গিরগিটির মতো রং বদলানোর শিক্ষা পাইনি: বুবলী

‘আশেপাশে হাজার কিছু হলেও দিন শেষে আমাকে নিয়েই এসব ব্যক্তির ব্যস্ততা। এমনকী নাওয়া-খাওয়া সব থাকে আমার চিন্তায়। এদেরকে রেসপন্স করতেও রুচিতে বাধে। আমার পারিবারিক শিক্ষা আমাকে কখনই দু’মুখো সাপের আচরণ শেখায়নি, সুবিধাবাদী হতে শেখায়নি, ধর্ম নিয়ে একেকবার একেকরকম মিথ্যা কথা বলে সাধারণ জনগণের আবেগ নিয়ে খেলা করে বোকা বানাতে শেখায়নি।’— চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন।

গিরগিটির মতো রং বদলানোর শিক্ষাটা পারিবারিকভাবে পাননি বুবলী। আর এজন্য গর্বিত তিনি। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘গিরগিটির মতো রং বদলাতে শেখায়নি, কাউকে ছুরি মেরে পরক্ষণেই নিজের কোনো সুবিধা হবে ভেবে সেই ছুরি মারা জায়গায় ব্যান্ডেজ করতে শেখায়নি। বিভিন্ন মানুষকে নিয়ে নানা টক শোতে অপমান করে কথা বলে নির্লজ্জের মতো হাসতে শেখায়নি, মানুষকে অসম্মান করতে শেখায়নি, হিংসা করতে শেখায়নি, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিতে শেখায়নি, কাউকে নানাভাবে অপমান করে আবার নিজের স্বার্থে সময় বুঝে প্রশংসা করতে করতে মুখে ফেনা তুলতেও শেখায়নি, বাস্তব জীবনেও অভিনয় করতে শেখায়নি, তাই আমি হয়তো আপনাদের অনেকের সঙ্গে ইনিয়ে-বিনিয়ে নাটক করতে পারি না। কিন্তু আমি এসব না শিখতে পারার জন্য গর্বিত।’

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করার বিষয়টি এ স্ট্যাটাসে উল্লেখ করে বুবলী বলেন, ‘সে বরেণ্য অভিনেত্রী শাবানা ম্যামের মতো সিনিয়র ব্যক্তিকে নিয়ে অপমানজনক, বেফাঁস মন্তব্য করে বসতে পারে, কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মতো এগিয়া যাওয়া নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে অপমান করে কথা বলে মুখটাকে বিশ্রী করে ব্যঙ্গ করতে পারে, ভালো মনের মানুষ বর্ষা আপুকে নিয়ে অপমানজনক কথা বলতে পারে, মাস্টারমেকার পরিচালক শ্রদ্ধেয় মালেক আফসারী স্যারকে নিয়ে অপমান করে কথা বলতে পারে যা কিনা রীতিমতো তার পারিবারিক শিক্ষাকেই উপস্থাপন করে, এজন্যই বলে ব্যবহারই বংশের পরিচয়।’

‘সে’ দিয়ে বুবলী কাকে ইঙ্গিত করেছেন, তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেননি। তবে সেই ব্যক্তি বুবলীর ছোট্ট ছেলেকে নিয়েও কটূক্তি করেছেন। তা স্মরণ করে বুবলী বলেন, ‘কত বাজে, নীচু মানসিকতার হলে সে একজন নিষ্পাপ বাচ্চাকেও কটূক্তি করতে ছাড়ে না। কিছুদিন আগে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে আমার সন্তানের গেটআপ নিয়ে ক্যামেরার সামনে বাদরের মতো ভেংচি কেটে বাজে মন্তব্য করতে ছাড়েনি। আমি মা হিসেবে ভালোবেসে আমার সন্তানকে নিয়ে কি করবো বা আমার সন্তানের ভালোর জন্য কি করবো সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ বিষয়ে কথা বলার আপনি কে? সারাক্ষণ মিথ্যা বানোয়াট উস্কানিমূলক ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে অথচ পরে আবার বলবে সে ব্যক্তি বিষয়ে কথা বলে না। সারাক্ষণ মানুষকে ছোট করে কথা বলবে। কিন্তু পরে বলবে সে মানুষকে ছোট করে কথা বলে না! একেক সময় একেক রং ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়ার নগ্ন খেলা এসব বহুরূপী, সস্তা মানসিকতার ব্যক্তিই পারে। লজ্জা!’

এ স্ট্যাটাস দেওয়ার পর অসংখ্য নেটিজেন তাতে মন্তব্য করেছেন। তাতে উঠে এসেছে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের নাম। নেটিজেনদের বক্তব্য— ‘অপু বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করেই এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন বুবলী।’ তবে যাকে উদ্দেশ্য করেই এই স্ট্যাটাস দেন না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বুবলী।

বুবলীর ভাষায়— ‘আমি একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কারো নোংরা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে আমাকে নিয়ে বা আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কেউ কোনো বেফাঁস মন্তব্য করলে বা কোনো ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার চেষ্টা করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করব। কারণ আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের যথেষ্ট প্রমাণ বুবলীর কাছে রয়েছে। তা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কিছুদিন পর পর যে ব্যক্তি এসব নোংরা খেলা শুরু করে বা যাদেরকে দিয়ে করায় তাদের সমস্ত কিছু সোশ্যাল মিডিয়া, পত্রিকা এবং ইউটিউবে রয়েছে; যা ডকুমেন্ট হিসেবে যথেষ্ট এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এসব নোংরামী পাত্তা দেবার রুচি থাকে না বলেই কথা বলা হয় না। কিন্তু চুপ থাকাকে যদি সে বা তারা সুযোগ পাওয়া মনে করে তাহলে তা হবে তাদের চরম ভুল।’

উল্লেখ, ব্যক্তিগত জীবনে চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বুবলী। এ সংসারে শেহজান খান বীর নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five × five =