এক রিফিউজি পরিবারের গল্প নিয়ে ভারতীয় নির্মাতা অনিকেত দত্ত বানাচ্ছেন ‘দ্য ক্লাউডস ওয়েক নো ক্লকস’ নামের সিনেমা। চিত্রনাট্য লিখেছেন অনিকেত দত্ত ও রশ্নি সেন। এ প্রজেক্টে প্রযোজক হিসেবে যুক্ত হয়েছে দুই দেশের তিন প্রযোজক—জার্মানির ক্রিস্টোফ থোকের মোগাদর ফিল্মস, সেবাস্টিয়ান পপের স্টোকস ফিল্মস এবং সিঙ্গাপুরের জেরেমি চুয়ার প্রতিষ্ঠান পোটোকল। কেন্দ্রীয় দুই চরিত্রে অভিনয় করবেন বাংলাদেশের মোস্তফা মনওয়ার ও দীপান্বিতা মার্টিন।
ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দ্য ক্লাউডস ওয়েক নো ক্লকস সিনেমাটি তৈরি হচ্ছে দুই রোহিঙ্গার গল্প নিয়ে। গল্পে দেখা যাবে, খালিদ ও শারমিন তাদের আট বছরের ছেলে শোয়েবকে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। নিজ দেশের নিপীড়ন থেকে বাঁচতেই ভারতে পাড়ি জমায় তারা। নতুন ভূমিতে তাদের টিকে থাকার লড়াই উঠে আসবে এ সিনেমায়।
খালিদ ও শারমিন চরিত্রে দেখা যাবে মোস্তফা মনওয়ার ও দীপান্বিতাকে। এ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে দীপান্বিতা মার্টিন বলেন, ‘ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র উৎসব ইফিতে পরিচালক অনিকেত দত্তের সঙ্গে পরিচয়। অনিকেত ও প্রযোজক রশ্নি সেনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। তাঁদের সঙ্গে দুই বছর ধরে সিনেমাটি নিয়ে কথা হচ্ছিল। বুঝতে পারছিলাম, তাঁরা কীভাবে গল্পটি বলতে চাইছেন। আমি যে ধরনের অভিনয় করতে ভালোবাসি, সেটাই চাইছিলেন তাঁরা। আমি যখন গল্পের অ্যাপ্রোচ বুঝতে পারলাম, তখন অনিকেত দত্ত জানান, আমাকে নিয়ে তাঁরা কাজটি করতে চান। এভাবেই সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত হওয়া। এটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব লক্ষ্য করে নির্মিত হবে। তাই সবাই আন্তর্জাতিক প্রযোজকের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে সেটাও চূড়ান্ত হয়েছে।’
মোস্তফা মনওয়ার জানান, ২০২২ সাল থেকে সিনেমাটি নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে কথা হচ্ছে তাঁর। অভিনেতা বলেন, ‘এটা মূলত রিফিউজিদের গল্প। দুজন রোহিঙ্গা তাদের সন্তান নিয়ে বর্ডার পার হয়ে ভারতে স্থায়ী হতে চায়। সেখানে পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে। তারা একটি বন্যার অপেক্ষা করতে থাকে। তাদের ধারণা, বন্যা হলে বলবে তারা মূলত ভারতীয়, কিন্তু বন্যার পানিতে সব কাগজ ভেসে গেছে। গল্পটি শুনে আগ্রহী হয়েছি। সাধারণ হলেও খুব পাওয়ারফুল গল্প।’
মোস্তফা মনওয়ার বলেন, সিনেমার পুরো অংশের শুটিং হবে ভারতে। প্রধান দুই চরিত্রের মুখে থাকবে রোহিঙ্গাদের আঞ্চলিক ভাষা। চ্যালেঞ্জিং হলেও সহশিল্পী নিজ দেশের হওয়ায় কাজটি সহজ হবে বলে মনে করেন মোস্তফা মনওয়ার। তিনি বলেন, ‘আমার চরিত্রটি রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলে। এই ভাষা রপ্ত করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে ভারতে শুটিং করায় বেনিফিট পাব। কারণ, আমার যে চরিত্র, সে নিজের দেশ ছেড়ে নতুন এক পরিবেশে গিয়ে পড়ে। চরিত্ররা যেমন নতুন পরিবেশে গিয়ে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে, তেমনি অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাদেরও নতুন জায়গায় গিয়ে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে। দীপান্বিতার সঙ্গে আগেও আমার কাজ হয়েছে। পরিচিত সহশিল্পী পেয়ে অনেকটা স্বস্তিতে আছি।’