ধবল ধোলাই আসন্ন, কি করবে  বাংলাদেশ?

সালেক সুফী: বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড দলের ব্যাবধান কতদূর নিজেদের দুর্গম দুর্গ শেরেবাংলায় দুটি ম্যাচ হেরে প্রমাণ মিলেছে। প্রথম খেলায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন্সদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের মুখে মামুলি সংগ্রহ নিয়েও ভালো বোলিং করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল বাংলাদেশ।  কঠিন অবস্থায় তুখোড় ব্যাটিং করে ডেভিড মালান অপরাজিত শতরান করে দেখাল কিভাবে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলতে হয়। বাঁচা মরার দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং উইকেটে টস জয় করেও ফিল্ডিং নিয়ে ভুলের মাসুল দিলো বাংলাদেশ। জেসন রয়, জেমস বাটলার, মঈন আলী, স্যাম কুরান নির্দয় ভাবে পেটালো বাংলাদেশ বোলারদের।

শেরেবাংলায় ৩২৬/৭ তাড়া করে ইংল্যান্ড দলের তুখোড় বোলিং মোকাবিলা করে ম্যাচ জয়ের সামর্থ  বর্তমান বাংলাদেশের ছিল না। স্যাম কুরান প্রথম দুই ওভারে লিটন, শান্ত , মুশফিক পত্রপাঠ বিদায় করে সেই স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছিলো। তামিম, সাকিব, রিয়াদ, তামিমের প্রয়াস শুধু পরাজয়ের ব্যাবধান কমিয়েছে। ১৩২ রানের বিশাল ব্যাবধানে হেরে ৭ বছর পর দেশের মাটিতে প্রথম ওডিআই সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। জানিনা কি ভেবে ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেট অধিনায়ক প্রিন্স অফ কলকাতা ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ ওডিআই সিরিজে বাংলাদেশকে এগিয়ে রেখেছিলো। বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়করাই বা কি ভেবে ২-১ সিরিজ জয়ের আগাম বাণী দিয়েছিলেন। ২-০ ব্যাবধানে সিরিজ হেরে বাংলাদেশের এখন ধবল ধোলাইয়ের অপেক্ষা।

৬০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখা চোখ বলছে এই ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ওডিআই বা টি২০ একটি ম্যাচ জেতার সামর্থ নেই।  খেলাটি কোন উইকেটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কিছু যায় আসে না। দুটি ম্যাচে কোনো বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান তুখোড় ইংলিশ বোলিংয়ের মুখে সাচ্ছন্দে খেলতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে শান্ত আর দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিবের দুটি অর্ধশত ছাড়া উল্লেখ করার মতো কিছু নাই।

চট্টগ্রাম উইকেটে হয়তো রান হবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ড দলের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং মোকাবিলায় দ্বিতীয় ম্যাচে হা পিত্তেশ করেছে। হারাবার কিছু নেই। শেষ খেলায় বাংলাদেশ মুস্তাফিজের জায়গায় ইবাদাতকে পরীক্ষা করতে পারে। তামিম দুই ইনিংসে উইকেটে দীর্ঘ সময় থাকলেও ছন্দ হারা ছিল। লিটন, মুশফিক দুই ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছে। আমি মনে করি লিটনের হাতে কিপিং গ্লাভস তুলে দিয়ে মুশফিকের স্থানে তৌহিদ হৃদয়কে সুযোগ দেওয়া যায়।

ইংল্যান্ড দলের ডেভিড মালান, জেসন রয় দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছে। বাটলার, মঈন, কুরান আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছে। ওদের সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইন অনেক গভীর আর মেধাবী।  বাংলাদেশের বোলিং প্রথম খেলায় কিছুটা কার্যকরী হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে এলোমেলো হয়ে যায়। মনস্তাত্ত্বিক ভাবে বাংলাদেশের বোলারদের চাঙা করার মত পরিবেশ পরিস্থিতি নেই। ইংল্যান্ড দল কট্টর পেশাদার।  তৃতীয় ম্যাচটিতেও ওরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বোলিং সম্পদ রোটেট করলেও বাংলাদেশের স্বস্তির কোনো কারণ নেই।

দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম দুটো ভুল করেছে। বাঁচা মরার খেলার টস জয়ী হয়ে ব্যাটিং করা উচিত ছিল। তাসকিন তুখোড় ফর্মে থাকায় দুই স্পিনার্স দিয়ে আক্রমণ শুরু করা উচিত হয়নি। মনে হয় ব্যাটিং নেওয়াটা টিম মানাজেমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল।

আমি আশাবাদী নই আর এই মুহূর্তের বাংলাদেশ দল নিয়ে। দুই ম্যাচে দুই দলের ব্যাবধান  হয়ে প্রতিভাত হয়েছে যে জয়ের আশা নিতান্তই দুরাশা।  বাংলাদেশ যুদ্ধ করে হেরে গেলে স্বস্তি পাবো। ভিন্ন কিছু অর্জন করতে জ্বলে উঠতে হবে টপ অর্ডারের কাউকে, দুটি ভালো পার্টনারশিপ প্রয়োজন ব্যাটিং করার সময়।  প্রতি আক্রমণের মুখে বেসামাল হলে চলবে না বোলারদের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

1 × 4 =