দুর্দান্ত টিম ইন্ডিয়ার অগ্রাভিযান অব্যাহত

সালেক সুফী

বিশ্বকাপ ২০২৩ জয়ের প্রধানতম ফেভারিট আইসিসি র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ দল স্বাগতিক ভারতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। প্রথম ম্যাচে ৫ বারের বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর কাল নয়াদিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে হেসে খেলে ৮  উইকেটে হারিয়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম দুর্বল দল আফগানিস্তানকে।

টস জয় করে নিজেদের সামৰ্থ অনুযায়ী খেলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭২/৮ করেছিল আফগান বাহিনী। ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার মারকুটে শত রান (মাত্র ৮৪ বলে ১৬ চার এবং ৫ ছয়ে সাজানো ১৩১) আর বিরাট কোহলির ৫৬ বলে করা অপরাজিত ৫৫ রানের ভেলায় চড়ে ৯০ বল হাতে রেখেই সহজ জয় তুলে নেয়। দুই ম্যাচে দুই বড় জয়ে ভারত পয়েন্টস তালিকায় শীর্ষ দুইয়ে পৌঁছে গেছে।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান, পেস এবং স্পিন বোলার সমন্বয়ে ভারসাম্য বোলিং আক্রমণ সমন্বিত ভারত দলকে পুরোপুরি প্রস্তুত মনে হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন ভেন্যু অনুযায়ী যেখানে সেখানে সেই ধরনের বোলার থাকায় ভারত দলকে হারাতে পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড বা দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নিজেদের সেরাটা প্রয়োগ করতে হবে।

কাল টস জিতে দিল্লীর ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আফগানিস্তান। গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান ভারত বোলিং এক্স-ফ্যাক্টর জাসপ্রিত বুমরাহকে খেলতে সংগ্রাম করতে হলেও সাচ্ছন্দে খেলছিল ওপর প্রান্ত থেকে বোলিং করা মোহাম্মদ সেরাজকে । বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি দেখে মনে হচ্ছিলো আফগানিস্তান বড় স্কোর করবে। কিন্তু বুমরার একটি অপ্রতিরোদ্ধ ইনসুইং থেকে রেহাই পেলো না জাদরান।

২২ রানে জাদরানের বিদায়ের পর গুরবাজ এবং রাহমাত শাহ দ্রুত ফিরে শার্দুল ঠাকুর আর হার্দিক পান্ডিয়ার বলে। এরপর অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শাহিদী (৮০) এবং জমাতুল্লাহ ওমারজাই (৬২) চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২১ রান করে বড় স্কোর গোড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলো। কিন্তু ভারতের মানসম্পন্ন বাহারী বোলিং সম্ভার সেই সুযোগ ওদের দেয়নি। বুমরাহ (৪/৩৯) এবং হার্দিক পান্ডিয়া (২/৪৩) পাশাপাশি শার্দুল ঠাকুর, কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা সবাই আঁটসাঁট বোলিং করে আফগানিস্তান নির্ধারিত ওভার শেষে ২৭২/৮ পর্যন্ত পৌঁছায়।

ভারতের বিশ্ব সেরা ব্যাটিং মোকাবিলায় সহজ উইকেটে এই স্কোর নিতান্তই মামুলি ছিল। সূচনায় সংহারী মূর্তিতে আবির্ভুত হয় রোহিত শর্মা। ওর মাত্র ৮৪ বলে করা ১৩১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটি ১৬টি দর্শনীয় চার এবং ৫টি ছয়ে সাজানো। ঈশান কিষানকে সঙ্গী করে প্রথম উইকেট জুটিতে ১৮.৪ ওভারেই যুক্ত হয়েছিল ১৫৬ রান। কিষান করেছে ৪৭ বলে ৪৭।

এরপর অবশিষ্ট কাজ টুকু শেষ করতে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি হয়ে থাকা ভিরাট  কোহলির (৫৫*) আদৌ বেগ পেতে হয়নি। ৯০ বল হাতে রেখে ২৭৩/২ পৌঁছে ৮ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়ে ভারত শক্তিমত্তার হুঙ্কার দিলো। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করতে প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে অনেক হিসাব কষে এগুতে হবে।

আজ খেলা অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৪ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বসবে বহুল কাঙ্ক্ষিত পাকিস্তান-ভারত ধুম ধাড়াক্কা দ্বৈরথ।

সালেক সুফী: আন্তর্জাতিক ক্রীড়া বিশ্লেষক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

eight − five =