বৃষ্টির কারণে আগেভাগে শেষ চতুর্থ দিন, জয়ের জন্য ১৪৩ রান দরকার বাংলাদেশের

রাওয়ালপিন্ডি, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪  (বাসস) : পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মত টেস্ট সিরিজ জিততে হলে রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের শেষ দিন ১০ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ১৪৩ রান করতে হবে সফরকারী বাংলাদেশকে। পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৫ রানের টার্গেটে চতুর্থ দিন শেষে ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছে বাংলাদেশ। আলোর স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে আগেভাগেই দিনের খেলার ইতি ঘটে।

যদিও দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ড্র হলেও সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। কারন সিরিজের প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিলো টাইগাররা।

প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে তৃতীয় দিন ২৬২ রানে অল আউট হয়েছিলো বাংলাদেশ। ১২ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ২ উইকেটে ৯ রান তুলেছিলো পাকিস্তান। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ২১ রানে এগিয়ে ছিলো স্বাগতিকরা।

আজ চতুর্থ দিনের নবম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট উপহার দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মিড অফে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দারুণ ক্যাচে ২০ রানে ফিরেন পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুব। ১৭তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে তৃতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট তুলে নেন পেসার নাহিদ রানা। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৮ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক শান মাসুদ। মাসুদকে শিকার করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেন রানা। পরের দুই ওভারে দারুন দু’টি ডেলিভারিতে দুই উইকেট নেন তিনি। অফ-স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দেন ১১ রান করা বাবর আজম। বাবরের বিদায়ে ক্রিজে এসে প্রথম বলেই স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ক্যাচ ধরতে পারেননি সাদমান। নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে শাকিলকে ২ রানে বিদায় দেন রানা। উইকেটের পেছনে শাকিলের ক্যাচ নেন লিটন দাস।

রানার তিন ওভারে ৩ উইকেটে ৮১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। দলকে চাপমুক্ত করতে সপ্তম উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সালমান আঘা। এই দুই ব্যাটার উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছিলো পাকিস্তান শিবিরে। এ অবস্থায় পাকিস্তানকে জোড়া ধাক্কা দেন আগের দিন ২ উইকেট নেওয়া পেসার হাসান মাহমুদ। ৩৭তম ওভারের পঞ্চম বলে রিজওয়ানকে ৪৩ রানে ও পরের ডেলিভারিতে মোহাম্মদ আলিকে শূণ্যতে সাজঘরে পাঠান হাসান।

১৪৫ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে আবরার আহমেদকে ২ রানে আউট করেন রানা। এতে দেড়শর নীচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু শেষ ব্যাটার মির হামজাকে নিয়ে পাকিস্তানের রানের চাকা সচল করেন সালমান। হামজাকে ৪ রানে থামিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে ১৭২ রানে শেষ করেন হাসান। এতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১৮৫ রানের।

হামজাকে আউট করে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচে প্রথমবারের মত ৫ উইকেট শিকার করেন হাসান। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন সালমান।

হাসান ৪৩ রানে ৫টি ও রানা ৪৪ রানে ৪টি উইকেট নেন। বাকী এক উইকেট নিয়েছেন আরেক পেসার তাসকিন। এই প্রথমবারের মত নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এক ইনিংসে প্রতিপক্ষের সব উইকেট শিকার করলেন বাংলাদেশের পেসাররা।

১৮৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পাকিস্তানের বোলারদের উপর চড়াও হন বাংলাদেশ ওপেনার জাকির হাসান। ২টি করে চার-ছক্কায় জাকিরের ২৩ বলে ৩১ রানে ৭ ওভারে ৪২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম ওভারের পর আলোর স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারনে আগেভাগেই দিনের খেলার ইতি ঘটে। জাকির ৩১ ও আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত আছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : (চতুর্থ দিন শেষে)

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ২৭৪/১০, ৮৫.১ ওভার (আইয়ুব ৫৮, মাসুদ ৫৭, সালমান ৫৪, মিরাজ ৫/৬১, তাসকিন ৩/৫৭)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৬২/১০, ৭৮.৪ ওভার (লিটন ১৩৮, মিরাজ ৭৮, শাহজাদ ৬/৯০)।

পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৭২/১০, ৪৬.৪ ওভার (সালমান ৪৭*, রিজওয়ান ৪৩, হাসান ৫/৪৩, রানা ৪/৪৪)।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৪২/০, ৭ ওভার (জাকির ৩১*, সাদমান ৯*)।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twelve − 1 =