উত্তপ্ত বিতর্কে মুখোমুখি হলেন হ্যারিস ও ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের আগামী ৫ নভেম্বরের  প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে এক উত্তপ্ত বিতর্কে মুখোমুখি হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সবকিছু ঠিক থাকলে দেশটিতে আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এটিই ছিল উভয়প্রার্থীর প্রথম এবং সম্ভবত শেষ বিতর্ক।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টায়) এবিসি নিউজের এই বিতর্কটি পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ার ন্যাশনাল কনস্টিটিউশান সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। টানা ৯০ মিনিটের এই বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস। এবিসি নিউজ ছাড়াও বিবিসি, সিএনএন, চ্যানেল ফোরসহ বিভিন্ন সম্প্রচার মাধ্যম বিতর্ক অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে।

বিতর্কে কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে ‘উগ্র’ এবং স্বৈরশাসকের দোসর বলে আক্রমণ শানান। জবাবে ট্রাম্প কমলাকে ‘মার্কসবাদী’ বলে উল্লেখ করেন।

কমলা (৫৯) ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘পুতিন একজন স্বৈরশাসক। তিনি সহজেই আপনাকে গিলে খাবেন।’

ট্রাম্প (৭৮) কমলাকে  মার্কসবাদী হিসেবে তুলে ধরে মিথ্যে দাবি করে বলেছেন, কমলা ও বাইডেন কারাগার, মানসিক হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লাখ লাখ লোককে দেশে ঢুকতে দিয়েছেন।

কমলা ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি খুবই দুর্ভাগ্য যে, ট্রাম্প তার ক্যারিয়ার আমেরিকান জনগণকে বিভাজিত করার কাজে ব্যবহার করেছেন।

এদিকে বিতর্কে ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের জয়কে মেনে নিতে আবারো অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সত্যিকার অর্থে তার জেতার অনেক প্রমাণ রয়েছে।

কমলা হ্যারিস বলেছেন, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মকর্মতারা তাকে মর্যাদাহীন বলে উল্লেখ করেছিলেনন। তিনি বলেন, বিশ্ব নেতারা ট্রাম্পকে নিয়ে হাসাহাসি করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, কমলা হ্যারিস ইসরাইলকে ঘৃণা করেন এবং তিনি প্রেসিডেন্ট হলে দুই বছরের মধ্যে ইসরাইল অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। ট্রাম্প আরও দাবি করেন, তিনি নেতৃত্বে থাকলে এই ধরনের যুদ্ধের সূচনা হতো না। গাজার চলমান সংকট এবং হামাসের হাতে জিম্মি বেসামরিক মানুষদের ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে ট্রাম্প সরাসরি বলেন, তার প্রশাসন কখনোই এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে দিত না।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর কমলা হ্যারিস পাল্টা জবাবে অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধের দাবি এবং একইসঙ্গে গাজার পুনর্গঠনের জন্য দ্বিরাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

এছাড়া গর্ভপাত থেকে শুরু করে মার্কিন গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ এই বিতর্কে জায়গা করে নেয়।

জুনে ট্রাম্পের সাথে টেলিভিশন বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিপর্যয়ের পর তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। ডেমোক্র্যাট দলের কনভেনশনে প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে মনোনয়ন দেয়া হয়। কৃষাঙ্গ ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস বর্তমানে আমেরিকার প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এদিকে মামলায় দোষী সাব্যস্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আর ৫৬ দিন বাকি। এই অবস্থায় বিতর্কে উভয় প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থানকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

two + four =