বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শক্তিশালী টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ভারত

সালেক সুফী

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার ভাবনা মাথায় রেখে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শক্তিশালী টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা  করেছে ভারত। দুই টেস্ট ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি শুরু হবে ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইতে। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার কথা কানপুরে। ভারতের একটি উগ্রবাদী রাজনৈতিক দল কানপুর টেস্টে বাংলাদেশ দলের উপর আক্রমণ করার হুমকি দিয়েছে।

যা হোক সেটি ক্রিকেট মাঠের বাইরের কথা, ভারতকে প্রমাণ করতে হবে ভারতের সব ভেন্যুতে ক্রিকেট খেলা সব দলের জন্য নিরাপদ। বাংলাদেশকেও নিজেদের খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে. তবে নতুন বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে পরিণত হয়ে ওঠাকে ভারত গুরুত্ব দিয়েই সময়ের সেরা স্কোয়াড নির্বাচন করেছে সন্দেহ নেই।

ভারতের এই সেরা একাদশের বিরুদ্ধে ভারতের উইকেট এবং পরিবেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাংলাদেশকে নিজেদের সেরা দল নিয়ে নিবেদিত থেকে খেলতে হবে। পাকিস্তানের মতো  ভারতের বিরুদ্ধেও টেস্ট জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। ভারতের মাটিতে জয়ের প্রশ্ন  আসে না। ভারত এই মুহূর্তে সব ফরম্যাটেই সেরা দল।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি পর্বেও পয়েন্টস টেবিলে আছে সবার উপরে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত নিজেদের দেশে সব ফরম্যাটে অজেয়।  তবে বাংলাদেশ সম্প্রতি টেস্ট ক্রিকেটে পরিণত মনে হচ্ছে। ভারত তাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক্সপেরিমেন্ট করার বিলাসিতা দেখায়নি।

প্রথম টেস্টের জন্য ভারতীয় টেস্ট স্কোয়াড: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), যশ্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, সরফরাজ খান, রিশভ পান্ট, ধ্রুব জুরেল, রবিচন্দন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ, জাসপ্রীত বুমরাহ, যশ দয়াল।

ব্যাটিং শক্তি অত্যন্ত সুসংহত। রোহিত শর্মা, যশ্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলির সমন্বয়ে গড়া টপ অর্ডার যে কোনো বোলিং আক্রমণের মোকাবিলায় বর্তমানে বিশ্বসেরা বলা যায়।

এখানে চিড় ধরাতে তাসকিন, শরিফুল, হাসান মাহমুদদের সেরাটা প্রয়োগ করতে হবে। হাফ চান্সগুলো লুফে নিতে হবে। মিডল অর্ডারে সম্ভবত লোকেশ রাহুল, ঋষভ পান্ট খেলবে। শক্ত ভিতের উপর ইনিংস দাঁড়ালে ওরা দ্রুত রান তুলে ভারতের ইনিংস ধরা ছোয়ার বাইরে নিয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশ ভারতের উইকেটের চরিত্র বিবেচনায় তিন স্পিনার, দুই পেসার না তিন স্পিনার আর তিন পেসার নিয়ে খেলবে বিবেচনা করতে হবে। নবীন পেসার নাহিদ রানাকে খেলানোর বিষয়টা অনেকটা উইকেটের চরিত্রের উপর নিভর করবে। উইকেটে যথেষ্ট পেস বাউন্স না থাকলে রানাকে খেলানো ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

ভারতের কুশলী ব্যাটসম্যানরা তরুণ বোলারের মনোবল ভেঙে দিবে। তবে উইকেটে পেস থাকলে নাহিদ কিন্তু তুরুপের তাস হতে পারে। কিন্তু সিরিজে বাংলাদেশ বোলিংয়ের মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে সাকিব, তাইজুল এবং মিরাজের।

জাসপ্রিত বুমরা, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ থাকায় ভারত হয়ত উইকেটে সবুজ ঘাস রাখতেও পারে। কিন্তু পাকিস্তানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পেস বল খেলে অভ্যস্ত হয়ে ওঠায় বিশ্বসেরা স্পিন দিয়েই বাংলাদেশকে ঘায়েল করতে চাইবে।

ভারতের উইকেটে রবিচন্দন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব বিশ্বের যে কোনো ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামাতে পারে। হয়ত খেলবে জাদেজা, অশ্বিন এবং কুলদীপ। বাংলাদেশ মিডল অর্ডারে মোমিনুল, মুশফিক, সাকিব, লিটন, মিরাজদের বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।

ইদানিং বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ যে কোনো ফরম্যাটেই কিন্তু এশেজ বা ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের মতোই উত্তাপ ছড়ায়। বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে মুখিয়ে থাকে। আশা করি সিরিজটি তুখোড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ হবে।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল হোসেন জয়, জাকির হাসান, সাদমান ইসলাম, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, এবাদত হোসেন, রিশাদ হোসেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

15 + seventeen =