বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যার্থতার ব্যাবচ্ছেদ

সালেক সুফী

চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ভারতের দাপুটে বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যাটিং ব্যার্থতা নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলছে। এমনিতেই বাংলাদেশের  ব্যাটসম্যানদের বোলিং সহায়ক উইকেট উঁচুমানের বোলিং মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় স্কিলের অভাব রয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছে মূলত দল হিসাবে অগ্রগামী বোলিং দক্ষতার কারণে। পাকিস্তানেও কিন্তু দল হিসাবে বাংলাদেশ ভালো ব্যাটিং করেছে বলবো না। মুশফিক, লিটন, মিরাজ দলের বিপর্যয়ের মুখে অসামান্য দক্ষতার পরিচয় দিয়ে দলকে উদ্ধার করেছে।

এমনিতেই ভারতের বোলিং আক্রমণ অপেক্ষাকৃত উঁচু মানের এবং সবাই আছে তুখোড় ফর্মে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের বুমরা, আকাশ দীপের গতিময় পেস বোলিং বিশেষত অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে ভেতরে ঢোকা ইনসুইং গুলো জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার চেষ্টা করে দৃষ্টিকটু ভাবে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছে। এসজি বল বিষয়ে অজুহাত আমি বিবেচনায় নিবো না। ভারত সিরিজ এসজি বল দিয়ে খেলা হবে এটি কারো অজানা ছিল না।

দুইদলের প্রথম ইনিংস বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে ভারত প্রথম ইনিংসের ৩৭৬ রানের ১৯৯ এসেছে রবিচন্দ্র অশ্বিন (১১৩) এবং রবীন্দ্র জাদেজা (৮৬) ৭ম উইকেট পার্টনারশিপে। এই পার্টনারশীপ ম্যাচের ফলাফলে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করলে। কেবল বিশ্লেষণের স্বার্থে যদি এই পার্টনারশিপ বাদ রাখি বাকি ভারত দল করেছে ১৭৭ রান। সেখানেও আবার জাসোয়ালের ৫৬ রান রয়েছে। বাংলাদেশ সর্বসাকুল্যে করেছে ১৪৯। সেই হিসাবে বিবেচনা করলে ভারত দল বাংলাদেশের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অনেক ভালো ব্যাটিং করেছে বলবো না। দ্বিতীয় ইনিংসেও রোহিত শর্মা, জাসোয়াল এবং বিরাট কোহলিকে ফিরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।  ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০৮ রানে এগিয়ে থেকে আজ তৃতীয় দিন শুরু করবে ভারত। দ্রুত রান করে ৪০০-৪৫০ এগিয়ে থেকে হয়তো ইনিংস ঘোষণা করবে ভারত। জয়ের কথা সুদূর পরাহত। আজ দিন শেষের আগেই হয়তো ভারতের জয়ে টেস্টের যবনিকা হবে। বাংলাদেশের এই শোচনীয় অবস্থানের কারণ ব্যাটিং স্কিলের অভাব যেটি থেকে বেরিয়ে আসার সংক্ষিপ্ত ম্যাজিক কারো জানা নেই। প্রথম ইনিংসে বুমরা, আকাশ দীপ, সিরাজ ধসিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। উইকেটে এখন স্পিন ধরছে। তাই দ্বিতীয় ইনিংসে পেস বোলিংয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হবে অশ্বিন এবং জাদেজার মত বিশ্বসেরা স্পিন যুগলকে। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে এখন মেহেদী মিরাজ অবশ্যই টপ অর্ডারে ব্যাটিং করার যোগ্যতা রাখে। আর সেটি হলে লেফট হ্যান্ড রাইট হ্যান্ড কম্বিনেশন হবে। যাই হোক যুদ্ধ জারি হয়ে গাছে। সেই যুদ্ধে বুক চেতিয়ে লড়তে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসের ভুল থেকে কিছু শিখেছে কিনা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।  দৈব দুর্বিপাতেও রক্ষা হবে না বাংলাদেশের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

nine + eleven =