ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হলো পাকিস্তান। শুক্রবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তান ৫ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে। প্রথমে ব্যাট করে কেন উইলিয়ামসনের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৩ বল বাকী রেখে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান করে শিরোপা জয় করে পাকিস্তান।

ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে টস জিতে প্রথমে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। পেসার নাসিম শাহর করা প্রথমে পাঁচ ডেলিভারিতেই তিনটি চার মারেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ফিন অ্যালেন। তবে ওভারের শেষ বলে অ্যালেনকে থামান নাসিম। ৬ বলে ১২ রান করে আউট হন  অ্যালেন।

অ্যালেনের বিদায়ে উইকেটে গিয়েই মারমুখী হয়ে উঠেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ইনিংসের ৫ ওভার পর্যন্ত ৪টি চার মারেন তিনি। তার সাথে তাল মিলিয়ে ২টি চার আদায় করে নেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে। ষষ্ঠ ওভারে কনওয়ের উইকেট উপড়ে ফেলেন পেসার হারিস রউফ। দ্বিতীয় উইকেটে ২৬ বলে ৩৫ রান যোগ করেন  কনওয়ে-উইলিয়ামসন।

পাওয়ার প্লেতে ৫১ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর জুটি বাঁধেন উইলিয়ামসন ও গ্লেন ফিলিপস। ২টি ছক্কা ও ১টি চারে গড়া উঠা জুটিতে ৩৭ বলে ৫০ রান উঠে। যার  মধ্যে  ২২ বলে ২৯ রান করে আউট হন ফিলিপস।

চতুর্থ উইকেটে মার্ক চাপম্যানকে নিয়ে ২৬ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। ইনিংসের ১৫তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিতে ৩৩ বল খেলেন উইলিয়ামসন। অর্ধশতকের পাবার পরের ওভারেই বিদায় নেন কিউই অধিনায়ক। ৩৮ বল খেলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন তিনি।

উইলিয়ামসন ফেরার পর পরের দিকে চাপম্যান ১৯ বলে ২৫ ও জেমস নিশাম ১০ বলে ১৭ রান করেন। তবে শেষ ২৫ বলে ২৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রানের সংগ্রহ পায় ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। পাকিস্তানের নাসিম-রউফ ২টি করে উইকেট নেন।

১৬৪ রানের টার্গেটে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে ভাঙ্গে পাকিস্তানের জুটি। পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমকে ১৫ রানে থামিয়ে দেন নিউজিল্যান্ডের অফ-স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েল। তিন নম্বরে নামা শান মাসুদকেও ১৯ রানে বিদায় দেন ব্রেসওয়েল।

ব্রেসওয়েলের আউটের পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাকে লেগ রিফোর আউট করেন আরেক স্পিনার ইশ সোধি। ৪টি চারে ২৯ বলে ৩৪ রান করেন রিজওয়ান।

৭৪ রানে দলের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আউট হন রিজওয়ান। তখন ম্যাচ জিততে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৫১ বলে ৭৪ রান দরকার ছিলো পাকিস্তানের। আস্কিং রান রেট ১১ ছুঁই-ছুঁই হওয়ায় ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন হায়দার আলি ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। টিকনারের করা ১৩তম ওভারে ১১ ও সোধির করা ১৫তম ওভারে ২৫ রান নেন তারা। ১৬তম ওভারের প্রথম দুই বলেই চার মারেন হায়দার। আর পঞ্চম বলে হায়দারকে বিদায় করেন সাউদি।

৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৫ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হায়দার। চতুর্থ উইকেটে নাওয়াজ-হায়দার জুটি ২৬ বলে ৫৬ রান তুলে পাকিস্তানের হাতের মুঠোয় ম্যাচ নিয়ে আসেন। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে আসিফ আলিকে ১ রানে শিকার করেন টিকনার। ঐ ওভারের শেষ বলে ছক্কা মারেন নাওয়াজ। এতে শেষ ৩ ওভারে ২৩ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।

সাত নম্বরে ইফতেখার আহমেদকে নিয়ে বাকী কাজটুকু অনায়াসে শেষ করেন  নাওয়াজ। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন ইফতেখার। ষষ্ঠ উইকেটে ২০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রান তুলে তারা।

২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২২ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করেন নাওয়াজ। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৪ বলে অপরাজিত ২৫ রান করেন ইফতেখার। নিউজিল্যান্ডের ব্রেসওয়েল ৪ ওভারে ১৪ রানে ২ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন পাকিস্তানের নাওয়াজ। সিরিজ সেরা হন ব্রেসওয়েল।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

20 − sixteen =