ভিনিসিয়ুসকে সমর্থন: দুটি আফ্রিকান দেশের বিপক্ষে খেলবে ব্রাজিল

স্প্যানিশ লা লিগায় একের পর এক বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। সর্বশেষ ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে তার প্রতি করা বর্ণবাদী আচরণের সব সীমা অতিক্রম করে যায়। লা লিগার এই এক মৌসুমেই মোট ১০বার ভিনিসিয়ুস এ ধরনের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর।

ভিনিসিয়ুসের এ ধরনের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হওয়া নিয়ে তোলপাড় পুরো ফুটবল দুনিয়ায়। সাবেক, বর্তমান ফুটবলাররা এ নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছে। তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন খোদ ফিফা সভাপতি। আর এ ঘটনা ফুঁসে উঠেছে ভিনিসিয়ুসের দেশ ব্রাজিলও।

ব্রাজিলিয়ানরা স্পেন কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছে সে দেশে বর্ণবাদ এত বেশি ছড়িয়ে পড়ার জন্য। এ নিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করছে ব্রাজিলিয়ানরা। এবার ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন ঘোষণা দিয়েছে, বর্ণবাদ বিরোধী লড়াইয়ে ভিনিসিয়ুসকে সমর্থন জানাতে দুটি আফ্রিকান দেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে তারা।

৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এই দুটি ম্যাচ খেলবে গিনি এবং সেনেগালের বিপক্ষে। আগামী ১৭ জুন বার্সেলোনায় গিনির বিপক্ষে এবং এর তিনদিন পর পর্তুগালের রাজধানী লিজবনে তারা খেলবে সেনেগালের বিপক্ষে।

ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন শুধু আফ্রিকান দেশের বিপক্ষেই খেলবে না, একই সঙ্গে তাদের ঘরোয়া লিগ ম্যাচগুলোতে বর্ণবাদ বিরোধী প্রচারণার কাজও শুরু করতে যাচ্ছে। এ সপ্তাহেই এই কর্মসূচি পালন শুরু হবে।

‘বর্ণবাদ নিয়ে কোনো ফুটবল ম্যাচ হবে না’- এই স্লোগানে শুরু হচ্ছে ব্রাজিলের এই প্রচারণা। এর আগে ২০২২ সালেও ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের নতুন সভাপতি এডনাল্ডো রদ্রিগেজের অধীনে বর্ণবাদ বিরোধী প্রচারণা শুরু হয়েছিলো। এবার সেই কর্মসূচিকে শুধু আরেকটু বড় করা হচ্ছে। তাদের এই প্রচারণার উদ্দেশ্য হলো, ব্রাজিলের বিচার ব্যবস্থায় কিছুটা সংস্কার এনে স্টেডিয়ামে বর্ণবাদী আচরণের শাস্তি যেন আরও কঠোর করা হয়।

গত মার্চেই রদ্রিগেজ রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্বব্যাপি বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনে ব্রাজিল নেতৃত্ব দেবে।’

ভিনিসিয়ুস বর্ণবাদী আচরনের শিকার হওয়ার পর ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন তাকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে খুব ক্লোজলি কাজ করছে। দুই আফ্রিকান দেশের বিপক্ষে ব্রাজিল দুই ম্যাচ খেলার জন্য এমন দুটি শহরকে বেছে নিয়েছে, যে দুটিকে ইউরোপের আইকনিক বলা যায়। যেখানে তারা নিশ্চিত করতে চায় যে, বর্ণবাদ যতই মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক, তারা বীরদর্পে সেগুলোকে ভেঙে চুরমার করে দেবে। এ ব্যাপারে ভিনিসিয়ুসকে আরও শক্তিশালী করে তুলতেই ব্রাজিল এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে ইএসপিএন জানিয়েছে।

এই দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্রাজিলের কোচ থাকবেন কে? এটা এখন বড় প্রশ্ন। কারণ, বিশ্বকাপের পর থেকে এখনও কোচহীন ব্রাজিল। তবে, নতুন কোচ না পাওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন রেমন মেনেজেস। যিনি এখন অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যারা, আর্জেন্টিনায় চলমান বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে।

১৭ জুন গিনির বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের একদিন আগে তিনি দলের দায়িত্ব নেবেন বলে জানা গেছে। এই দুই ম্যাচের জন্য রিও ডি জেনিরোতে রোববার ব্রাজিল দল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইএসপিএন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

three × two =