আজ সঙ্গীতশিল্পী সুমনা হকের জন্মদিন

কিছু মানুষ পর্দার আড়ালে থেকে আলো ছড়ায়। অনেক মানুষ তাদের নিয়ে জানতে পারে না অথচ তাদের প্রভাবটা থেকে যায় অজান্তে। সুমনা হক পর্দার আড়ালে থেকে প্রথমত নব্বই দশকীয় প্রজন্মের ভেতর বসবাস করেছেন এবং পরে আরো প্রতিভার পরিচয় দিয়ে হয়েছেন একজন সফল অলরাউন্ডার। তার কাজের ব্যাপ্তি বিজ্ঞাপন, গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকা এমন সৃজনশীল শাখায় এসেছে। রুচিশীল ব্যক্তিত্বের সমষ্টি সুমনা হক। আজ তার জন্মদিন।

ছেলেবেলায় বিটিভির বেলা ৩:২০ এর পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবির ফাঁকে ফাঁকে যে বিজ্ঞাপনগুলো হত তার বেশিরভাগের জিঙ্গেল ছিল সুমনা হকের গাওয়া। ফুয়াদ নাসের বাবুর মাধ্যমে তার জিঙ্গেল যাত্রা শুরু হয়েছিল। তার কণ্ঠের নাসিক্যের গুণটা দর্শক পছন্দ করেছিল এবং সেটাই জনপ্রিয়তার একটা মাত্রা এনে দেয় তাকে।

বিশেষ করে ‘ফ্রেশজেল’ এর বিজ্ঞাপনে তার কণ্ঠে ‘সুস্থ সুন্দর দাঁতের জন্য’ এ কথাটা বলার সময় ‘দাঁত’ শব্দে নাসিক্যতার প্রভাবে চন্দ্রবিন্দুর ব্যবহারটা ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। সুমনা হক স্মৃতিচারণায় বলেছেন তার বাড়ির পাশের বাড়ির ব্যালকনিতে দুটি ছেলেমেয়েকে এ বিজ্ঞাপন নিয়ে কথা বলতে শুনেছিলেন। একজন ‘দাঁত’ শব্দটা সাধারণভাবে বলতে দেখে আরেকজন ভুল ধরিয়ে বলেছিল-‘না না ‘দাঁত’ এভাবে হবে না, হবে ‘দাঁত’ (নাসিক্যতা দেখিয়ে)।

বিজ্ঞাপনগুলো সিনেমার ফাঁকে দেখানো হত এবং ঐ প্রজন্মের যারা এখনো নস্টালজিক হতে ভালোবাসে তাদের কাছে প্রায় মুখস্থই। সিনেমার সঙ্গে আমাদের ছোটবেলায় এভাবেই জানা-অজানাতে সুমনা হক মিশে গিয়েছিল বিজ্ঞাপনে।

গানের জগতে সুমনা হক আরো অসাধারণ। রবীন্দ্রসঙ্গীতের আলাদা অ্যালবাম করেছেন। তার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের আবহটা পাওয়া যায়। আধুনিক গানের পালাবদলে তার দখল দারুণ। সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ‘মায়াবী এ রাতে’।

সুমনা হক একজন ব্যক্তিত্বময়ী নারী। তার প্রতিভা বহুমুখী এবং সবই সৃজনশীল। জনপ্রিয়তার নেশায় না ডুবে সৃষ্টির আনন্দে একটা প্রজন্মের হৃদয় দখল করে যে আর্টিস্টরা কাজ করেছিল বাংলাদেশের বিনোদন জগতে তাদের মধ্যে সুমনা হক প্রথম কাতারের। একজন সুমনা হকের সঙ্গে তার সময়ে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের মধুর কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো সুমনা হককে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × four =