টানা ১১তম বুন্দেসলিগা শিরোপা ধরে রাখলো বায়ার্ন

জামাল মুসিয়ালার শেষ মুহূর্তের গোলে কোলনকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে বুন্দেসলিগার শিরোপা ধরে রাখলো বায়ার্ন মিউনিখ। আর এই জয়ে কপাল পড়েছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে। ঘরের মাঠে মেইঞ্জের সাথে ২-২ গোলে ড্র করায় আগের রাতে টেবিলে এগিয়ে থাকা ডর্টমুন্ড শিরোপা বঞ্চিত হয়েছে।

জার্মান ফরোয়ার্ড মুসিয়ালা দীর্ঘদিন দলের এই জয় মনে রাখবেন। কারন তার গোলেই বুন্দেসলিগায় বায়ার্নের টানা ১১তম শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে। মৌসুম শেষে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ডর্টমুন্ডের সাথে সমান ৭১ পয়েন্ট অর্জিত হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শিরোপা ধরে রাখে বেভারিয়ান্সরা।

জিততে পারলেই ডর্টমুন্ডের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত। কিন্তু ২৫ মিনিটের মধ্যে তারা ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে। তার উপর স্ট্রাইকার সেবাস্টিয়েন হলার পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। নাহলে ১৯ মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারতো সফরকারীরা। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য দুই গোল পরিশোধ করে ডর্টমুন্ড। কিন্তু এই এক পয়েন্ট শিরোপার জন্য যথেষ্ঠ ছিলনা।

বায়ার্ন ম্যানেজার থমাস টাচেল গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘শিরোপা জয়ের পর উদযাপনটা কঠিন ছিল। কারন ক্লাবের পক্ষ থেকে শিরোপা জয় সত্বেও প্রধান নির্বাহী অলিভার কান ও স্পোর্টিং ডাইরেক্টর হাসান সালিহামিডিজের বরখাস্তের ঘোষনা এসেছে। জয়ের উৎসব বাদ দিয়ে এখন আমাদের অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। গতকালই আমি এই সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছি।’

ডর্টমুন্ডের ম্যানেজার এডিন টারজিক বলেছেন, ‘এই ধরনের বিষয় মেনে নেয়া সত্যিই কঠিন।’ শেষ দিনে মাঠে নামার আগে ডর্টমুন্ড দুই পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে ছিল। বায়ার্ন জানতো শুধুমাত্র জয়ই তাদের শিরোপা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। একইসাথে ডর্টমুন্ডের পরাজয়ের আশাও তারা করেছে।

ফরাসি ফরোয়ার্ড কিংসলে কোম্যান আট মিনিটে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে ডিয়ান লুবিসিট পেনাল্টি থেকে কোলনকে সমতায় ফেরান। কিন্তু শেষ মিনিটে মুসিয়ালার গোলে বায়ানের শিরোপা নিশ্চিত হয়।

দিনের শুরুতে সিগন্যাল ইডুনা পার্কে ডর্টমুন্ডের শুরুটা দারুন হয়েছিল। কিন্তু ১৫ মিনিটে কর্ণার থেকে আন্দ্রেস হাঞ্চে-ওলসেনের গোলে পিছিয়ে পড়ে ডর্টমুন্ড। চার মিনিট পর রাফায়েল গুয়েরেইরোকে ফাউলের অপরাধে ডর্টমুন্ড পেনাল্টি আদায় করে নেয়। কিন্তু হলার সেই সুযোগ হাতছাড়া করলে সমতায় ফেরা হয়নি ডর্টমুন্ডের। ২৪ মিনিটে করিম ওনিসিও পোস্টের খুব কাছে থেকে হেডের সাহায্যে বল জালে জড়িয়ে মেইঞ্জের ব্যবধান দ্বিগুন করেন।

আগের তিন ম্যাচে ১৫ গোল করা ডর্টমুন্ডকে এসময় কিছুটা নার্ভাস দেখা গেছে। গোলমুখে গিয়ে বারবার তারা ব্যর্থ হয়েছে। আর এই সুযোগে কাউন্টার এ্যাটাক থেকে একের পর এক আক্রমন করে গেছে মেইঞ্জ। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে গুয়েরেইরো স্বাগতিকদের লড়াইয়ে ফেরার স্বপ্ন দেখান। ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে নিকলাস সুয়ে এরা এক গোল করলে ডর্টমুন্ড সমতায় ফিরে। কিন্তু জয় বঞ্চিত হয়ে শিরোপার দেখা পায়নি।

আরবি লিপজিগের কাছে ৪-২ গোলে পরাজিত হয়ে বুন্দেসলিগা থেকে রেলিগেটেড হয়ে গেছে শালকে। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও সমতায় ফিরেও শেষ রক্ষা হয়নি শালকের। শেষ ১০ মিনিটে আরো দুই গোল হজম করে কপাল পুড়ে তাদের।

ওয়ার্ডার ব্রেমেনের সাথে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জয়ের মাধ্যমে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন বার্লিন। হফেনহেইমের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে তলানির থেকে তৃতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে স্টুটগার্ট। রেলিগেশন প্লে-অফের মাধ্যমে তাদের দ্বিতীয় বিভাগের ভাগ্য নির্ধারিত হবে।

লেভারকুজেকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আরো এক মৌসুমের জন্য বুন্দেসলিগায় টিকে থাকলো বোচাম। টেবিলের ১৪তম স্থানে থেকে তারা মৌসুম শেষ করেছে। বরুসিয়া মনচেনগ্ল্যাডবাখের কাছে ২-০ গোলে হেরে গিয়েও ১৫তম স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে ১০ জনের অসবার্গ ।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 2 =