পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল রবিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজে পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। খবর বাসস
দিনের বেলায় ঘরের মাঠে সচরাচর টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে না বাংলাদেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচটি দিনের বেলায় করার সিদ্বান্ত নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিশ্বপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং বিশ্বপ মঞ্চে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে দিনের বেলাতেই খেলতে হবে বাংলাদেশকে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্লাটফর্ম হিসেবেই নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম চার ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। এমন ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিশ^কাপের জন্য প্রস্তুতিটা বেশ ভালোই হয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। অবশ্য নিয়মিতভাবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা হয় না টাইগারদের।
চলতি সফরে জিম্বাবুয়ের যে পারফরমেন্স তাতে তাদের বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করাটাই হবে বাংলাদেশের জন্য আদর্শ ফল। তবে স্বাগতিক দলকে এখনো অনেক সমস্যার সমাধান কতে হবে।
গত দুই বছরে বোলাররা ভাল করলেও ব্যাটিং নিয়ে একনো চিন্তার বিষয় রয়েই গেছে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তসহ অধিকাংশ ব্যাটারই এখন পর্যন্ত জ¦লে উঠতে পারেননি। বিশ^কাপ শুরুর মাত্র তিন সপ্তাহ আগে যা বাংলাদেশ দলের জন্য চিন্তার বিষয়।
ব্যাট হাতে কেবলমাত্র ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং তাওহিদ হৃদয় কিছুটা ধারাবাহিকতা দেখাতে পেরেছেন। কিন্তু কোন ম্যাচেই পুরো ব্যাটিং লাইন আপ ক্লিক করতে ব্যর্থ হয়েছে।
কোন ম্যাচে ওপেনাররা ভাল শুরু করলেও মিডল অর্ডার ব্যাটাররা সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার মিডল অর্ডার জ¦লে উঠলেও শেষ দিকে লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছে।
সব মিলিয়ে পুরো ব্যাটিং লাইন আপের ধারাবাহিকতাই এই মুহূর্তে একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ^কাপের আগে যা সমাধান করতে হবে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গতকাল চতুর্থ ম্যাচে ৪২ রানের ব্যবধানে ১০ উইকেট পতন বাংলাদেশ দলের জন্য একটা কঠিন বার্তা। দুই ওপেনার তানজিদ ও সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ রান তুলে প্রমান করেছেন মিরপুরের উইকেট খুব জটিল এবং স্লো ছিলনা।
বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের সুবাদে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৫ রানে জয় পেলেও বাজে শট খেলে ব্যটাররা উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ াধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন,‘তানজিদও সৌম্য সরকারের ব্যাটিংয়ে আমরা দারুন খুশি। উইকেট খুব বেশি ভাল ছিলনা, তবে আমাদেরনআরও সতর্ক হয়ে ব্যাটিং করা উচিত ছিল। আশা করি পরের ম্যাচ আমরা ভুলগুলো শুধরে নিতে পারব।’
তিনি আরো বলেন,‘ উইকেট জটিল ছিল আমরা সবাই জানি । তবে সৌম্য এবং তামিমকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। তারাও(জিম্বাবুয়ে) ভাল বোলিং করেছে। আমি মনে করি পুরো সিরিজেই এ পর্যন্ত আমাদের বোলাররা ভাল করেছে।’
চতুর্থ ম্যাচে জিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২৩বারের মোকাবেলায় জয়ের সংখ্যাটা ১৬তে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের বিপক্ষে মাত্র ৭টি ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা।
দুই দলের মোকাবেলায় নিজ মাঠে সর্বশেষ সিরিজ জয় করা জিম্বাবুয়ে এবার যেন বাংলাদেশ সফরে পুরো সিরিজেই ধুকছে। তবে তাদের তরুণ খেলোয়াড়রা নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমান দিয়ে চলেছেন এবং অফ ফর্মে থাকা টপ অর্ডার এবং সিনিয়রদের কাছ থেকে কিছুটা সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে পরিত্রান পেতে পারে।
বাংলাদেশ দল (সম্ভাব্য): নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ, জাকের আলি, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকার, তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
জিম্বাবুয়ের দল(সম্ভাব্য) : সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ফারাজ আকরাম, ব্রায়ান বেনেট, রায়ান বার্ল, জোনাথন ক্যাম্পবেল, ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, লুক জঙ্গি, ক্লাইভ মাদান্দে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি, এন্সলি এনদলোভু, রিচার্ড এনগারাভা ও সিন উইলিয়ামস।