কিংবদন্তি ইরানি নির্মাতাকে সস্ত্রীক হত্যা

সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দারিউশ মেহেরজুই ও তার স্ত্রী ওয়াহিদেহ মোহাম্মদিফার তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। সেই বাড়িতে ঢুকে তাদেরকে শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাতে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেটা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ।

ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিউশের মেয়ে মোনা মেহেরজুই শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাতে যখন বাবা-মাকে দেখতে যান, তখনই তাদেরকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। দুজনের গলায় ছুরির আঘাত ছিল।

কিছু দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলে ওয়াহিদেহ মোহাম্মদিফার জানান, তাদেরকে ছুরিকাঘাতের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেই হুমকির সঙ্গে হত্যার সংযোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এদিকে দারিউশের এই নির্মম মৃত্যুতে শোকাহত তার ভক্ত ও বিভিন্ন দেশের নির্মাতারা। ঢাকার নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও খবরটি শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কী ভয়ংকর খবর! ইরানের নিউ ওয়েব ফিল্ম মুভমেন্টের অন্যতম পথিকৃৎ, দারিউশ মেহেরজুইকে ছুরিকাঘাতে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেছে তার বাড়িতে। তার স্ত্রী ওয়াহিদেহ-কেও খুন করা হয়েছে। ভয়ানক!’

বিশ্বজুড়ে ইরানি চলচ্চিত্রের যে সুনাম, সেটার শুরুটা হয়েছিল সত্তরের দশকে। নতুন সেই জোয়ারে যারা সম্মুখে ছিলেন, ব্যতিক্রম ধাঁচের সিনেমা নির্মাণ করে পথ দেখিয়েছেন, তাদেরই একজন দারিউশ মেহেরজুই।

দারিউশ মেহেরজুইয়ের জন্ম ১৯৩৯ সালের ৮ ডিসেম্বর, তেহরানে। তার নির্মিত দ্বিতীয় সিনেমা ‘দ্য কাউ’কে ইরানের নিউ ওয়েব ফিল্ম মুভমেন্টের প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি সিনেমা হলো- ‘হামোন’, ‘পারি’, ‘লেইলা’, ‘দ্য সাইকেল’, ‘দ্য পোস্টম্যান’, ‘মিস্টার নেইভ’, ‘সান্তোরি’, ‘টু স্টে অ্যালাইভ’, ‘দ্য পেয়ার ট্রি’, ‘দ্য টেনান্টস’ ইত্যাদি। স্যান সেবাস্টিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন সিশেল, শিকাগো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিলভার হুগো পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশে ৪৯টি পুরস্কার জিতেছেন এই কিংবদন্তি নির্মাতা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twenty − 17 =