মিরাজ-শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান

মেইক শিপ্ট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরির পর শেষ দিকে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ক্যামিও ইনিংসের সুবাদে এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করেছে বাংলাদেশ। মিরাজ ১১২ রানে আহত অবসর নেন। ১০৪ রানে আউট হন শান্ত। ৪৫তম ওভারে উইকেটে এসে ১৮ বলে অপরাজিত ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন সাকিব।

পাকিস্তানের লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ওপেনার হিসেবে অভিষেক হওয়া তানজিদ হাসান তামিম বাদ পড়ায় মেইক শিপ্ট ওপেনার হিসেবে শুরুতে নামেন মিরাজ। তার সাথে ছিলেন মোহাম্মদ নাইম।

মিরাজ-নাইম উদ্বোধনী জুটিতে ১০ ওভারে ৬০ রান পায় বাংলাদেশ।  ওভারের শেষ বলে স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে  ৫টি চারে ৩২ বলে ২৮ রান করেন নাইম।

নাইমের বিদায়ে ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামেন ইনফর্ম তাওহিদ হৃদয়। রানের খাতা খোলার আগেই পেসার গুলবাদিন নাইবের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন হৃদয়।

৪ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে হঠাৎ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে  দলকে চাপমুক্ত করতে আফগানিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মিরাজ ও চার নম্বরে নামা শান্ত। ২০তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১শ পার করেন তারা। ২৪তম ওভারে ওয়ানডেতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ৬৫ বল খেলা মিরাজ। ৩১তম ওভারে ছক্কা দিয়ে ওয়ানডেতে পঞ্চম অর্ধশতক করেন শান্ত। এজন্য ৫৭ বল খেলেন তিনি।

শান্তর ১টি ছক্কা ও ২টি চারে পেসার ফজলহক ফারুকির করা ৩৩তম ওভারে ১৭ রান পায় বাংলাদেশ। ৩৫তম ওভারে দলীয় রান ২শতে পৌঁছায় টাইগাররা।

৪১তম ওভারে ৭৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান মিরাজ। ১১৫ বলে শতক পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত ওপেনার হিসেবে নামা মিরাজ। সেঞ্চুরির পর আঙুলে ক্র্যাম্প হবার কারনে ৪৩তম ওভারে আহত অবসর নেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১১৯ বলে ১১২ রান করা  মিরাজ। তৃতীয় উইকেটে শান্তর সাথে ১৯০ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৯৪ রান তুলেন মিরাজ। সব মিলিয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে এই জুটির রান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পক্ষে যেকোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। এর আগেরটি ২০১০ সালে ডাম্বুলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬০ রান করেছিলেন ইমরুল কায়েস ও জুনায়েদ সিদ্দিক।

মিরাজ ফেরার ওভারে ২৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১০১ বলে  দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ন করেন  শান্ত। পঞ্চমবারের মত বাংলাদেশের পক্ষে একই ইনিংসে দুই ব্যাটার করলেন।  অবশ্য  সেঞ্চুরির পরই  রান আউট হওয়া শান্ত  ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০৫ বলে ১০৪ রান করেন।

শান্তর পর রান আউট হন মুশফিকও। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৫ বলে ২৫ রান করেন মুশফিক। মুশফিকের বিদায়ে উইকেটে আসেন অভিষিক্ত শামীম হোসেন। ওয়ানডেতে নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ডিপ ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন শামীম। বোলার গুলবাদিনকে ছক্কা মেরে দলের রান ৩শ রান পার করেন শামীম।

৪৯তম ওভারে শামীম রান আউট হলেও সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে ১০৩ রান পায়  টাইগাররা। ওয়ানডেতে এটি তৃতীয় ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় রান বাংলাদেশের। পাশাপাশি এশিয়া কাপের মঞ্চে এটিই সর্বোচ্চ রান টাইগারদের।

৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। শামীম করেন  ৬ বলে ১১ রান। আফিফ হোসেন অপরাজিত ৪ রান করেন। আফগানিস্তানের মুজিব ও গুলবাদিন ১টি করে উইকেট নেন।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 × three =