বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে নামিবিয়া চমক দেখাল

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে রবিবার শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অষ্টম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই অঘটনের জন্ম দিলো পুঁচকে নামিবিয়া। প্রথম রাউন্ডে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ইয়ান ফ্রাইলিঙ্কের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নামিবিয়া ৫৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে এশিয়ার সেরা দল শ্রীলংকাকে। টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটিই সর্বোচ্চ বড় ব্যবধানে জয় নামিবিয়ার।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিথের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান তুলে দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে নামা নামিবিয়া। ষষ্ঠ উইকেটে ৩৩ বলে ৬৯ রানের বিধ্বংসী জুটি গড়েন ফ্রাইলিঙ্ক ও স্মিথ। জবাবে নামিবিয়ার বোলারদের আটঁসাটঁ বোলিংয়ে ১৯ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১০৮ রানে অলআউট হয় ২০১৪ সালের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা।

জিলংয়ের কারদিনিয়া ওভাল পার্কে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেয় শ্রীলংকা। ৩ ওভারে দলীয় ১৬ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে নামিবিয়া। মাইকেল ফন লিনগেন ৩ ও ডিভান লা কুক ৯ রানে ফিরেন। তৃতীয় উইকেটে ১০ বলে ১৯ রান তুলে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করেন স্টিভেন বার্ড ও নিকোল লফটি-ইটন। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় মারমুখী মেজাজে শুরু করে ১২ বলে ২০ রান করেন ইটন।

মিডল-অর্ডারে ছোট-ছোট ইনিংস খেলে নামিবিয়াকে খেলায় ফেরান বার্ড ও অধিনায়ক জেরার্ড এরাসমাস। বার্ড ২টি চারে ২৬ ও এরাসমাস ২০ রান করেন। তাদের বিদায়ে ১৪ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ৯১ রান পরিণত হয় নামিবিয়া। এ অবস্থা থেকে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিথ।

সপ্তম উইকেটে শ্রীলংকার বোলারদের উপর ছড়ি ঘুড়িয়েছেন ফ্রাইলিঙ্ক ও স্মিথ। জুটিতে ৩৩ বলে ৬৯ রান যোগ করেন  তারা। ১৬ থেকে ২০ ওভার পর্যন্ত যথাক্রমে- ১১, ১০, ১৬, ১৮ ও ১৩ রান তুলেন ফ্রাইলিঙ্ক ও স্মিথ। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৩ রানের শক্তপোক্ত সংগ্রহ পায় নামিবিয়া।

ইনিংসের শেষ বলে আউট হবার আগে ২৮ বলে ৪৪ রান করেন অলরাউন্ডার ফ্রাইলিঙ্ক। তার ইনিংসে মাত্র ৪টি চার ছিলো। ২টি করে চার-ছক্কায় ১৬ বলে ৩১ রান তুলে অপরাজিত থাকেন স্মিথ। শ্রীলংকার প্রমোদ মাদুশান ৩৭ রানে ২ উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৬৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪ ওভারের মধ্যে তিন ব্যাটারকে হারায় শ্রীলংকা। ওপেনার কুশল মেন্ডিস ৬, পাথুম নিশাঙ্কা ৯ ও দানুস্কা গুনাথিলাকা ০ হাতে ফিরেন। ২১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট পতনে মহাচাপে পড়ে শ্রীলংকা। চাপ থেকে মুক্ত হবার আগেই দলীয় ৪০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় লংকানরা। ১২ রানে বিদায় নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।

৭ ওভারে চার ব্যাটারকে হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে ঘুড়ে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেন ভানুকা রাজাপাকসে ও অধিনায়ক দাসুন শানাকা। শানাকার মারমুখী মেজাজে উল্টো চাপে পড়েছিলো নামিবিয়ার বোলাররা। এতে বড় হচ্ছিলো জুটিটিও। তবে ১১তম ওভারে দলীয় ৭৪ রানে রাজাপাকসেকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন বাঁ-হাতি স্পিনার বার্নাড শুলজ। ২১ বলে ২০ রান করেন রাজাপাকসে।

আর ১৪তম ওভারে দলীয় ৮৮ রানে শানাকাকে থামান বাঁ-হাতি পেসার ফ্রাইলিঙ্ক। ২টি চার ও ১টি ছয়ে ২৩ বলে ২৯ রান করেন শানাকা। রাজাপাকসের সাথে ২৪ বলে ৩৪ রান তুলেন শানাকা। শানাকার আউটেই শ্রীলংকার জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভারে ১০৮ রানে অলআউট হয়ে যায় লংকানরা। নামিবিয়ার ডেভিড ওয়াইস-শুলজ- ফ্রাইলিঙ্ক ও বেন শিকঙ্গো ২টি করে উইকেট নেন। ব্যাট হাতে ২৮ বলে ৪৪ ও বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন নামিবিয়ার অলরাউন্ডার ফ্রাইলিঙ্ক।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

seven − two =