মেক্সিকোর ছোট্ট একটি থিয়েটার হলে চলছিল মেক্সিকান ছবি ‘উইলি ওংকা অ্যান্ড দ্য চকোলেট ফ্যাক্টরি’। দর্শকদের সারিতে সেদিন ছবিটি দেখছিল মেক্সিকান এক কিশোরী। ছবিটি শেষ হওয়ামাত্র বাড়ির দিকে ছুট লাগাল সে। এরই মধ্যে তাঁর মনে বাসা বেঁধে ফেলেছে এক স্বপ্ন। অভিনেত্রী হতে হবে তাঁকে। তিনি নিজেকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন। শুধু অভিনেত্রীই নন, মেক্সিকান কোনো অভিনেত্রী হিসেবে প্রথম অস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। সালমা হায়েক নামের ওই অভিনেত্রী ১৯৬৬ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন।
মেক্সিকোর ভেরাক্রুজ রাজ্যের কোয়াচ্চাকায়োরকো শহরে তাঁর জন্ম। লেবানিজ পিতা ও স্পেনীয় মায়ের সংসারে শৈশব কাটে তাঁর। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী আর মা গান করতেন অপেরায়। মাত্র বারো বছর বয়সে আমেরিকার লুইজিয়ানার কনভেন্ট স্কুলে ভর্তি হন সালমা। ভর্তি হয়েছিলেন মেক্সিকো সিটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু পড়ালেখার পাট না চুকিয়েই শুরু করেন অভিনয়।
বয়স যখন সবে ২৩, অভিনয় করেন মেক্সিকান টেলিভিশন সিরিজ ‘তেরেসা’য়। ১৯৮৯ সালের এই টিভি ধারাবাহিক হায়েককে তারকা বানিয়ে দেয়। ১৯৯৫ সালে ‘দ্য অ্যালে অব মিরাকলস’ সিনেমাতে অভিনয় করেন তিনি। মেক্সিকোর চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সব থেকে বেশি পুরস্কার জিতে নেয় সেই ছবি। সালমাও তাঁর অভিনয় যোগ্যতা দিয়ে ‘এরিয়েল অ্যাওয়ার্ড’ (মেক্সিকান অ্যাকাডেমি অব ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড) এর জন্য মনোনীত হন।
১৯৯১ সালে হায়েক হলিউডে পাড়ি জমান। ইংরেজিতে দুর্বল হলেও ‘দেসপারাদো’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান। এই ছবিটিই তাঁকে হলিউডে জনপ্রিয় করে তোলে। এর পর থেকেই একের পর এক ছবি করতে থাকেন তিনি। ‘দ্য ফ্যাকাল্টি’, ‘ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট’, ‘ফুলস রাশ ইন’, ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন মেক্সিকো’, ‘আফটার দ্য সানসেট’ ও ‘ফ্রিদা’ সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ‘ফ্রিদা’ ছবিটি অস্কারে ছয়টি শাখায় মনোনীত হয়। এই ছবি দিয়েই সেরা অভিনেত্রী শাখায় মনোনয়ন পান সালমা হায়েক। তা ছাড়া তিনি পরিচালনা করেছেন ‘দ্য মালদোনাদো মিরাকল’ ছবিটি।
২০০৬ সালে ফরাসি উদ্যোক্তা ফসোঁয়া পিনুর সঙ্গে প্রেম হয় সালমার। ২০০৯ সালের ভালোবাসা দিবসে হয় বিয়ে। তাঁদের সংসারে আছে এক কন্যা সন্তান।