কবি শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন

চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের পাঁচের দশকের অন্যতম কবি শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় । বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গতকাল রাত ৩টা ৩৫ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কবির।দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে হঠাৎ-ই শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয় কবির। ছেলে সায়ন মুখোপাধ্যায় তখনই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু হাসপাতালের পৌঁছানোর আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের।

গড়িয়াহাট মোড়ের কাছে ‘মেঘমল্লার’ আবাসনের বাসিন্দা ছিলেন শরৎকুমার। স্ত্রী কবি বিজয়া মুখোপাধ্যায় আগেই প্রয়াত হয়েছেন। এবার চলে গেলেন সুনীল-শক্তির অন্যতম বন্ধু। শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলা সংস্কৃতি মহলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন বহু বিশিষ্ট সাহিত্যিক।

শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩১ সালে। প্রথম জীবনে নমিতা মুখোপাধ্যায় ছদ্মনামে লিখতেন। পেশায় ছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর একাধিক কবিতার বইয়ের মধ্যে অন্যতম ‘অন্ধকার লেবুবন’, ‘আহত ভ্রুবিলাস’ ইত্যাদি। কাব্যকৃতির জন্য বহু পুরস্কার পেয়েছেন।

কবি সুবোধ সরকার শোকপ্রকাশ করলেন শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। শোকবার্তায় সুবোধ বলেন, “শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় বাংলা ভাষার একজন অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য আধুনিক কবি। গত শতাব্দীর পাঁচের দশকের যে কাব্য আন্দোলন, সেই আন্দোলনের পুরোভাগে ছিলেন তিনি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে সেই আন্দোলনকে কবিতায় রূপান্তরিত করেছিলেন তিনি। ‘যে চারজন যুবক মধ্যরাতে কলকাতা শাসন করতেন”, শরৎকুমার ছিলেন তাদের অন্যতম। তিনি দীর্ঘজীবন লাভ করেছেন, সাহিত্য আকাডেমি-সহ বহু পুরস্কারে সম্মানিত। সোজ কথা সোজা ভাবে বলতে ভালবাসতেন। কখনও কখনও সেই কথা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। কিন্তু মাঠ ছেড়ে চলে যাননি। তার কবিতা ভবিষ্যত পাঠকের জন্য জমা রইল। আমার বিশ্বাস তাকে আবিষ্কার করবে পরবর্তী প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা।”

সংবাদ প্রতিদিন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 + fifteen =