বিসিবি নির্বাচনের বাকি সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে বিসিবি সংবিধান অনুযায়ী হতে পারতো। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের উচ্চবিলাসের কারণে সৃষ্ট নোংরামির কারণে সুস্থ নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত এবং বিতর্কিত হয়েছে। শেষ মুহূর্তে তামিমসহ কয়েকজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছে।
জাতীয় নির্বাচনের মত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবির) নির্বাচন বিগত সময়ে বিতর্কিত ছিল। নাজমুল হাসান পাপন মাফিয়া সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে নির্বাচন পদ্ধতি কলুষিত করেছিল। বিসিবি ছিল দুর্নীতির অভয় অরণ্য। নিবেদিত ক্রিকেট সংগঠকদের জন্য বিসিবি নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার কোন সুযোগ ছিল।
ছাত্র জনতার আন্দোলনরে ২০২৪ আধিপত্যবাদী সরকার পতন হওয়ার পর তৎকালীন বিসিবি সভাপতি সহ সাঙ্গ পাঙ্গরা পলায়ন করার একপর্যায়ে প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক ফারুক আহম্মদকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। ফারুক দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করলে কায়েমী স্বার্থবাদী মহল বিসিবিতে তার অবস্থান অস্বস্তিকর করে তোলে।
একপর্যায়ে আইসিসি এবং এসিসিতে গুরুত্বপূণ দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ ক্রিকেট কিংবদন্তি আমিনুল ইসলাম বুলবুল স্বেচ্ছায় অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য বিসিবির দায়িত্ব গ্রহণ করে। নিজের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা এবং ব্যক্তিগত ধান ধারণা থেকে বুলবুল স্বল্প সময়ে কিছু ব্যাতিক্রমধর্মী মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা করে। এগুলোর শুভ প্রতিক্রিয়া দেখে বুলবুল বিসিবি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
ওদিকে দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশের অপর কিংবদন্তি ক্রিকেটার তামিম ইকবাল বিসিবি নির্বাচনে আগ্রহী হয়ে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক শুরু করেছিল। বুলবুল এবং তামিম নিজেদের সময়ের শীর্ষ ক্রিকেটার ছিল। কিন্তু প্রশিক্ষক, সংগঠক, প্রশাসক হিসাবে বুলবুল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত।
বিসিবিতে বুলবুল তামিম যৌথভাবে ক্রিকেটের কল্যানে অনেক কাজ করতে পারতো। কিন্তু বাদ সাধলো দেশের নোংরা রাজনীতি। দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ভাবলো বিসিবি নির্বাচন বিশাল সুযোগ। নানা ফন্দি ফিকির করে বিএনপি নেতানেত্রীদের সন্তানদের কাউনন্সিলর করার কৌশল নিলো।
বিএনপি নেতা ইসরাক হোসেন সরাসরি বিসিবি দখলের ঘোষণা দিলো। দুঃখজনকভাবে তামিম স্বকীয়তা হারিয়ে বিএনপির সাজানো ফাঁদে পা দিয়ে নিজেকে বিতর্কিত করলোল। এদিকে আদালতের রায়ে বিতর্কিত ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ বাদ পড়লে তামিম নির্বাচনে ভরাডুবির সম্ভাবনায় নিজের প্রার্থিতা তুলে নিয়েছে।
তামিমের অভিযোগ নির্বাচন ঘিরে নোংরামি হয়েছে। কিন্তু নোংরামির অংশীদার নিজের অজান্তেই তামিম। দুঃখজনক যে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভুল কৌশলের কারণে দেশ তামিমের মতো যোগ্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্বের সেবা থেকে বঞ্চিত হলো।