চ্যাম্পিয়ন্সরা খেলা শেখালো

সালেক সুফী

বৃষ্টিবিঘ্নিত গা গরমের ম্যাচে বেঙ্গল টাইগার্সদের  ক্রিকেট ছবক দিলো শিরোপাধারী ত্রি লায়ন্স।  বৃষ্টির কারণে ৩৭ ওভারে  সীমিত ম্যাচে শুরুতে তরুণ তানজিদ তামিমের বীরোচিত ৪৫ রান আর মেহেদী মিরাজের উঁচু মানের ৭৪ রান ছাড়া উল্লেখ করার মত কিছুই ছিল না। মাহমুদুল্লাহ ভালো শুরু করেও আদিল রশিদের একটি বল ফুল টস বানিয়েও ১৮ রান করে ধরা পড়েন বাউন্ডারির কাছে।

আর কেউ ইংল্যান্ডের তুখোড় পেস এবং স্পিন বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। আনাড়ির মত উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে লিটন, শান্ত।  মুশফিকের বলটি হঠাৎ নিচু  হয়ে গিয়েছিলো। তাওহীদ হৃদয়ের টেকনিক দুর্বলতা আবারো প্রকাশ পেলো। বাংলাদেশ ব্যাটিং গভীরতার অভাব আবারো প্রমাণিত হলো।

ইংল্যান্ড কিন্তু ৯ জন বোলার ব্যবহার করেছে সবাইকে উইকেট এবং পরিবেশের সঙ্গে ধাতস্থ হতে। মার্ক উড বা স্যাম কুরান কোটা সম্পূর্ণ করলে বাংলাদেশ ১৮৮/৯ করতো কি না সন্দেহ আছে। যাহোক বাংলাদেশ বোলিং ফিল্ডিং মন্দ হয়নি। ইংল্যান্ড ওদের বর্তমান বাজবল কৌশল মতোই আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্যাটিং করেছে।

২৪.১ ওভারে ১৯৭/৬ করে ৭৭ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে। মঈন আলী খেলেছে ৩৯ বলে ৫৪ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস। জনি বেয়ার্স্ট (৩৪), জস বাটলার (৩০), জো রুট (২৬*) ভালো ব্যাটিং অনুশীলন করেছে। বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজ (২/২৩), তাসকিন (১/২৩), শরিফুল (১/৩২) মন্দ করেনি।

আমি যতই দিন যাচ্ছে তানজিদ তামিম মুগ্ধ হচ্ছি। মনে হচ্ছে যেন তরুণ তামিম ইকবালের প্রতিচ্ছবি। মেহেদী মিরাজের চৌকষ নৈপুণ্য এখন বিকশিত হচ্ছে। ওকে টপ অর্ডারে নিয়মিত স্থান করে দিতে হবে।

কালকের ম্যাচেও বাংলাদেশ সাকিব আল হাসান খেলেনি। পুরোপুরি সুস্থ না হয়েও নিউ জিলান্ডের কেন উইলিয়ামসন কিন্তু খেলে খেলে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে। সেখানে সাকিব গুরুতর আহত না হয়ে থাকলে খেলে উইকেট এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিলে ভালো করতো।

বাংলাদেশ কিন্তু শক্তিশালী ইংল্যান্ড দলের সাথে খেলে নিজেদের শক্তি সামর্থ বিষয়ে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছে। বুঝতে পেরেছে ২০১৫ এডিলেড ওভারে যে ইংল্যান্ডকে বাংলাদেশ হারিয়েছিল সেই দলটি থেকে গুনে, মানে, কৌশলে বর্তমান দলটি কতটা পরিশীলিত। মানসম্পন্ন বোলিং খেলতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের এখনো অনেক মানসিক ঘাটতি আছে সেটি কাল খেলা ম্যাচে সুস্পষ্ট ছিল।

যাহোক বৃষ্টি বাধা পেরিয়ে কাল খেলা হয়েছে। ইংল্যান্ড কিছুটা স্বস্তি নিয়েই ৫ অক্টোবর প্রথম ম্যাচে তেতে থাকা নিউ জিল্যান্ডের মোকাবিলা করবে আহমেডামদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের প্রথম খেলা হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় আফগানিস্তানের সঙ্গে।

সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × 4 =