আনাড়ী ব্যাটিং করে এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলার সোনালি সুযোগ হারালো বাংলাদেশ

কাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ১৩৫/৮ স্কোরে সীমিত করে ম্যাচ জয়ের সহজ সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের ইনিংসে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আনাড়ির মতো ব্যাটিং করে ম্যাচ জয় করে ফাইনাল খেলার সহজ সুযোগ হারিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচের ভিডিও ক্লিপিং যতবার বাংলাদেশ দেখবে হতাশ হবে, লজ্জা পাবে। ধীর স্থির পরিকল্পনা করে ব্যাটিং করে ম্যাচ জয় করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ শুধু নিজেদের দোষারোপ করতে পারে। প্লেগে আক্রান্ত বাংলাদেশ ইনিংস শেষ হয় ১২৪/৯। ১১ রানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ।

জিতলেই ফাইনাল এমন  স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে টস জয়ী হয়ে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। অধিনায়ক লিটন কালও খেলতে পারেনি। কিন্তু পাঁচ প্রথম চয়েস বোলার নিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ১০ ওভারে ৫/৪৯ কোনঠাসা করে ফেলেছিলো। চাপ বজায় রেখে পাকিস্তানকে ১০০ রানে সীমিত রাখা কঠিন ছিল না।

মোহাম্মদ হারিস (৩১) , মোহাম্মদ নাওয়াজ (২৫), শাহীন শাহ আফ্রিদি (১৯) বেপরোয়া ব্যাটিং করে স্কোর ১৩৫/৮ পর্যন্ত নিয়ে যায়। ভালো বোলিং করার জন্য রিশাদ হোসেন (২/১৮), তাসকিন আহমেদ (৩/২৮) এবং মাহেদী হাসান (২/৩৮) কৃতিত্ব পেতেই পারে। কয়েকটি ক্যাচ ফস্কে না গেলে স্কোর হয়তো ১১৫-১২০ সীমিত থাকতো। পাকিস্তানের লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্ব দিতে হবে তাদের বোলারদের জন্য ন্যূনতম পুঁজি সৃষ্টির জন্য।

উইকেট কিছু ধীর গতির হলেও ১৩৬ রান  তাড়া করে ম্যাচ জয় করা বাংলাদেশের  আয়ত্বের বাইরে ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ লক্ষ্য স্থির করে পরিকল্পনা মতো ব্যাটিং করতে পারেনি প্রথম ওভারে ০ রানে পারভেজ ইমনকে শাহীন আফ্রিদি ফিরিয়ে দেয়ার পর পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ব্যাটিং করা তাওহীদ হৃদয়কেও ফিরিয়ে দেয় শাহীন। সাইফ হাসান নিজের ভূমিকায় সক্রিয় থাকলেও ইনিংস বড় করতে পারে নি. এর বাইরে শামীম হোসেন (৩০) ছাড়া সবাই বার্থ হয়েছে। শেষ দিকে রিশাদ চেষ্টা করলেও তখন অনেক দেরি হয়ে গাছে। এশিয়া কাপে জাকের আলী অনিকের উপর অনেক ভরসা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ দলকে পাওয়ার হিটিং বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় নি. গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে বাংলাদেশ ভালো বোলিং করলেও দুর্বল ব্যাটিং আর ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ের কারণে সুযোগ সদব্যাবহার করে ফাইনাল খেলতে বার্থ হলো. অনেক স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা হতাশায় পরিণত হলো বাংলাদেশের। দুর্ভাগ্য লিটনের আহত হবার কারণে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে পারলো না. সাইফ হাসান এই টুর্নামেন্টে নিজেকে নতুন করে চেনালো। মুস্তাফিজ ,তাসকিন ,রিশাদ ,মাহেদী নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছে। দুর্বল ফিল্ডিং বাংলাদেশের পারফরম্যান্সকে আরো উজ্জ্বল হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। অনেক ক্ষেত্রে একাদশ নির্বাচন বিতর্কিত ছিল. তবে দলটির শক্তিশালী হয়ে ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে. অভিজ্ঞতায় পরিণত হলে এশিয়া তথা বিশ্ব ক্রিকেটে এই দলটিকে সবাই সমীহের চোখে দেখবে।

পাকিস্তান ১৩৫/৮ ( মোহাম্মদ হারিস ৩১, মোহাম্মদ নাওয়াজ ২৫, সালমান আগা ১৯, শাহীন শাহ আফ্রিদি ১৯, তাসকিন আহমেদ ৩/ ২৮, রিশাদ হোসেন ২/১৮, মাহেদী হাসান ২/২৮)

বাংলাদেশ ১২৪/৯ ( শামীম হোসেন ৩০, সাইফ হাসান ১৮, রিশাদ হোসেন ১৬* ,নুরুল হাসান ১৬, শাহীন শাহ আফ্রিদি ৩/১৭, হারিস রউফ ৩/৩৩,সাইম আয়ুব ২/১৬)

পাকিস্তান ১১ রানে জয়ী.

ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় : শাহীন শাহ আফ্রিদি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

16 − 10 =