তমালিকা কর্মকার একজন বাংলাদেশী মডেল এবং নাট্য অভিনেত্রী। রাঢ়াঙ নাটকের শ্যামলী, ময়ূর সিংহাসন-এর কৃষ্ণা এবং বিদ্যাসাগর-এর রাধা চরিত্রগুলোর জন্য তিনি বিশেষ ভাবে পরিচিত। তিনি একই সাথে কোরিওগ্রাফার এবং প্রশিক্ষক। তিনি রাঢ়াঙ এর ১৭৫ টি মঞ্চাভিনয় করেছেন। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে সমানভাবে পদচারণা রয়েছে তার। তার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয় অন্য জীবন এর মাধ্যমে। তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রসমূহ হল এই ঘর এই সংসার (১৯৯৬), কিত্তনখোলা (২০০০), ও ঘেটুপুত্র কমলা (২০১২)। কিত্তনখোলা ছবিতে অভিনয়ের জন্য তমালিকা ২০০২ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
তমালিকা কর্মকারের জন্ম ২ জুলাই ১৯৭০ সালে খুলনায়। জন্মের ৮ মাস পরে তিনি তার পরিবারসহ ঢাকায় চলে আসেন। তিনি ১৯৭৮-১৯৮০ সাল পর্যন্ত বিটিভি তে প্রচারিত ফুলকুঁড়ি তে গল্প বলা এবং ছবি আঁকায় অংশ নিয়েছেন। তমালিকা কর্মকারের মাত্র ৩ বছর বয়সে তার অভিনয় জীবনের শুরু হয়। নাট্যকার গোলাম মোস্তফার কাছে তার অভিনয় জীবনের শুরু হয়। সাধারন নৃত্যে গহর জামিল, কথ্যকে নিকুঞ্জ বিহারি পাল এবং ছায়ানটে প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত এর চর্চা শুরু করেন।
তমালিকার অভিনয় শুরুটা মঞ্চ থেকেই, যখন তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। ১৯৯২ সালে আরণ্যক নাট্যদল প্রযোজিত মামুনুর রশীদের লেখা ও আজিজুল হাকিম নির্দেশিত নাটক পাথর এর মাধ্যমে তার মঞ্চাভিনয় শুরু। এরপর আরণ্যক দলের অন্যতম নাটক ইবলিস, জয়জয়ন্তী, খেলা খেলা, ওরা কদম আলী, প্রাকৃতজন কথা, রাঢ়াঙ, বিদ্যাসাগর এবং ময়ূর সিংহাসনে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে থিয়েটার অঙ্গনে বেশ জনপ্রিয়তা পান।
তমালিকার প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় অন্য জীবন এর মাধ্যমে। তবে সফলভাবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যাত্রা করে ১৯৯৬ সালে এই ঘর এই সংসার ছবিতে চিত্রনায়ক আলী রাজের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে। তার বিশেষ কিছু কাজের মধ্যে ২০০০ সালে কিত্তনখোলা চলচ্চিত্রে বেদের মেয়ে ডালিমন চরিত্র এবং ২০১২ সালের ঘেটুপুত্র কমলায় কমলার মা চরিত্র অন্যতম। ১৯৯৬ সালে তিনি লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর অত্যন্ত জনপ্রিয় নাটক কোথাও কেউ নেই তে অভিনয় করেছেন এবং এর মাধ্যমেই তিনি সবচেয়ে আলচিত হোন। এছাড়াও ‘নাট্যযুদ্ধ’ নামের একটি রিয়েলিটি শোয়ের বিচারক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। তিনি সিওল, দক্ষিণ কোরিয়াতে আন্তর্জাতিক “থিয়েটার ফেস্টিভাল” অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকারের “শিল্পকলা একাডেমী” এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যান। ২০১৩ সালে, তিনি “এনওয়াইএস এসেম্বলি” স্বীকৃতি লাভ করেন।