আফগানিস্তানের সঙ্গে ওডিআই সিরিজ চ্যালেঞ্জ

সালেক সুফী

দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ ধবল ধোলাইয়ের পর আফগানিস্তানের মতো তুখোড় সীমিত ওভার ক্রিকেট খেলুড়ে দলের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছে বাংলাদেশ। যদিও তিন ফরম্যাটের মধ্যে ওডিআইতে বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত বেশি স্বচ্ছন্দ। তবুও ভেঙে পড়া মনোবলের বাংলাদেশ এই মুহূর্তে উড়তে থাকা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজে কিভাবে লড়াই করে সেটি দেখবার বিষয়ে।

দলনায়ক নিয়ে নানা মিডিয়া হাইপ সৃষ্টি সত্ত্বেও নাজমুল হাসান শান্তকে অধিনায়ক রেখে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। দলে নেই বাংলাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম সেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং উইকেট রক্ষক লিটন কুমার দাস।

সম্প্রতি রাজনৈতিক কারণে সাকিব নিজের ঘোষিত শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারেনি ঢাকার মিরপুরে শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। কিন্তু দেশের বাইরে খেলায় সেই অসুবিধা থাকার কথা নেই। তবুও অনুশীলনের অভাব যুক্তি দিয়ে সাকিবকে স্কোয়াডে রাখা হয়নি। লিটনের বাদ পড়া বিষয়ে কিছু বলা হয় নি। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত শেষ টেস্ট ম্যাচে অসুস্থতার কারণে শেষ মুহূর্তে লিটনকে পরিবর্তন করা হয়।

৬, ৯ এবং ১১ নভেম্বর শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচ তিনটি।

বাংলাদেশ স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মুশফিকুর রাহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ (সহ অধিনায়ক), রিশাদ হোসাইন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা।

বলা যায় বোলিং আক্রমণ অনেক সুসংহত, যদিও এখানেও সাকিবের বোলিং মিস করবে বাংলাদেশ। তবুও মিরাজ, নাসুমের সঙ্গে রিশাদের সংযুক্তি বাংলাদেশকে বিকল্প দিবে। তাসকিন, মুস্তাফিজ, শরিফুলের সঙ্গে নাহিদ রানাকে দলে নেওয়া ঠিক আছে। কিন্তু দেখতে হবে তরুণ বোলারের লোড ম্যানেজমেন্ট যেন বজায় থাকে। যে কারণে তাসকিন এবং শরিফুলকে টেস্ট সিরিজে খেলানো হয়নি সেই একই কারণে নাহিদকে যেন সীমিত ব্যবহার করা হয় এই সিরিজে।  এর কিছু দিন পরেই তিন ফরম্যাটে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাবে বাংলাদেশ।

বোলিং নিয়ে প্রশ্ন কম থাকলেও ব্যাটিং নিয়ে সংশয় আছে। বাংলাদেশের টপ অর্ডার বরাবরই নড়বড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ব্যাটিং খাবি খেয়েছে। টপ, মিডল, লেট্ অর্ডার কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। সৌম্য এবং তানজিদ তামিমকে ওপেনার হিসাবে দলে নিয়ে ঝুঁকি নিয়েছে নির্বাচকরা। জাকের হাসান চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেকে ব্যর্থ হয়েছে। নাজমুল শান্ত, মুশফিক নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী, অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ এমনকি রিশাদ হোসেনের প্রতি ভরসা করতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক স্কোর করতে হলে। তুখোড় স্পিন আক্রমণ এবং শক্তিশালী পেস আফগান আক্রমণ কিন্তু বাংলাদেশকে স্বস্তি দিবে না।

বাংলাদেশের হাতে কিন্তু বিকল্প খুব ছিল না। ঘরোয়া ক্রিকেটের ছন্ন ছাড়া অবস্থায় পাইপ লাইন আদৌ সমৃদ্ধ না। আমার কাছে সাকিব আল হাসানকে অনুশীলনের অপ্রতুলতার কথা বেলে স্কোয়াডে না রাখার যুক্তি মনপুত হয়নি। সিরিজের পর সিরিজ এভাবেই খেলেছে সাকিব।  নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য দুই তিন দিনের অনুশীলন সেশন সাকিবের জন্য পর্যাপ্ত।

সব ফরম্যাটে তলানির দিকে ধাবমান বাংলাদেশকে এই সিরিজে ভালো খেলে আস্থা ফিরিয়ে আনতেই হবে। কিন্তু ঘোষিত স্কোয়াড আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান  তুখোড়  আফগানিস্তান দলের বিরুদ্ধে ওদের অধিক পরিচিত শারজায় কতটুকু সফল হবে সংশয় আছে। তবু স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে।  তবে সেই ক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ কিন্তু ধারাবাহিকভাবে  ভালো ব্যাটিং এবং অনেক উন্নত ফিল্ডিং।

আফগানিস্তান স্কোয়াড: হাসমাতুল্লাহ শাহিদী (অধিনায়ক), আব্দুল মালিক, দারবিশ রাসূলি, ইকরাম অলিখিল, রাহ্মানুল্লাহ গুরবাজ, রিয়াজ হাসান, সাদিকুল্লাহ অতল। রাহমাত শাহ, আজমাতুল্লাহ ওমারজাই, গুলবদন নাইব, মোহাম্মদ নবি, নাঙ্গালিয়া খরোটে, রাশিদ খান, বিল্লাল সামি, ফরিদ আহমেদ, ফজল হক ফারুকী, এ এম গাজনফর, নাভীদ জাদরান, নূর আহমেদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

sixteen − five =