অভিনেত্রী ববিতার জন্মদিন আজ

ঢাকাই চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতার ৭১তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাট জেলায় জন্ম ববিতার। তাঁর আসল নাম ফরিদা আক্তার পপি। কিন্তু সিনেমায় আসার পর পরিচিতি পেয়েছেন ববিতা নামে। ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক বেশ কয়েক বছর ধরেই কানাডায় থাকেন। পড়াশোনা শেষে সেখানে থিতু হয়েছেন তিনি। গত কয়েক বছর নিজের জন্মদিনটা ছেলের সঙ্গেই কাটান ববিতা। তবে এবার অসুস্থতার কারণে ছেলের কাছে যাওয়া হয়নি। কদিন আগেই দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ববিতা। ১৮ জুলাই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। চার দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। তাই ইচ্ছা থাকলেও বিশেষ দিনটি ছেলের সঙ্গে উদ্‌যাপন করা হচ্ছে না এবার।

ববিতা বলেন, ‘এখন করোনা নেই। তবে শরীরটা খুব দুর্বল। বাসাতেই বিশ্রামে আছি। এই পরিস্থিতিতে দেশের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অনিকের কাছে যেতে পারিনি। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর ছেলের কাছে যাব। শরীরের এই অবস্থায় তো কোনো আয়োজন সম্ভব নয়। তাই বাসাতেই কাটবে দিনটা।’

চলচ্চিত্রে আসার পেছনে ববিতার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন তাঁর বড় বোন চিত্রনায়িকা সুচন্দা। কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৬৮ সালে অভিষেক হয় ববিতার। এই চলচ্চিত্রে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর নাম ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে।

নায়িকা হিসেবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’ মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট। এর পর থেকে নায়িকা হিসেবে অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা। জহির রায়হান পরিচালিত ‘টাকা আনা পাই’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ববিতা দর্শকপ্রিয়তা পেলেও তাঁর জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র বলা হয় ‘অশনিসংকেত’কে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় এই সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন।

১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া ২০১৬ সালে তাঁকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

14 + 12 =