ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ব্যাপক হামলা, নিহত পাঁচ

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে দেশটিতে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজন ইয়েমেনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের অনুমতি ছাড়াই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ব্যক্তিগত নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে। একাত্তর টিভি

হুথি বিদ্রোহীদের ‘আল-মাসিরাহ টিভি’ স্টেশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ বিমান ইয়েমেনের একটি বিমানঘাঁটি, বিমানবন্দর ও সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

হুতির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেন আল-ইজি বলেন, আমাদের দেশ মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজ, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান দ্বারা ব্যাপক হামলার শিকার হয়েছে। এর জন্য দেশ দু’টিকে চরম মূল্য দিতে হবে এবং এই নির্লজ্জ আগ্রাসনের ভয়াবহ পরিণতি বহন করতে হবে।

সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানার উত্তরে আল-দাইলামি বিমানঘাঁটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং বিমানের গর্জন শোনা যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ হামলাকে একটি ‘প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, প্রয়োজনে তিনি আরও সামরিক পদক্ষেপের নির্দেশ দিতে সংকোচ করবেন না।

বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় যুদ্ধবিমান ও টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, হুতি বিদ্রোহীদের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনী আজ আমার নির্দেশে যুক্তরাজ্যের সাথে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সমর্থনে ইয়েমেনে হুতিদের ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি স্থাপনায় সফলভাবে হামলা চালিয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নৌপথে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারসহ এই হামলাকে তিনি হুতিদের ‘নজিরবিহীন’ হামলার ‘সরাসরি প্রতিক্রিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, হুতিদের হামলা মার্কিন সেনাবাহিনী, বেসামরিক নাবিক এবং আমাদের অংশীদারদের বিপন্ন করেছে। বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং নৌ চলাচলের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে  ফেলেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক বিবৃতিতে বলেছেন, হামলাগুলো ছিলো ‘প্রয়োজনীয় ও সঙ্গতিপূর্ণ।’

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, কানাডা, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর উদ্দেশ্য ছিলো উত্তেজনা কমানো ও লোহিত সাগরে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।

গেলো অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে ২৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী ও সামরিক বাহিনী লোহিত সাগরে ইসরাইলি জাহাজে হামলা শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ইসরাইল অভিমুখী যেকোনো দেশের জাহাজকে টার্গেট করার ঘোষণা দেয়। এর পরপরই হুতিদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × 4 =