বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ স্বাগত জানিয়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে চলছে ৩ দিনব্যাপী বাংলা উৎসব। একই সঙ্গে চলছে নেতাজী-বঙ্গবন্ধু জনচেতনা যাত্রার সমাপনী আয়োজন। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের বিপিনচন্দ্র পাল ট্রাস্ট মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। বাংলা উৎসবের যৌথ আয়োজক বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ এবং বিহু ক্রিয়েশন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে নাচ পরিবেশন করেন ঢাকার বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী শর্মিলা ব্যানার্জী ও তার নৃত্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নৃত্যনন্দনের শিল্পীরা। গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী লিলি ইসলাম। ভারতের রবি গীতিকা পরিবেশন করে গীতিনাট্য ‘বসন্ত’। সবশেষে মঞ্চস্থ হয় নাট্যজন নাদের চৌধুরী নির্দেশিত ঢাকা পদাতিক এর নাটক ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’।
উৎসবের উদ্বোধনী দিনের স্লোগান ছিল- তোমার খোলা হাওয়ায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, প্রধান অতিথি বিশিষ্ট সমর বিশেষজ্ঞ ড. মেজর জেনারেল পি কে চক্রবর্তী, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার সাবেক সভাপতি গৌতম লাহিড়ীসহ দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পি কে চক্রবর্তী বলেন, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে দু দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধন ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। পয়লা বৈশাখে দিল্লিতে এবারের বাংলা উৎসব দু দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা ড. আতিউর রহমান বলেন, পয়লা বৈশাখকে ঘিরে এ ধরনের আয়োজন দু দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। স্বাধীনতার পর ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশটির আজকের যে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে তা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।
প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার সাবেক সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেন, বাংলা উৎসব হলো উভয় দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। দুই বঙ্গের খ্যাতিমান শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের পরিবেশনার মধ্যদিয়ে দু দেশের অখণ্ড সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নানা দিক এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উঠে আসছে।
আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সভাপতি তাপস হোড়ের সভপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসবের সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরুল ইসলাম, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, নেতাজী-বঙ্গবন্ধু জনচেতনা যাত্রার আহ্বায়ক শ্রী বোধিসত্ত্ব তরফদার, দিল্লি মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলর কুমারী আংশু ঠাকুর, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াসহ দুই বাংলার বিশিষ্টজনেরা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন আবৃত্তিশিল্পী রুপশ্রী চক্রবর্তী।