বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত

উন্নত বিশ্বের দৃষ্টিতে বর্তমান বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি সফল দৃষ্টান্ত। এ দেশের সব অর্জন এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। ভূরাজনীতি, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ অন্যদের তুলনায় ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে, এমনটাই ভাবছেন সমাজের বিশিষ্টজনরা।

শনিবার (১৩ মে) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড আয়োজিত ‘ভূরাজনীতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা। গোলটেবিল বৈঠকে সঞ্চালনা করেন এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু।

বৈঠকে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে দুভাবে দেখতে হবে—একটি হচ্ছে আমাদের লং ভিউ, বাংলাদেশ আজ ৫২ বছরে পড়েছে। ৫২ বছরে বাংলাদেশের যে অর্জন, এগুলো স্বীকৃত। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিডে এখন আমরা ৩৪ নম্বরে আছি। ৩৫ নম্বরে সিঙ্গাপুর, সেই সিঙ্গাপুরকে আমরা টপকেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরেই আছি। পাকিস্তান আমাদের অনেক পেছনে।

তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বে যারা বাংলাদেশের অবস্থান দেখছেন, ভূ-অর্থনীতি দেখছেন, তারা বারবার বলছেন যে ‘বাংলাদেশ ইজ নাউ সাকসেস কেস অব ডেভেলপমেন্ট’। বিশ্বব্যাংকের প্রথম যে কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলেন, তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশ ইজ টেস্ট কেস অব ডেভেলপমেন্ট’। এ দেশ যদি কিছু করতে পারে, তাহলে বুঝবো যে অন্য দেশগুলোও পারবে। তাই বাংলাদেশ এখন স্বীকৃত যে ‘ইট’স সাকসেস কেস অব ডেভেলপমেন্ট’। হ্যাঁ, বাংলাদেশ পারফেক্ট না। এখানে অনেক সমস্যা আছে, পলিসিগত সমস্যা আছে। তবে আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে, আমরা পিছাচ্ছি না।

নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল রশিদ বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি যেভাবে চলছে, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। এর ফলে এই অঞ্চলে আমরা ইকোনমি স্ট্যাবিলিটি দেখেছি। অথচ শ্রীলঙ্কা ভেঙে পড়েছে, পাকিস্তান ভেঙে পড়তে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, সাউথ এশিয়ার কন্টেস্টে বাংলাদেশ যে ভৌগোলিক অবস্থানে আছে, বর্তমান পেক্ষাপটে এটা নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে কারণ আমাদের জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। এই নির্বাচনের জন্যই আন্তর্জাতিকভাবে অবশ্যই অনেক ধরনের চাপ আসবে এবং সে কারণে আমাদের অভ্যন্তরীণ যেসব সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো বস্তুনিষ্ঠভাবে চিহ্নিত করতে হবে।

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লিডারশিপ মূল্যায়ন করতে চাই, তাহলে এক হচ্ছে ভূরাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনৈতিক উন্নতি ও বাংলাদেশের অগ্রগতি। আরেকটা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং ডমিস্টিক ইনস্টিটিউটশন। সবগুলোকে একভাবে দেখতে হবে। আলাদা দেখার সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটা প্রতিটার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পুরো বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটা প্ল্যান আছে এবং তিনি সেই প্ল্যান অনুযায়ী এগোচ্ছেন। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কাস্টমাইজ করেন; অ্যাডজাস্টমেন্ট করেন; যা আমরা বাহির থেকে বুঝতে পারি না।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শ্যামল দত্ত, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen + 2 =