মানবদেহের অন্যতম অঙ্গ কিডনি। শরীর সুস্থ রাখতে হলে কিডনিকে অবহেলা করা যাবে না। অবহেলায় শরীরে বাসা বাঁধবে বিভিন্ন জটিলতা। রক্ত পরিশোধিত করা থেকে শরীরের বর্জ্য বের করে দেওয়াসহ সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে কিডনির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই শরীরের প্রয়োজনীয় এই অঙ্গে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে তার প্রভাব গিয়ে পড়বে পুরো শরীরে।
দেশের অনেকেই কিডনি রোগে ভুগলেও সহজে এই অসুখ ধরা পড়ে না। আর যখন ধরা পড়ে, তখন এতটাই গুরুতর আকার ধারণ করে যে, এতে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষকেই মৃত্যুমুখে পড়তে হয়। এ কারণে সতর্ক হওয়া দরকার। প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় ৬টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে কিডনি সুস্থ রাখা সম্ভব বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
নিয়মিত শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা কেবল আমাদের সক্রিয় রাখে না, পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যাও দূর করে। প্রতিদিন ব্যায়ামের কারণে শরীরের রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর বাইরে হার্ট এবং কিডনিও সুস্থ থাকে। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম আরও অনেক শারীরিক সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়। প্রতিদিন দৌড়ানো, হাঁটা, যোগব্যায়াম, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা কিডনি সুস্থ রাখতে দারুণ কাজ করে।
বিশুদ্ধ পানি পান: পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। প্রতিটি মানুষের দিনে অন্তত সাত-আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। বিশুদ্ধ পানি কিডনি থেকে সোডিয়াম এবং অন্যান্য টক্সিন বের করে দেয়। ফলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বিশেষত যাদের কিডনিতে পাথরের সমস্যা রয়েছে, তাদের বেশি পানি পান করা উচিত। কারণ পানি কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না।
ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান রক্তনালী ব্লক করে দেয়। এতে কিডনিতে রক্ত প্রবাহে বাধা পড়ে। ধূমপান রেনাল সেল কার্সিনোমা (এক ধরনের কিডনি ক্যান্সার) হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ায়। ধূমপান ছেড়ে দিলে কিডনি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা: ডায়াবেটিস রোগী, জন্মগত ওজন কম, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলদেহের অধিকারী এবং যাদের কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তাদের কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এসব উপসর্গ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো খুব জরুরি।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ নয়: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনই কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। চিকিৎসক যখন যে ওষুধ সুপারিশ করবেন, তখন সেই ওষুধ খেতে হবে। যখন তখন নিজের মতো ওষুধ খেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ব্যথানাশক ওষুধ যেমন- আইবুপ্রোফেন এবং নেপ্রোক্সেন কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা: নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তারা অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা দরকার।