বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেল ভারত/ মেক্সিকোর ইতিহাস প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট

মাহবুব আলম

৪ জুন ২০২৪ এ বিশ্বের দুই প্রান্তে দুই দেশে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর একটি হলো বাংলাদেশের প্রতিবেশী দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ- ভারত। অপরটি হলো উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকো। নির্বাচনের ফলে দুই দেশেই ক্ষমতাসীনরা জয়ী হয়েছেন। তবে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। ৫৪৫ আসনের লোকসভায় (পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, যে কক্ষের ভোটে সরকার নির্ধারিত হয়) বিজেপি ২৪০টি আসন পেয়েছে। সরকার গঠনের ম্যাজিক ফিগার ২৭২ থেকে যা অনেক কম। তবে শেষপর্যন্ত জোটসঙ্গীদের সহযোগিতায় বিশেষ করে অন্ধ্রের নেতা চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি (তেলেগু দেশম পার্টি) ও বিহারের পল্টিবাজখ্যাত নেতা নিতীশ কুমারের জেডিইউ-এর সমর্থনে বিজেপি আবারো ভারতের কেন্দ্রে সরকার গঠনে সমর্থ হয়েছে। এবং প্রধানমন্ত্রীর হিসেবে নরেন্দ্র দামোদর মোদি আবারো শপথ গ্রহণ করেছেন। এই শপথের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরু রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন। ভারতের ৭৭ বছরের ইতিহাসে একমাত্র জাওহর লাল নেহেরুই পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন। দীর্ঘদিন বাদে এই সৌভাগ্যের অধিকারী হলেন মোদী। তবে এবার তিনি মাত্র ২৬ শতাংশ (বিজেপি) ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেন। যাকে বলা হচ্ছে ‘পরাজয় তুল্য অসম্মানের জয়’।

অন্যদিকে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ওই দেশের ক্ষমতাসীন দল মোরেনা পার্টির নারী প্রার্থী জলবায়ু বিজ্ঞানী মেক্সিকো সিটির সদ্য সাবেক মেয়র ক্লদিয়া শিনবাউম। মেক্সিকোর ২০০ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হলেন। এই নির্বাচনে একাধিক প্রার্থীর মধ্যে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোচিন গ্যালভেজ পেয়েছেন ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। তিনিও একজন নারী। তিনি ছিলেন বিরোধী ডানপন্থীদের জোট এড ফ্রস্ট ফর মেক্সিকোর প্রার্থী। অন্যদিকে, শিনবাউম ছিলেন ক্ষমতাসীন বামপন্থী দলের প্রার্থী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে ৪ জুন একই দিনে ওই দেশের ৫০০ সদস্যের কংগ্রেস (পার্লামেন্ট), ৮ রাজ্যের গভর্নর ও মেক্সিকো সিটির মেয়র নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়েছে। এই ফলাফলে দেখা যাচ্ছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের নেতৃত্বাধীন বামপন্থী দল মোরেনা পার্টি কংগ্রেসেও দুই তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়েছে। জয়ী হয়েছে মেক্সিকো সিটির মেয়র নির্বাচনেও। উল্লেখ্য, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী বিজ্ঞানী শিনবাউম মেক্সিকো সিটির মেয়র ছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হন।

শিনবাউম প্রেসিডেন্ট আন্দেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরকে গুরু মানেন। কারণ ওব্রাদর অত্যন্ত বিচক্ষণ, কৌশলী ও জনপ্রিয় নেতা। তাইতো তিনি নির্বাচিত হয়েই বলেছেন, তিনি ওব্রাদরের নীতি অনুসরণ করবেন। মেক্সিকোর সন্ত্রাস দমনে ওব্রাদর যে বিশেষ বাহিনী গঠন করেছিলেন সেই বাহিনীর জনবল ও শক্তি আরো বৃদ্ধি করবেন। সেইসাথে ‘ভায়োলেন্স’ মোকাবিলায় আরো কী করা যায় সে নিয়েও ভাববেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, এটাই তার সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ওব্রাদর সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিকে তিনি এগিয়ে নেবেন।

উল্লেখ্য, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর সরকারকে বলা হয় জনতোষণবাদী সরকার। এবং এটাই তার জনপ্রিয়তার চাবিকাঠি। এখানে আরও উল্লেখ্য, মেক্সিকোর সংবিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি একবারের বেশি দুবার প্রেসিডেন্ট হতে পারবে না। ৬ বছর মেয়াদে কোনো প্রেসিডেন্ট একবারের জন্যই নির্বাচিত হতে পারবেন।

বিশ্বের যেকোনো দেশের যেকোনো নির্বাচনে কিছু সুনির্দিষ্ট ইস্যু থাকে। সেই ইস্যুর উপর ভোট হয়। কখনো এই ইস্যু হয় উন্নয়ন, দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, কখনো স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, কখনো সংবিধান রক্ষা, আবার কখনো গরীবি হটাও অথবা ট্যাক্স কমাও। আবার কখনো স্রেফ বৈদেশিক নীতি নিয়ে কোনো কোনো দল ভোট পার করে। এবার ভারতের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের এইসব ইস্যু ছিল না। ক্ষমতাসীন বিজেপির মূল নির্বাচনী ইস্যু ছিল হিন্দুত্ব, ধর্মীয় উন্মাদনা, সাম্প্রদায়িক বিভাজন, বিশেষ করে মুসলিম বিদ্বেষ ছিল সর্বোচ্চ। তাইতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং একাধিক নির্বাচনী সভায় বলেন, কংগ্রেস নির্বাচিত হলে, ক্ষমতায় গেলে কংগ্রেস সরকার হিন্দুদের সম্পদ কেড়ে নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিলি বণ্টন করে দেবে। শুধু তাই নয়, তিনি আরো বলেন, কংগ্রেস হিন্দু মহিলাদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে (মঙ্গলসূত্র হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে বিবাহিত হিন্দু নারীদের গলায় বিশেষ সুতলি দিয়ে বাধা হার বিশেষ। এই হারের লকেটে সামর্থ্যবান হিন্দুরা কিঞ্চিত হলেও স্বর্ণ ব্যবহার করে। না পারলে স্বর্ণের পানিতে ধৌত করা হয়। বাঙালি বিবাহিত মেয়েদের চিহ্ন যেমন শাখা সিঁদুর, ঠিক তেমনি উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণ ভারতের বিবাহিত হিন্দু নারীদের মঙ্গলসূত্র)। কী নিকৃষ্ট সম্প্রদায়িকতা।

অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের নির্বাচনী ইস্যু ছিল গণতন্ত্র, সংবিধান রক্ষা। এক কথায় দেশ রক্ষা। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র রক্ষা। সেই সাথে বেকারত্ব, দুর্নীতি ও লুটপাট। এবং ইলেক্টোরাল বন্ডসহ সরকারের নানান কেলেঙ্কারি। কিন্তু মেক্সিকোর নির্বাচনের ইস্যু ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মেক্সিকোর নির্বাচনের ক্ষমতাশীল বামপন্থী মোরেনা পার্টির ইস্যু ছিল দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারদের কর্মসংস্থান ও ড্রাগ মাফিয়াদের ক্রিমিনাল এক্টিভিটিস রুখে দেওয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে মর্যাদাপূর্ণ বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরো উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। অন্যদিকে, বিরোধীদের ইস্যু ছিল ক্ষমতাসীনদের জনতোষণনীতি মেক্সিকোর উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। মাদক সন্ত্রাস ও ওদের সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্য নীতি নির্ধারণের ব্যর্থতা। এখানে ধর্ম, সম্প্রদায়িক কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন নেই নারী পুরুষের। যদি থাকত তাহলে নারী প্রার্থী ৬০ শতাংশ ভোট পেতেন না। দ্বিতীয় স্থানেও নারীপ্রার্থীকে দেখা যেত না। দেখা যেত প্রেসিডেন্ট পদে পুরুষ প্রার্থীদের কোনো একজনকে।

ধর্মের বিষয়েও একটু বলা দরকার। ইতিপূর্বে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের অধিকাংশ ছিল ক্যাথলিক খ্রিস্টান। অন্যদিকে, এবার নির্বাচনে বিজয়ী নারী হলেন একজন ইহুদি পরিবারের। মেক্সিকোতে ১০ কোটি ভোটের মধ্যে যাদের সংখ্যা হাজারেরও কম।

এবার আসা যাক ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র দামোদর মোদী ও মেক্সিকোর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত শিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনৈতিক দর্শন ও ব্যক্তিজীবনের শুদ্ধাচারের বিষয়ে। মেক্সিকোর ইলেক্ট প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট বলছি এজন্য যে, তিনি নির্বাচিত হলেও এখনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেননি। শপথ নেবেন আগামী অক্টোবর মাসের ১ তারিখে) একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি। জলবায়ু ও জ্বালানি বিজ্ঞানী। তার পিএইচডি জ্বালানি প্রকৌশলে। তিনি দীর্ঘদিন পরিবেশবিজ্ঞান নিয়েও কাজ করেছেন। তিনি বিএস ও এমএস করেছেন মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায়। এরপর তিনি জলবায়ু ও জ্বালানি বিজ্ঞানী হিসেবে বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করেছেন। তবে তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসে রাজনীতিক হননি। তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্র অবস্থায়। ছাত্র অবস্থায় তিনি রীতিমতো নেতা ছিলেন। তারপর তিনি গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সদস্য ও পরে নেতা হয়ে ২৫ বছর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছেন। এই সময়টা হচ্ছে ১৯৮৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত। এরপর এই বছর তিনি বামপন্থী জাতীয় রেজিস্টেশন মুভমেন্ট মোরেনা পার্টিতে যোগ দেন। এবং টালালডান শহরের মেয়র নির্বাচিত হন। পরে ২০১৮ সালের মেক্সিকো সিটির মেয়র নির্বাচিত হন।

৬১ বছর বয়সী এই নেত্রী দুই সন্তানের মা। তাদের পূর্বপুরুষরা লিথুনিয়া থেকে বুলগেরিয়ার বসতি স্থাপন করেন। কিন্তু ১৯৪২ সালে বুলগেরিয়ার নাৎসিবিরোধী অবস্থানের জন্য তার বাবা-মা বুলগেরিয়া থেকে মেক্সিকোতে সেটেল করেন। তার বাবা ও মা দুজনই বিজ্ঞানী। এমনকি তার দাদুও একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। তাইতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের পর তিনি বলেন, তিনি বিজ্ঞানে বিশ্বাস করেন। তিনি আরো বলেন, মেক্সিকোর স্বাধীনতার ২০০ বছরে তিনিই প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। এই বিজয় এই কৃতিত্ব পুরোটাই মেক্সিকোর নারীদের। বিজয়ের পর স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট আন্দেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের নীতি অনুসরণ করে চলবেন। তার জনহিতৈৗষ কার্যক্রমকে আরো এগিয়ে নেবেন। তিনি স্পষ্টই করে বলেছেন লোপেজ ওব্রাদর তার গুরু, তার মেন্টর। নির্বাচিত হবার পর দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রদত্ত প্রথম ভাষণে তিনি বলেছেন, আমার সরকারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ ড্রাগ মাফিয়াদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এজন্য আমি লোপেজ ওব্রাদরের গঠিত বিশেষ বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করবো। সেই সাথে এর উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। একই সঙ্গে মাদক পাচার বন্ধে মার্কিন প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দান করব।

তিনি আরো বলেন, মাদকবিরোধী অপরাধ দমনের পাশাপাশি তিনি দরিদ্র যুবকদের জন্য জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে এমন অবস্থা নেব যাতে মাদক ব্যবসায়ীরা এদের আর্থিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে রিক্রুট করতে না পারে।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ওপরও জোর দেবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ওঃ’ং নবঃঃবৎ ঃড় নঁরষফ নৎরফমববং ৎবাবষধঃরড়হ বিষষং.

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ক্লদিয়া শিনবাউমের যেমন অমিল আছে তেমন বেশ কিছু বিষয়ে মিলও আছে। ক্লদিয়া শিনবাউম ছাত্র অবস্থায় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। একইভাবে নরেন্দ্র মোদীও ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে যুক্ত হন। সেদিক দিয়ে দেখলে দুজনেরই রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ। তবে মোদী যুক্ত হন আরএসএস-এর সঙ্গে। অর্থাৎ ধর্মীয় ও উগ্র সম্প্রদায়িক রাজনীতি পাঠ নেন তার তরুণ বয়সে। অন্যদিকে, শিনবাউমে পাঠ নেন প্রগতিশীল বামপন্থার বিপ্লবী রাজনীতিতে। রাজনীতির পাঠ নিয়ে মোদী তার বিবাহিত স্ত্রীকে মাত্র তিন মাসের মধ্যে ত্যাগ করে তথাকথিত সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। অন্যদিকে, শিনবাউম সংসার ধর্মকে আঁকড়ে ধরেই রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেইসাথে একজন বিপ্লবী হতে হলে তাকে সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে হয় এই মন্ত্রে দীক্ষিত ক্লদিয়া শিনবাউম বিএ, এমএ করার পরও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাও বিজ্ঞানে।

অন্যদিকে, নরেন্দ্র মোদী কি নিয়ে পড়েছেন তা নিয়ে রহস্য রয়েছে। তিনি আজ পর্যন্ত তার ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি বা দেখাননি। তবে এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে তার দলের পক্ষ থেকে তার ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদর্শনে। সেই সার্টিফিকেটে দেখা যাচ্ছে এটা হাতের লেখা নয়। কম্পিউটারে টাইপ করা। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে মোদী যখন ডিগ্রি পাস করেন তখন কম্পিউটারের টাইপ করা সার্টিফিকেট এলো কিভাবে? এছাড়া আরো একটি বিষয় আছে তা হলো মোদী নিজেকে চাওয়ালা দাবি করেন। কিন্তু কবে কোথায় কোন রেল স্টেশনে তিনি বা তার বাবা চা বিক্রি করেছেন তার খোঁজ মেলেনি এখনও। কার্যত পুরোটাই রহস্যজনক। এরপর তিনি নিজেকে চৌকিদার দাবি করেন। কিন্তু তার শাসনের সময় রাষ্ট্রীয় কোষাগারসহ জনগণের লক্ষ কোটি টাকা লুট হলেও চুরি হলেও চৌকিদার নিশ্চুপ। বিষয়টা এমন তিনি তো লুটের সময়, চুরির সময় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তিনি এমনই চৌকিদার পাহারা দেওয়ার সময় তিনি অঘোরে ঘুমিয়ে যান।

দুজনের মধ্যে আরেকটি বড় পার্থক্য একজন বিজ্ঞান বিশ্বাসী আরেকজন অন্ধ ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুসারী, উগ্র হিন্দুত্ববাদী। তাইতো তিনি তার ১০ বছরের বিগত শাসনে নতুন নতুন শিক্ষা, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে রাম মন্দিরসহ অসংখ্য মন্দির মূর্তি ও প্রসাদ নির্মাণ করেছেন। ঠিক যেমনটা করতেন আগেকার দিনের রাজা বাদশারা তাদের খেয়াল খুশি মতো।

নরেন্দ্র মোদী কতটা ধর্মান্ধ ও গোঁড়া যে শেষপর্যন্ত তিনি তার জন্মদাত্রী মাকে পরিত্যাগ করেছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক নির্বাচনী সমাবেশে বলেছেন, তিনি জৈবিকভাবে সৃষ্ট মানুষ নন। তিনি অবতার। অবশ্য এর আগে স্ত্রীকে ত্যাগ করে দীর্ঘদিন তিনি নিজেকে ব্যাচেলার, সাধু-সন্ন্যাসী বলে দাবি করেছেন। সাধু সন্ন্যাসী হলেও তিনি খুনোখুনি, দাঙ্গা হাঙ্গামায় সিদ্ধহস্ত। রীতিমতো চ্যাম্পিয়ন বললেও বাড়তি বলা হবে না। গুজরাট দাঙ্গা তার প্রকৃতই উদাহরণ। এছাড়া করোনাকালে তার নিজ রাজ্য গুজরাটসহ বিজেপি শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা আক্রান্ত মুসলিম রোগীদের হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার মতো জঘণ্য অপরাধমূলক কার্যকলাপের জন্য তিনিই দায়ী বলে অভিযোগ আছে। সর্বশেষ তার ৩১ পূর্ণ মন্ত্রিসহ ৭২ সদস্যের মন্ত্রিসভায় একজনও মুসলিম নেই। ভারতের ইতিহাসে এটাই প্রথম মুসলিম বর্জিত মন্ত্রিসভা। অথচ ভারতের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলিম। এই সংখ্যা ৩০ কোটিরও বেশি।

নির্বাচনের বিজয় (অবশ্য হারতে হারতে) ও তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর তিনি বলেছেন, তার জোটের আদর্শ সর্বপন্থা সমভাব। যার অর্থ সব ধর্মকে এক ভাবা। ভেদাভেদ না করা। সবাইকে নিয়ে চলা। এ বিষয়ে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক গণশক্তিতে বলা হয়েছে ‘ভূতের মুখে রাম নাম’। একেই বলে ‘ঠেলায় পড়লে বেড়ালও গাছে ওঠে।’

এখানে আরো উল্লেখ্য ৯ জুন রোববার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের শপথ গ্রহণের দিন সভাস্থলে জয় শ্রীরাম, হর হর মহাদেব ও মোদী মোদী সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। অথচ ভারতের জাতীয় সেøাগান জয় হিন্দ। এদিন জাতীয়তা, জাতীয় সেøাগান চাপা পড়ে মোদী বন্দনা ও ধর্মীয় সেøাগান জয় শ্রীরামের নিচে। ভারতের ইতিহাসে এ এক নজিরবিহীন ঘটনা।

তবে নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। তার স্বপ্ন ছিল ৪০০’রও বেশি আসনে জিতে রাজীব গান্ধীর ৪১৮ এর রেকর্ড ভঙ করা এবং নবনির্মিত প্রাসাদ ‘কর্তব্য পথে’ শপথ গ্রহণ। এই স্থানে শপথ গ্রহণের জন্য তিনি যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু পরাজয় তুল্য অসম্মানের জয়ের জন্য তিনি শেষপর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাতিল করে রাষ্ট্রপতি ভবন চত্বরেই শপথগ্রহণ করেন। এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ৮ হাজার আমন্ত্রিত অতিথির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাতটি দেশের সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ইতিপূর্বে মেক্সিকোর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের চ্যালেঞ্জের কথা বলেছি। এবার দেখা যাক পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরুর রেকর্ড ছোঁয়া তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনের চ্যালেঞ্জগুলো কি? প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো – সরকারের মেয়াদ পূর্ণ করা। কারণ এই সরকার গড়ে উঠেছে মূলত নিতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডুর দলের সমর্থনে। এই দুই দলের দুই ব্যক্তির একজন ভারতের রাজনীতিতে পল্টি কুমার নামে খ্যাত। অন্যদিকে চন্দ্রবাবু নাইডু বরাবরই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির অনুসরণ করেন। তাইতো তার রাজ্যে পাঁচ শতাংশ মুসলিম সংরক্ষণ করেছেন ১০ বছর আগে।

শিক্ষা ও চাকরিতে মুসলিম সংরক্ষণ নিয়ে অন্ধ্রের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী ৮ জুন (নরেন্দ্র মোদী সরকারের শপথগ্রহণের আগের দিন) বলেন, সংখ্যালঘুদের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে কম। এজন্য ওদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এটা সরকারকে অবশ্যই বিবেচনা নিতে হবে। সরকারের কাজ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার উপরে নিয়ে আসা। এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। চন্দ্রবাবু নাইডুর এই কর্মসূচিকে বিজেপি তথা মোদী এবং আরএসএস কি হজম করতে পারবে? বেশ কঠিন। তাই এক ধরনের দ্বন্দ্ব সংঘাত লেগেই থাকবে মোদীর নবগঠিত সরকারে। সর্বোপরি মোদীর ঘৃণা ভাষণইবা চন্দ্রবাবু নাইডু কতটা হজম করতে পারবেন। জাতীয় স্তরে হজম করলেও রাজ্যস্তরে তার ভোটের প্রশ্ন রয়েছে। চন্দ্রবাবু নাইডু মোদী সরকারের শরীক হওয়ায় ইতিমধ্যে তার রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে জ্বালাও পোড়াও বিক্ষোভ হয়েছে। আর এই বিক্ষোভে শরীক হয়েছে তার দলের নেতা কর্মীরাও। এটা কিসের বার্তা?

দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে – বেকারত্ব-কর্মসংস্থান। ভারতে এখন ৭০ কোটি মানুষের রোজগার নেই। এই সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। এর মধ্যে ৩৫ কোটি শিক্ষিত বেকার। এই শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের কি হবে? বিগত ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে মোদী বলেছিলেন, তিনি বছরে দুই কোটি বেকারের কর্মসংস্থান করবেন। কিন্তু তা করেননি বা করতে পারেননি। অন্যদিকে, এ সময়ে সরকারি চাকরিতে শূন্য পদ রয়েছে ৩০ লাখ। তাও তিনি পূরণ করেননি। রেলওয়েতে শূন্য পদ ৭ থেকে ৮ লাখ। এই শূন্য পদ কি এবার পূরণ করবেন?

তৃতীয় চ্যালেঞ্জ কৃষি ও কৃষকের পণ্যের ন্যায্য মূল্য। এটাও কঠিন চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ মানেই আদানি-আম্বানির বিরাগ ভাজন হওয়া। মোদী কি পারবেন আদানি-আম্বানিকে চটাতে?

চতুর্থ আঞ্চলিক সংহতি। মোদীর ঘৃণা ভাষণে ইতিমধ্যে যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ হয়েছে শুধু তাই নয়, সেইসাথে আঞ্চলিক সংহতিও দুর্বল হয়ে গেছে। মনিপুর, কাশ্মীর তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

জাত পাতের বিভেদ একটা বড় সমস্যা। হিন্দুত্বের বাতায়নে গত ১০ বছর এই প্রশ্নকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিতে সক্ষম হন মোদী। যাকে বলা হয় মোদী ম্যাজিক। কিন্তু মোদী ম্যাজিক এখন ফিকে হয়ে গেছে। জনগণের দাবি আরো জোরদার হচ্ছে। এই দাবিকে কিভাবে সামনে নেবে মোদী সরকার। এমনকি সরকারের ভেতরের দল জেডিইউ নেতা নিতিশ কুমারও জাত গণনার পক্ষে। এছাড়াও আছে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের অগ্নিবীর প্রকল্প। যা মাত্র পাঁচ বছরের চুক্তিভিত্তিক চাকরি। আরো আছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রশ্ন।

তৃতীয় মেয়াদের নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই চ্যালেঞ্জ ছাড়াও একটা বড় চ্যালেঞ্জ আছে তা হলো তার দল বিজেপির পিতৃ সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) হিন্দু রাষ্ট্র ও অখণ্ড ভারত নির্মাণ প্রকল্প। তার কি হবে?

অষ্টাদশ লোকসভায় নির্বাচনের শুরুতেই এবার স্লোগান দেন ‘আপকি বার ৪০০ পার’। এমনি এমনি এই সেøাগান দেননি। এই সেøাগানের পিছনে রয়েছে নিখুঁত রাজনৈতিক অভিসন্ধি। আরএসএস-এর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছা। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। এই জন্য সংবিধান পরিবর্তন। সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে সংসদে (লোকসভা ও রাজ্যসভায়) দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার লক্ষ্য করে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি।

উল্লেখ্য, লোকসভায় দুইটি তৃতীয়াংশ হলে রাজ্যসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা সহজেই হয়ে যায় কারণ লোক সভা ও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় সদস্যাই রাজ্যসভার সংসদ নির্বাচন করেন। এখানে আরও উল্লেখ্য, আগামী বছর ২০২৫ সালে আরএসএস-এর জন্মের (প্রতিষ্ঠার) একশো বছর পূর্ণ হবে। আর এই শততম জন্মদিনেই প্রতিষ্ঠার দিনেই আরএসএস ভারতের হিন্দু রাষ্ট্র করে তাদের আজীবনের লালিত স্বপ্ন পূরণের ছক করে এগোচ্ছিল। কিন্তু আরএসএস-এর দুর্ভাগ্য সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিল ভারতের জনগণ বিজেপিকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়ে। এই ঘটনার মধ্যদিয়ে কার্যত ভারত, ভারতের জনগণ বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেল। গান্ধী নেহেরু প্যাটেল আজাদ আম্বেদকরের ধর্মনিরপেক্ষ ভারত রক্ষা পেল হিন্দুদের বীভৎস থাবা থেকে। সেই সাথে রক্ষা পেল ভারতের মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈনসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ৪০ কোটি মানুষ। একইসঙ্গে রক্ষা পেল দক্ষিণ এশিয়ার ভারতের প্রতিবেশী অনেকগুলো দেশ। যেগুলোকে নিয়ে আরএসএস অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন দেখেছে।

মনে রাখতে হবে, হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা আরএসএস-এর প্রথম পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের বাস্তবায়ন হলেই তোড়জোড় শুরু হবে ওদের আজীবনের স্বপ্ন লালিত অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই নরেন্দ্র মোদী করোনাকালে বিপুল অর্থ সঙ্কট ও বিপদের মধ্যেও দিল্লিতে ব্রিটিশদের তৈরি আলিসান সংসদ ভবন থাকতেও নতুন করে একটি সংসদ ভবন নির্মাণ করেন। যে ভবন ইতিমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে। এই ভবনের প্রবেশদ্বারে অখণ্ড ভারতের বিতর্কিত মানচিত্র স্থাপন করা হয়েছে। যে মানচিত্রের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও আফগানিস্তানকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে মালাই সাগর অন্যদিকে হিমালয় থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত। ভারতের সংসদ ভবনে এই অখণ্ড ভারতের মানচিত্র স্থাপন করার জন্য বিপুল অর্থ ব্যয়ে মোদী নতুন সংসদ ভবন ‘কর্তব্য পথ’ নির্মাণ করেছেন। শুধু তাই নয়, এই সংসদ ভবনকে অসংখ্য দেব-দেবীর মূর্তিতে কলঙ্কিত করা হয়েছে। যা পুরানো সংসদ ভবনে সম্ভব নয়। কারণ এই ভবন ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রোমান পদ্ধতির স্থাপনা। অন্যদিকে কর্তব্য পথ নির্মিত হয়েছে ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসরণ করে ধর্মীয় (হিন্দু) ভাববেগকে জাগ্রত বা ধর্মীয় ভাবধারা উজ্জীবিত করতে।

তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, একদিকে যেমন নেহেরু গান্ধী প্যাটেল আজাদ আম্বেদকরের ধর্মনিরপেক্ষ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ ভারত রক্ষা পেল অন্যদিকে আমাদের মতো প্রতিবেশীরাও বন্য হাতির আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেল। সর্বাগ্রে রক্ষা পেল ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলা। যারা মূলত প্রগতি ও উন্নয়নের ধারায় বিশ্বাস করে। সেই বিশ্বাসে ইতিমধ্যে যে আঘাত হয়েছে সেই বিশ্বাসে বিজেপি তথা আরএসএস যে চিড় ধরিয়েছে আশা করি ভারতের শান্তি প্রিয় প্রগতিবাদী মানুষ দ্রুতই তা শুধরে নিয়ে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান রক্ষা করে ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতির যাত্রাকে অব্যাহত রাখবে। সেইসাথে সাম্প্রদায়িক বিভাজন, জাতি বিদ্বেষসহ সকল বিদ্বেষ ও ধর্মের নামে সকল পশ্চাৎপদ ধ্যানধারনার কবর রচনা করবে। যা এবারের অষ্টাদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে। এই শুরুর নিশ্চয়ই শেষ দেখবে একদিন ভারতবাসী, দেখবে বিশ্ববাসীও।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে চাইলে ক্লিক করুন: সমসাময়িক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

2 + fifteen =