ডিজিটাল সেন্টারের স্মার্ট উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করলো এটুআই

জনগণের দোরগোড়ায় স্মার্টসেবা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিজিটাল সেন্টারের সেরা উদ্যোক্তাদের সনদ ও আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেছে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই)। প্রতি জেলা থেকে একজন নারী ও একজন পুরুষকে সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়। একইসঙ্গে দেশজুড়ে ডিজিটাল সেন্টারের সেরা তিন উদ্ভাবনী নারী উদ্যোক্তাদের স্মার্ট ডিভাইস (ট্যাব) প্রদান করা হয়।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দেশসেরা স্মার্ট উদ্যোক্তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত-সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। এছাড়াও ‘২০৪১ সালের স্মার্ট ডিজিটাল সেন্টার: উদ্যোক্তার স্বপ্ন এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার তিন বিজয়ী উদ্যোক্তাসহ দেশজুড়ে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১৪০ উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করে এটুআই।

স্মার্ট নাগরিক সেবাকে উৎসাহিতকরণের লক্ষ্যে দেশজুড়ে মাসব্যাপী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট সেবা ক্যাম্পেইন ২০২২’ সফলভাবে পালিত হয়েছে। একসেবা রিপোর্ট বিশ্লেষণ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের রিপোর্ট পর্যালোচনা, জেলা প্রশাসনের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ, সর্বাধিক সেবা প্রদান, সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা এবং পরবর্তী ই-সেবা ক্যাম্পেইনের সেরা পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে মোট ১৩৪ জন (জেলা প্রতি দুইজন, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন- চার জন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন- দুই জন) উদ্যোক্তাকে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন করা হয়।

প্রান্তিক জনগণের সরকারি-বেসরকারি স্মার্ট ডিজিটাল সেবার ব্যাপক প্রচারণা ও সেবা প্রদান; স্থানীয় সরকার, জেলা প্রশাসন এবং জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ে নাগরিকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী সফলভাবে এই ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়।

বিশেষ এই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে মাসব্যাপী লিফলেট বিতরণ, ভিডিও প্রদর্শনী, মাইকিং, উঠান-বৈঠক আয়োজনের মাধ্যমে স্মার্টসেবার বিষয়ে প্রচারণা করেন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা। এসময় বিশেষ শ্রেণির নাগরিকদের (বীর মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ইত্যাদি) বিনামূল্যে স্মার্টসেবা প্রদান করেন তারা। এছাড়াও ব্যাংক হিসাব খোলা ও রেমিট্যান্স আনয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও আর্থিক স্বাক্ষরতা বৃদ্ধিমূলক প্রচারণা করেন উদ্যোক্তরা।

ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ২০২১-এর সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে। সরকারি-বেসরকারি সেবাসমূহ ক্রমাগতভাবে স্মার্ট ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর হচ্ছে। ডিজিটাল সেবাকে আরও ত্বরান্বিত করতে ডিজিটাল সেন্টারের এক যুগপূর্তীর অনুষ্ঠানে দেশব্যাপী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট সেবা ক্যাম্পেইন ২০২২’ শীর্ষক প্রচারাভিযান দেশব্যাপী পালন করা হয়।

মাসব্যাপী এই ক্যাম্পেইনকালে সবমিলিয়ে ৭৮ লক্ষ ৭২ হাজার ২৯৪ টি স্মার্টসেবা প্রদান করেন ৮৬৬৩টি ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা। এসময় প্রায় ১০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়। রেমিট্যান্স গ্রহণ করা হয় ৬৭ কোটি। ডিজিটাল ব্যাংক হিসাব খোলা- ৫১ হাজার ৬৯৯ জনের ও নারী গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব খোলা হয় ১৭ হাজার ৭৮৪ জনের। এছাড়াও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ৩১০৪ জন ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করা হয়।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মাজেদুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান, ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর অশোক বিশ্বাস, ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মাসুম বিল্লাহ, কামাল হোসেন সৈকতসহ সারা দেশ থেকে আগত উদ্যোক্তা ও এটুআই সংশ্লিষ্টরা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

14 + 8 =