁজিবাদী উন্নয়নের ধারা পরিহার করে উন্নয়নকে সামাজিক মালিকানার অভিমুখী করার নীতি গ্রহণ।
ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জনগণের এই মুহূর্তের বিভিন্ন প্রত্যাশার বিষয়গুলো তুলে ধরে বলেছেন, এই মুহূর্তে প্রধান করণীয় হচ্ছে, শিক্ষাকে গুরুত্ব দান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে একই সঙ্গে শিক্ষা-সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্র এই সত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য উপাচার্যদের দায়িত্ব নিতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিতভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
অন্যদিকে, দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ প্রায় সকল দল অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি তুলছে। অবশ্য, একই সঙ্গে তারা বলেছে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। এটাও জনগণের প্রত্যাশা। কারণ দুই যুগেরও বেশি সময় এদেশে কার্যত কোনো নির্বাচন হয়নি। কখনো জোর জুলুম করে বিরোধীদের বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন হয়েছে। কখনো দিনের ভোট রাতে হয়েছে। আবার কখনো ভোটার শূন্য, বিরোধীদল শূন্য নির্বাচন হয়েছে। ফলে মানুষ ভোট দিতে ভুলেই গেছে। আর নতুন প্রজন্ম যারা এক দশকে ধরে বা তারও পরে ভোটার হয়েছে তারা তো জানেই না কি করে ভোট দিতে হয়। এই অবস্থায় ভোটের দাবি নির্বাচনের দাবি খুবই ন্যায্য দাবি। তবে ইচ্ছা করলেই এখন ভোটের ব্যবস্থা করা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তাহলে জুলাই অভ্যুত্থান ও আগস্ট বিপ্লবের আকাক্সক্ষা মাঠে মারা যাবে। ঠিক যেভাবে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর হয়েছিল। ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থান হয় তিন জোটের রূপরেখা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে। সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে সেই সময় আন্দোলনের সকল শক্তি। কিন্তু ’৯১ সালের ২৭ জানুয়ারিতে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেও তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হয়নি। যদি হতো তাহলে গণতন্ত্রের অকাল মৃত্যু হতো না। তাই অন্তবর্তী সরকারকে বিগত স্বৈরশাসনের আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য সময় দিতে হবে। সেই সাথে নির্বাচনসহ রাষ্ট্র সংস্কার বা রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তনের বিষয় একটা মতানৈক্যে আসতে হবে। যা দলীয় সরকারের জন্য কঠিন। তাই অন্তবর্তী সরকারকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এবং এ জন্য তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই ইচ্ছা করলেও তারা তাদের প্রতিশ্রুতি ভাঙতে পারবে না।
এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বলেছেন, জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা আমাকে এক গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে। তারা এক নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। নতুন প্রজন্মের এই গভীর আকাক্সক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সংগ্রামে আমি একজন সহযোদ্ধা হিসেবে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের গড়তে হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ। বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন ছাত্র-জনতা আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। তাদের স্বপ্ন আমাদের স্বপ্ন। জাতির জীবনে তরুণরা একটা মহা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমরা সবাইকে এই সুযোগ ব্যবহার করার কাজে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করলাম আমরা আমাদের মতো নৈরাজ্যের কারণে সেটা যেন হাতছাড়া না করে ফেলি। এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এই সুযোগ আবারো হারিয়ে ফেললে আমরা জাতি হিসেবে পরাজিত হয়ে যাব।
ড. ইউনূস এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি ও তারা মানে অন্তবর্তী সরকার তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন সম্পন্ন করে দায়িত্ব ছাড়বেন। তার আগেও নয়, পরেও নয়। আর তাইতো তিনি তার ভাষণের শুরুতেই বলেছেন, আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব। আর নির্বাচন প্রসঙ্গে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। এই লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছেন। তবে একই সঙ্গে সবাইকে রাষ্ট্রসংস্কার নির্বাচন কমিশনসহ সামগ্রিক সংস্কারের জন্য যে সময় প্রয়োজন সেই কথাও তুলে ধরেছেন।
এখন প্রশ্ন হলো Ñ রাষ্ট্র সংস্কার কবে কখন কিভাবে শুরু হচ্ছে। আর সংস্কারের রূপরেখাটাই বা কি। এজন্য যে একটা রোড ম্যাপ দরকার বা প্রয়োজন তা কি প্রস্তুত হয়েছে? এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর – না প্রস্তুত হয়নি। তবে প্রস্তুতি যে শুরু হয়েছে তার আভাস ইঙ্গিত স্পষ্ট বিভিন্ন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে।
এখানে আরও একটা প্রশ্ন চলে এসেছে, সংস্কার না মৌলিক পরিবর্তন রাষ্ট্রযন্ত্রের। অর্থাৎ এটা কি আমূল পরিবর্তন না সংস্কার। এই প্রশ্নেরও এখনো মীমাংসা হয়নি। এখানে বলার দরকার মৌলিক পরিবর্তন অর্থাৎ আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সামাজিক বিপ্লব। সেই বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে আগে। এর জন্য প্রয়োজন যথেষ্ট সময়। অর্থাৎ অন্তবর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দিতেই হবে।
এখানে একটা পরিবর্তন ইতিমধ্যে আমরা লক্ষ্য করছি যে, আমি থেকে আমরা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অতীতে সরকার প্রধানের আমিত্ব থেকে বেরিয়ে এসেছে। এটাও একটা পরিবর্তন এটা আশাব্যঞ্জক ইতিবাচক দিক নেতৃত্বের।
এখানে আরো একটা বিষয় আলোচনার দাবি রাখে তাহলো – এই সংবিধান বহাল রেখেই নির্বাচন হবে, না নতুন সংবিধান প্রবর্তন করে। এখানে মনে রাখা দরকার যে, বর্তমান সংবিধান ইতিমধ্যে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। সংবিধানকে যেভাবে কাটাছেড়া করে সংবিধানের মৌলিকত্ব নষ্ট করা হয়েছে তা অব্যাহত রেখে আর যাই হোক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যাবে না। তাইতো সংবিধান পরিবর্তন অর্থাৎ পুনর্লিখন অথবা একে বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনা কথাও আসছে। আসছে এলাকাভিত্তিক নির্বাচনের পরিবর্তে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি। এছাড়া বর্তমান সংবিধানে নারী কোটা আছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৈরি সরকার কিভাবে সংসদে নারীদের জন্য নারী কোটা রাখবে? এটা মোটেও বোধগম্য নয়। তাই নতুন করে সংবিধান রচনার বিকল্প নেই। সর্বোপরি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের জন্য সংবিধান পরিবর্তন আবশ্যক। আবশ্যক বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বিভিন্ন কালা-কানুন বাতিলের জন্য। তাই প্রয়োজন একটা নতুন সংবিধান। এজন্য সর্বাগ্রে সংবিধান সভার নির্বাচন হতে হবে। যে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গঠিত গণপরিষদ বা সংবিধান সভা নতুন সংবিধান রচনা করবে এবং তা জাতির সামনে পেশ করে গণভোটের মাধ্যমে গ্রহণ করবে। তারপর নবগঠিত সংবিধান অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন করতে হবে। এবং তাহলেই পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হবে। অন্যথায় সংস্কারের নামে জগাখিচুড়ি হবে। আর তার পরিণাম অবশ্যাম্ভবীভাবে ভালো নয় খারাপ হতে বাধ্য। তাই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনা করে মীমাংসা করতে হবে। অবশ্য তার আগে অন্তবর্তী সরকারকে এ বিষয়ে অবশ্যই একটা রোড ম্যাপ হাজির করতে হবে। এটাই ব্যাপকভিত্তিক জনপ্রত্যাশা অন্তর্বতী সরকারের কাছে। শুধু তাই নয়, এটাই মূল প্রত্যাশা। ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্যই এই প্রত্যাশা। এখন দেখা যাক এই প্রত্যাশা পূরণে অন্তবর্তী সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এইজন্য অপেক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সেই অপেক্ষার প্রহর গুনছে দেশবাসী।
লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: প্রচ্ছদ