দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের লক্ষ্য বাংলাদেশের

মিরপুরে প্রথম টেস্টে বাজে পারফমেন্সের দুঃস্মৃতি ভুলে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট ফরম্যাটে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী স্বাগতিক বাংলাদেশ। আগামীকাল থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।

দ্বিতীয় টেস্টের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো দ্বিতীয় টেস্টে জয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দল হিসেবে খেলা। ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই আমরা দল হিসেবে খেলতে চাই। ম্যাচ জয়ের জন্য আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবো।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। কারণ উপমহাদেশের কন্ডিশনে গত দশ বছর টেস্ট জিততে না পারার লজ্জা এবং অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বাংলাদেশের সফরে এসেছিলো প্রোটিয়ারা।

কিন্তু প্রথম টেস্টে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দাপটের সাথে সিরিজ শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৪ সালের পর উপমহাদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ নেয় প্রোটিয়ারা। এই জয়ে টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন পর্যন্ত টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫ মোকাবেলায় ১৩টিতে জয় ও ২টি ম্যাচ ড্র করেছে প্রোটিয়ারা।

বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা অসহায় আত্মসমর্পন করবে বলে ধারনা করা হয়েছিলো। কিন্তু স্বাগতিকদের অবাক করে সুইপ এবং রিভার্স সুইপ শটে টাইগার স্পিনারদের এলোমেলো করে দেয় প্রোটিয়া ব্যাটাররা।

প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। একাদশে থাকা অন্য দুই স্পিনার নাঈম হাসান এবং মেহেদি হাসান মিরাজের কাছ থেকে খুব বেশি সহযোগিতা পাননি তিনি।

তাইজুলের পর অন্যান্য বোলাররা কিছুটা ভালো করলেও ব্যর্থতা অব্যাহত রাখে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। ঐ ইনিংসে ব্যাটারদের ব্যর্থতাই ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দেয়।

তাইজুল জানান, ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে কঠোর পরিশ্রম করছে  ব্যাটাররা, ‘আমি আগেও বলেছি দল হিসেবে খেলাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা দু’টি বা তিনটি জুটি করতে পারি যদি দু’জন বা তিনজন ব্যাটার হাফ-সেঞ্চুরি বা সেঞ্চুরি করতে পারে, তাহলে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে এবং নিজেদের ব্যাটিং সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর তারা। আশা করি এই ম্যাচে আমরা ভালো করতে পারবো।’

দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দলে দু’টি পরিবর্তন হয়েছে। পেসার তাসকিন আহমেদ ও জাকের আলি অনিকের পরিবর্তে দলে জায়গা পেয়েছেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। প্রথম টেস্টের একাদশে ছিলেন না তাসকিন। দ্বিতীয় টেস্টের আগে ইনজুরিতে পড়ায় জাকেরের জায়গায় নেওয়া হয়েছে অঙ্কনকে।

প্রথম টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে চোখ দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৪ সালে সর্বশেষ শ্রীলংকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিলো প্রোটিয়ারা। দীর্ঘদিন ধরে উপমহাদেশের মাটিতে সিরিজ জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচাতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দক্ষিণ আফ্রিকার ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আইডেন মার্করাম বলেন, ‘ভাল দলগুলো ধারাবাহিকভাবে জয়ের উপায় খুঁজে বের করে এবং এই টেস্টে এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই আশা করি আমরা আবারও ভালো পারফরমেন্স করতে পারবো। আমরা সবসময়ই প্রতিপক্ষকে সমীহ করে থাকি। বিশেষভাবে বাংলাদেশের কন্ডিশনকে। অবশ্যই এটি একটি কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে। আমরা প্রস্তুত আছি এবং ড্রেসিংরুমে নিজেদের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে চাই।’

বাংলাদেশ দল: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস (উইকেটরক্ষক), মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও হাসান মুরাদ।

দক্ষিণ আফ্রিকা দল: আইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটস্কি, টনি ডি জর্জি, ডেওয়াল্ড ব্রেভিস, লুঙ্গি এনগিডি, কেশভ মহারাজ, উইয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুসামি, ড্যান পিটারসন, ড্যান পিয়েট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন ও কাইল ভেরেইনি।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

five + 1 =