আফগানিস্তানের সঙ্গে ওডিআই, টি২০ সিরিজের লাভ-ক্ষতি

সালেক সুফী: সময়টা ভালো নয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের।  মহাপণ্ডিতের ক্ষণে ক্ষণে বয়ান আর অন্ধ ভক্তদের বীর পূজা ছাড়া প্রাপ্তির খাতা প্রায় শূন্য। শুরু সেই আইসিসি টি২০ টুর্নামেন্ট ২০২১ ভরা ডুবি থেকেই। ঘরের মাঠে গৌরবের ডিসেম্বর ২০২১ মাসেও পাকিস্তানের সঙ্গে নাকানি চুবানি। আইসিসি অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেটে লজ্জা। সে দিনের পুচকি আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘরের মাঠে হা পিত্তেস করতে করতে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ জিতলো ২-১ ব্যাবধানে। সিরিজ জয়ে সীমিত সময়ের জন্য আইসিসি  ওডিআই রাংকিংয়ে শীর্ষে উঠে বাংলাদেশ। অর্জন বলতে এতটুকুই।  সিরিজের শেষ খেলাটি হেসে খেলে আফগানিস্তান জিতে নেওয়ায় বাংলাদেশ একসঙ্গে তিনটি সুযোগ  হারায়।  জিতলে বাংলাদেশ ১১০ পয়েন্টস অর্জন করে লিগে অবস্থান সুসংহত করার পাশাপাশি আইসিসি ‌র‌্যাংকিং ৭ উন্নীত হতো এবং আফগানিস্তানকে প্রথমবারের মতো ওডিআই সিরিজ হোয়াইট ওয়াশ করতে পারতো।

সিরিজ জিতলেও বাংলাদেশ প্রত্যাশা অনুযায়ী ডমিনেট করতে পারেনি। তামিম, সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ কেউ প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। ব্যাটিংয়ে লিটন ছাড়া কেউ ধারাবাহিক ছিল না। একটি করে ইনিংস ভালো ব্যাটিং করেছে আফিফ, মুশফিক এবং মেহেদী মিরাজ। খেলার ধরণ থেকে অনেকের মনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। আফগানিস্তান বড় দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ খুব একটা পায় না। সেই তুলনায় সিরিজ হেরে গেলেও ওদের অর্জন কম হয়নি।

টি২০ ফরম্যাটে আফগানিস্তান তুলনামূলক অনেক উন্নত মানের। অথচ প্রথম ম্যাচটি অপ্রত্যাশিত ভাবে ১৫৫ রানের  স্বল্প পুঁজি নিয়েও জিতে নেয় বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও লিটন এবং আফিফা ছাড়া ব্যাট হাতে সবাই ব্যর্থ। তবে আফগানিস্তান খাপছাড়া ব্যাটিং করে। টি২০ সিরিজ থেকেও বাংলাদেশের অর্জন এতটুকুই।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের টি২০ ফরম্যাটের দুর্বলতা নিদারুণভাবে ফুটে উঠেছে। অনেক সুশৃঙ্খল বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের মোকাবিলায় বাংলাদেশ খেই হারিয়ে ১১৫/৯ করতে সক্ষম হয়। আফগানিস্তান বাংলাদেশের দুর্বল বোলিং এবং জঘন্য ফিল্ডিংয়ের সুবাদে হেসে খেলে ৮ উইকেটে জিতে সিরিজ জয় করে। এই জয়ে আফগানিস্তান র‌্যাংকিংয়ে ৭ম এবং পরাজয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ১০ম।

অনেক কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। সাকিব, তামিমদের অন্ধ ভক্ত ওদের দুর্বলতা নিয়ে ভাবে না। বিসিবি যে এতো দিনেও তথাকথিত অপরিহার্য তারকাদের মানসম্পন্ন বদলি খেলোয়াড় পেলো না সেটি এখন বড় সমস্যা। অথচ সীমিত সুযোগে মানসম্পন্ন তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসছে এমনকি আফগান দলেও। বিসিবিতে  যোগ্য মানুষ যথাস্থানে নেই এটি ক্রমাগত দিনের আলোর মতোই ফুটে উঠছে। টি২০ তে মুনিম শাহরিয়ার, রাব্বী, নাঈম পরীক্ষা ফেল করলো। ইমরুল  কায়েস, এনামুল হকদের যাচাই করা যেত।

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ব্যালান্স শিটে অর্জন নিতান্তই সামান্য।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen − 6 =