বলিউডের গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম কারিনা কাপুর। সিনেমাপ্রেমীদের অন্তরে শক্তিশালী অবস্থান তার। ব্যক্তিত্বের দিক থেকেও বেশ প্রখর এ বলি তারকা। কিছুদিন আগে নিজের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে বলা কথাগুলোই ছিল তার প্রমাণ। এবার নিজের লেখা বইয়ের ক্ষেত্রেও ব্যক্তিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন কারিনা। সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকের মধ্যেই লেখক সত্তার বাস। অভিনয়শিল্পীদের অনেককেই আত্মজীবনীসহ বিভিন্ন বই লিখতে দেখা যায়। কারিনা কাপুরও সেই পথে হেঁটেছেন। নারীর কাছে প্রথমবার মা হওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা আর কিছু নেই বললেই চলে। কারিনা সে অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করেছেন বইয়ে। প্রথমবারের মা হওয়া নিয়ে লিখেছেন প্রেগনেন্সি দ্য বাইবেল।
তবে ২০২১ সালে প্রকাশিত বইটি নিয়ে চলছে বেশ তর্ক বিতর্ক। এর একমাত্র কারণ বাইবেল শব্দটির ব্যবহার। এতে অনেকেই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনেছে। জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। বইটি নিয়ে কারিনার বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশে এক আদালতে মামলা করেন ক্রিস্টোফার অ্যান্থনি নামের এক আইনজীবী। সেখানে তিনি বইয়ের নাম বদলানোর আবেদন করেন। একইসঙ্গে বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আরজি জানান আদালতের কাছে। তবে কারিনা কাপুর আদালতের জানিয়েছেন বইটির নাম বদলাবেন না তিনি। আইনজীবীর অভিযোগ বাইবেল শব্দটি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের খুব প্রিয় এবং পবিত্র। শব্দটি তিনি নিজের অন্তঃসত্ত্বাকালীন গল্পের সঙ্গে মিলিয়ে তাদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের অসম্মান করেছেন বলে অভিযোগ আনেন ঐ আইনজীবী। তবে নিম্ন আদালত ওই আইনজীবীর অভিযোগকে পাত্তা দেননি। উল্টো তার কাছে চেয়ে বসেন এর ব্যাখ্যা। কিন্তু কীভাবে কারিনা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের অসম্মান করেছেন সেই ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হন আইনজীবী। ফলে আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেন। এতে দমে যাননি ক্রিস্টোফার নামের ওই আইনজীবী। তিনি উচিত বিচার পেতে এডিশনাল সেশন কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানেও সুবিধা করতে পারেননি। ফলে অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু ক্রিস্টোফার দমবার পাত্র নন। নিম্ন আদালত, সেশন কোর্ট মুখ ফিরিয়ে নিলে তিনি দলবলসহ যান মহারাষ্ট্রের একটি থানায়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ করেন। এরপরই কারিনা নিজের বক্তব্য জানিয়ে দেন আদালতকে।
অভিনেত্রীর পক্ষে দাঁড়িয়েছেন দুজন আইনজীবী। তারা হচ্ছেন দিব্যা কৃষ্ণা ও নিখিল ভাট। তাদের মাধ্যমে কারিনা আইনি নোটিশের জবাবে বলেছেন, বইয়ের নাম তিনি পাল্টাতে চান না। বইয়ের নামে বাইবেল শব্দটির ব্যবহার কারও অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয়।
উদীচীর একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন
গত ৫ আগস্টের পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে এসেছে পরিবর্তন। তবে সব পরিবর্তন সহজভাবে মেনে নেয়নি দেশের মানুষ। কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করায় তা সচেতন নাগরিকদের অস্তিত্বে আঘাত লেগেছে। এরকম একটি বিষয় জাতীয় সংগীত। জাতীয় সংগীত নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। কেউ ব্যক্তিগতভাবে এবং সাংগঠনিকভাবে প্রতিবাদ শুরু করেন। এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে উদীচী। প্রতিবাদ স্বরূপ সারা দেশ জুড়ে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের কর্মসূচি দিয়েছিল তারা। ৬ সেপ্টেম্বর সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশের সড়কে একসঙ্গে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচিতে অংশ নেয় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, জাতীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সংগঠন। উদীচীর এই ডাক ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে। ফলে ব্যক্তিগতভাবে অনেকে যোগ দিয়েছিলেন এই আয়োজনে। এই বিতর্কের শুরুটা হয়েছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লা হিল আমান আযমীর মাধ্যমে। এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দেশের জাতীয় সংগীতকে স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি বলে দাবি করেন তিনি। একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে। ৭২ এর সংবিধান পরিবর্তনেরও দাবি তোলেন।
এরপর থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ। তারই অংশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে উদীচী। ডাক দেয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচির। দেশের সব জেলা ও বিদেশে উদীচীর শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ একসঙ্গে এই জাতীয় সংগীত কর্মসূচি পালন করেছে বলেও জানায় সংগঠনটি। ঢাকায় কেন্দ্রীয় আয়োজনে সূচনা বক্তব্য দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়বদ্ধ মানুষের প্রতি। আমাদের অর্জন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখনই কোনো আঘাত আসবে, আমরা তার প্রতিবাদ করব। আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা কারো দানে পাওয়া নয়। লাখো শহীদের রক্তে পাওয়া এ আমাদের অর্জন। এ অর্জনকে কোনোভাবেই কলঙ্কিত করা যাবে না। যখনই কেউ মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতে আঘাত করবে। আমরা তার প্রতিবাদ করবই।’
অন্ষ্ঠুান সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। পরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সবাই। এ সময় সাধারণ মানুষও শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করা হয়। শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে একে একে গেয়ে শোনান মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা জোগানো দেশাত্মবোধক গান ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেব রে’ গানগুলো।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের যাত্রা শুরু
বিলুপ্ত সেন্সর বোর্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা। কেননা এটি গলার কাঁটা হয়ে উঠেছিল। অন্তর্বরর্তীকালীন সরকার গঠনের পর দেশে লাগে সংস্কারের হাওয়া। সেসময় জোরদার হয় সেন্সর বোর্ড সংস্কারের। সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানান, সেন্সর বোর্ড পুনর্গঠিত হবে।
১৬ সেপ্টেম্বর সেন্সর বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে দায়িত্ব পান জাকির হোসেন রাজু, আশফাক নিপুন, কাজী নওশাবা আহমেদ, পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াত, তাসমিয়া আফরিন মৌ (পরিচালক), লেখক নাজিম উদ্দিন, রকিবুল আনোয়ার রাসেল (পরিচালক প্রযোজক) প্রমুখ। তবে সেন্সর বোর্ড বিলুপ্তির দাবিতে সবাই একমত হলে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ গঠন করে সরকার। ২২ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন, ২০২৩’-এর ৩ ধারার উপধারা (১) অনুযায়ী ১৫ সদস্যের সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠিত হয়েছে।
পদাধিকারবলে বোর্ডে সদস্য হিসেবে আছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ। এর বাইরে রয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক জাকির হোসেন রাজু, নির্মাতা রফিকুল আনোয়ার রাসেল, চলচ্চিত্র প্রযোজক জাহিদ হোসেন, চলচ্চিত্র সম্পাদক ইকবাল এহসানুল কবির, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ, নির্মাতা খিজির হায়াত খান ও নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ।
এছাড়া সদস্যের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র), জননিরাপত্তা বিভাগের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
জাল’র ২০, সঙ্গে অর্থহীন
‘পারবে আমায় এনে দিতে এক টুকরো চাঁদের মাটি কিংবা হিমালয়ের চূড়ায় একটুখানি বড়…। অদ্ভুত সেই ছেলেটির পকেটে হারমনিকা…।’ গানগুলো শুনলেই বোঝা যায় গভীর অর্থপূর্ণ। কিন্তু যারা গেয়েছে তাদের নাম অর্থহীন। হ্যাঁ বলছিলাম দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড অর্থহীনের কথা। এর গায়ক বেজ বাবা খ্যাত সুমনকে একজন যোদ্ধা বলা চলে। অফুরন্ত জীবনী শক্তি তার। মরণব্যাধি ক্যান্সারও গান থেকে দূরে রাখতে পারেনি তাকে। দীর্ঘদিন কর্কট রোগের সঙ্গে লড়াই করেও অর্থহীনের হাল শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন। অসংখ্যবার রোগ মুক্তির জন্য ছুরি কাচির নিচে নিজেকে সপে দিয়েছেন তিনি। গত মাসে চোখ ও দুই পায়ের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে এই গায়কের। আর দেরি করেননি। বিছানায় শুয়েই পোস্ট দেন অদ্ভুতরা রেডি হও। আসছে অর্থহীন। বেজ বাবার এমন পোস্ট দেখে মুহূর্তেই উন্মাদনায় মেতে উঠে অনুরাগীরা। আবারও হারমনিকার শুধুমাত্র প্রস্তুত ছিল তারা। এর চেয়ে বড় খবর ছিল ওইদিন অর্থহীন একা নয়। সঙ্গে পারফর্ম করবে মহাদেশের প্রখ্যাত ব্যান্ড জাল। ২০ বছর আগে নিজেদের প্রথম অ্যালবাম ‘আদাত’ বাজারে এসেছিল তাদের। ওই অ্যালবামের ২০ বছর পূর্তি পালন করতেই ঢাকা আসে তারা। ‘লিজেন্ডস অব দ্য ডেকেড’ শিরোনামের এই কনসার্টে জাল ব্যান্ডের সঙ্গে পারফর্ম করে অর্থহীন। এবার দিয়ে ১৪ বছর পর ঢাকার এলো জাল ব্যান্ড। ঘোষণাটি তারা নিজেই দিয়েছিল। ফেসবুকে একটি কনসার্টের ছবি শেয়ার করে ব্যান্ডটির সদস্য গহর লেখেন, ‘হ্যালো বাংলাদেশ। শিগগির দেখা হচ্ছে।’ বিস্তারিত জানার জন্য ওয়েবসাইটের একটি লিংকও শেয়ার করেন তিনি।
সেই লিংক থেকে জানা যায়, ২৭ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের ঢাকা অ্যারেনায় ‘লিজেন্ডস অব দ্য ডিকেড’ শিরোনামের কনসার্টে ব্যান্ড জালের গাওয়ার কথা। কনসার্টটি আয়োজন করে অ্যাসেন বাজ, গেট সেট রক ও জিরকোনিয়াম। কনসার্টের দিন বিকেল ৫টায় খোলা হবে গেট। আয়োজন শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায়।
লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: ফ্রেমবন্দি