বৃহস্পতি গ্রহের বরফ আচ্ছাদিত তিনটি উপগ্রহে অভিযানের উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইএসএ) একটি স্যাটেলাইট পৃথিবী থেকে উড্ডয়ন করেছে। শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জুস স্যাটেলাইটটি ফ্রেঞ্চ গায়ানার কৌরো মহাকাশ বন্দর থেকে আরিয়ান-৫ রকেটে উড্ডয়ন করে। বৃহস্পতিবারের উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় চেষ্টায় রকেটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয় ইএসএ। খবর একাত্তর অনলাইনের
জার্মানির ডার্মস্টাডে ইএসএ-র মিশন কন্ট্রোলের অপারেশন ডিরেক্টর আন্দ্রেয়া অ্যাকোমাজো বলেন, ‘আমাদের একটা মিশন আছে; আমরা বৃহস্পতিতে উড়ে যাচ্ছি; আমাদের অনেক প্রশ্ন আছে। জুস আসছে, বৃহস্পতি! এর জন্য প্রস্তুত হও!’
এক দশমিক ছয় বিলিয়ন ইউরোর মিশনটি নিরাপদে তার গন্তব্যে রওনা হওয়ায় গর্ব প্রকাশ করেছেন সংস্থার মহাপরিচালক ড. জোসেফ অ্যাশবাচারও। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমার সবাইকে মনে করিয়ে দিতে হবে, এখনও অনেক পথ বাকি আছে। আমাদের সমস্ত যন্ত্র পরীক্ষা করতে হবে যাতে তারা প্রত্যাশিতভাবে কাজ করে এবং তারপরে অবশ্যই বৃহস্পতিতে পৌঁছায়। কিন্তু আমরা আমাদের লক্ষ্যের দিকে অনেক বড় পদক্ষেপ নিয়েছি।’
জুপিটার আইসি মুনস এক্সপ্লোরার বা সংক্ষেপে জুস নামের স্যাটেলাইটটি সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ ব্রিহস্পতির প্রধান উপগ্রহ ক্যালিস্টো, গ্যানিমিড এবং ইউরোপাকে পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। এই উপগ্রহগুলোতে তরল জলের বিস্তীর্ণ আধার রয়েছে বলে মনে করা হয়। সেখানে প্রাণের অস্তিত্বও থাকতে পারে কিনা তা জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।
সৌরজগতের প্রায় শেষ প্রান্তে থাকা বৃহস্পতি সূর্য থেকে অনেক দূরে অবস্থিত, যেখানে পৃথিবীতে পড়া সূর্যের আলোর মাত্র ২৫ ভাগ পৌঁছায়। তাই সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার কথা চিন্তা করা কল্পনাপ্রসূত মনে হতে পারে।
তবে এই বিশাল গ্যাসীয় গ্রহ তার উপগ্রহগুলোর ওপর যে মহাকর্ষীয় বল প্রয়োগ করে তা থেকে ধারণা করা হয় এর সাধারণ বাস্তুতন্ত্র চালানোর শক্তি এবং উষ্ণতা থাকতে পারে, অনেকটা পৃথিবীর সমুদ্রের তলদেশে আগ্নেয়গিরির মুখের আশেপাশে থাকা বাস্তুতন্ত্রের মতো।