যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশিরা

হাবিব রহমান

চার কন্যার মধ্যে দুজন মন্ত্রিসভায়

যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন বাংলাদেশিরা। সদস্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনেও বিষয়টি পুনরায় স্পষ্ট হয়েছে। মোট ৩৮ জন বাংলাদেশি এবারের নির্বাচনের অংশ নেন। এর মধ্যে ৪ জন বিজয়ী হন। বিজয়ী চারজনের মধ্যে দুজন দেশটির মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন।

শুধু জাতীয় রাজনীতিই নয়, স্থানীয় সরকারেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশিরা। যেসব বাংলাদেশি-ব্রিটিশ ব্রিটেনের পার্লামেন্টের এমপি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন তাদের মধ্যে আরো আছেন আপসানা বেগম, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী প্রমুখ। এদের প্রত্যেকেই লেবার পার্টির এমপি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে নির্বাচিত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বিভিন্ন শহরের মেয়র হিসেবেও বাংলাদেশিরা দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত লুৎফর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটস, নাদিয়া শাহ ও নাসিম আলি ক্যালডনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সদ্য সমাপ্ত যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে চারজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নারী নির্বাচিত হয়েছেন। শুধু এবারই নয়, এই চার নারী যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক ও আপসানা বেগম।

শুধু তাই নয়, এই চারজনের মধ্যে আবার মন্ত্রিসভায় স্থান করে নিয়েছেন রুশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে রুশনারা আলী এবার পঞ্চমবারের মতো আর টিউলিপ সিদ্দিক চতুর্থবারের মতো লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন। আপসানা বেগম ও রূপা হকও একই দলের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে টিউলিপ সিদ্দিক

লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার কন্যা। তিনি লেবার নেতা স্যার কেয়ার স্টারমারের নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান করে নিয়েছেন ৪ বারের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।

যুক্তরাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিকের পদের নাম পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি (ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার)। সাধারণত অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থাকে এবং তারই একটির নেতৃত্বে থাকছেন টিউলিপ।

সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে লন্ডনের হ্যামস্টেড ও হাইগেট আসন থেকে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন টিউলিপ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। এর আগে হ্যামস্টেড ও কিলবার্ন আসনে টানা তিন বার এমপি হয়েছিলেন তিনি। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।

৪১ বছর বয়সী টিউলিপকে লেবার পার্টির অভ্যন্তরে নতুন প্রজন্মের তুমুল সম্ভাবনাময় রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। লেবার পার্টির নিরাপদ বা সেফ সিট নয়, এমন আসনে ২০১৫ সালের নির্বাচনে প্রথমবার লেবারের মনোনয়ন পেয়েই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে চমক সৃষ্টি করেন টিউলিপ।

১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন টিউলিপ। ব্রিটেনজুড়ে যে পাঁচ-ছয়টি আসনের জয়-পরাজয় নিয়ে ভোটার ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের উন্মুখ দৃষ্টি, তার মধ্যে একটি হলো লন্ডনের হ্যামস্টেড ও কিলবার্ন আসন। নব্বইয়ের দশক থেকে এই আসনটি ব্রিটেনের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। এই আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত হন টিউলিপ।

ব্রিটেনের রয়েল সোসাইটি অব আর্টসের ফেলো টিউলিপ রেজোয়ানা সিদ্দিক ২০১৫ সালে এই আসন থেকে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। লন্ডনে জন্ম নেওয়া ক্যারিয়ার পলিটিশিয়ান টিউলিপ ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হয়ে যুক্ত হন ব্রিটিশ রাজনীতিতে। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে টিউলিপ ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। তিনি ক্যামডেন কাউন্সিলের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী কাউন্সিলার।

ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. শফিক সিদ্দিক ও শেখ রেহানা দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে টিউলিপ দ্বিতীয়। তার মা-বাবার, অর্থাৎ শফিক-রেহানা দম্পতির বিয়েও হয়েছিল এই কিলবার্নেই।

আবাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে রুশনারা আলী

যুক্তরাজ্যের হাউজিং, কমিউনিটিস অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট মিনিস্ট্রির (আবাসন, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়) পার্লামেন্টারি আন্ডার-সেক্রেটারি অফ স্টেট পদ পেয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী।

তিনি পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে ২০১০ সালে প্রথম এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ওই আসনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে একবার ছাড়া সবসময় লেবার পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে আসছিল। এখন তার আসনের নাম বেথানল গ্রিন অ্যান্ড স্টেফনি।

রুশনারা আলী এবার নিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হন। ২০১০ সাল থেকেই তিনি বিরোধী দল লেবার পার্টির ছায়ামন্ত্রী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।

রুশনারা আলী ২০১০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর, তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক করেছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ৩৮ বাংলাদেশি

এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে আটজন, কনজারভেটিভ পার্টি থেকে দুজনসহ অন্যান্য দলের মনোনয়নে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোট ৩৮ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে নতুন করে আর কেউ জয়ী হতে পারেননি।

এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ১২ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তাদের মধ্যে ৪ জনকে পুনঃমনোনয়ন দেয় দলটি। এরা হলেন রুশনারা আলী (আসন: বেন্থাল গ্রিন এবং স্টেপনি), রুপা হক (আসন: ইলিং সেন্ট্রাল এবং অ্যাকটন), টিউলিপ সিদ্দিকী (আসন: হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্ন) এবং আপসানা বেগম (আসন: পপলার এবং লাইমহাউস)।

বাকি আট প্রার্থীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রুমি চৌধুরী (আসন: উইথাম), রাফিয়া আশরাফ (আসন: দক্ষিণ নর্দাম্পটনশায়ার), নুরুল হক আলী (গর্ডন এবং বুচান) এবং নাজমুল হোসাইন (আসন: ব্রিগ এবং ইমিংহ্যাম)

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীদের সংখ্যার তালিকায় লেবার পার্টির পরেই অবস্থান করছে ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন। এবারের নির্বাচনে মোট ৬ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন প্রার্থী হিসেবে। এরা হলেন গোলাম টিপু (আসন: দক্ষিণ ইলফোর্ড), প্রিন্স সাদিক চৌধুরী (আসন: বেডফোর্ড), মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন (আসন: দক্ষিণ হ্যাকনি), ফয়সাল কবির (আসন: অ্যালট্রিনশাম এবং সেল) মোহাম্মদ বিলাল (ম্যানচেস্টার রুশোলমি) এবং হালিমা খান (আসন: স্ট্র্যাটফোর্ড এবং বো)।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি তাদের প্রার্থীদের তালিকায় দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশকে মনোনয়ন দেয়। এরা হলেন আতিক রহমান (আসন: টটেনহাম, উত্তর লন্ডন) এবং সৈয়দ সাঈদুজ্জামান (আসন: দক্ষিণ ইলফোর্ড)।

এছাড়া পরিবেশবাদী রাজনৈতিক দল গ্রিন পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ছিলেন। এরা হলেন সাঈদ সিদ্দিকী (আসন: দক্ষিণ ইলফোর্ড), সৈয়দ শামসুজ্জামান শামস (আসন: পশ্চিম ওল্ডহ্যাম এবং রয়টোন) এবং শারমিন রহমান (আসন: দক্ষিণ লিসেস্টার)।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে রিফর্ম পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, সোশ্যালিস্ট পার্টি এবং স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি তাদের প্রার্থীর তালিকায় একজন করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশকে রেখেছে। এই প্রার্থীরা হলেন রাজ ফরহাদ (রিফর্ম পার্টি, আসন: দক্ষিণ ইলফোর্ড), রুবিনা খান (লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, আসন: বেন্থাল গ্রিন এবং বো), নাজ আনিস মিয়া (স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি, আসন: ডানফারমলাইন এবং ডলার) এবং মুমতাজ খানম (সোশ্যালিস্ট পার্টি, আসন ফোকস্টোন)।

এই ২৭ জন প্রার্থীর বাইরে ওয়াইস ইসলাম, আজমল মাশরুর, সুমন আহমেদ, এহতেশামুল হক, ওমর ফারুক, নিজাম উদ্দিনসহ ১১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নির্দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ব্রিটেনের পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট; নিম্নকক্ষের নাম হাউস অব কমন্স এবং উচ্চকক্ষের নাম হাউস অব লর্ডস। হাউস অব কমন্সের সদস্যদের নির্বাচনের নির্বাচনের ভিত্তিতে এমপি হতে হয়। নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের মোট আসন সংখ্যা ৬৫০টি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী। অর্থাৎ গড় হিসেবে প্রতিটি আসনের জন্য লড়াই করেন অন্তত ৫ জন থেকে ১৩ জন প্রার্থী।

বিজয়ী আরও দু’জনের পরিচিতি

রুশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিক ছাড়াও লেবার পার্টি থেকে আরও যে দুজন বাংলাদেশি ব্রিটিশ জয়ী হয়েছেন তারা হলেন ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে রুপা হক এবং বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে আপসানা বেগম। রুপা হক টানা চারবার এমপি নির্বাচিত হন।

রুপা হক: ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে টানা চতুর্থবার লেবার পার্টির মনোনয়নে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রুপা হক। এবারের নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট ২২ হাজার ৩৪০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী জেমস উইন্ডসর ক্লাইভ পেয়েছেন ৮ হাজার ৩৪৫ ভোট।

২০১৫ সালে লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন রুপা হক। এরপর টানা তিনবার তিনি পশ্চিম লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রুপা হক। তাকে সর্বদলীয় সংসদীয় মিউজিক গ্রুপের ভাইস চেয়ার এবং ক্রসরেলের সর্বদলীয় সংসদীয় পদে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

রুপা হকের পৈতৃক নিবাস পাবনা জেলার মুকসেদপুরে। তার বাবা মোহাম্মদ হক ও মা রুশনারা হক ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। রুপা হক রাজনীতিতে আসার আগে শিক্ষক ও লেখক ছিলেন। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার ও ২০০৪ থেকে ইউনিভার্সিটি অব কিংস্টনে শিক্ষকতা করেছেন।

রুপা হক ট্রিবিউন, দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে যুব সংস্কৃতির ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

আপসানা বেগম: লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়নে দ্বিতীয় বারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আপসানা বেগম। তিনি পেয়েছেন ১৮ হাজার ৫৩৫ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী গ্রিন পার্টির নাথালি বেইনফিট পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৫ ভোট।

আপসানার এই আসন নিয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশি আলোচনা ছিল তার সাবেক স্বামীর কারণে। তবে আপসানার সাবেক স্বামী এহতেশামুল হক তার ধারেকাছেও আসতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল ৪ হাজার ৫৫৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন।

২০১৯ সালে আপসানা লেবার পার্টির মনোনয়নে প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। ওয়েস্ট মিনিস্টার পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম হিজাব পরিহিত সংসদ সদস্য। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সোচ্চার ভূমিকা পালন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি।

আপসানার জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাওয়ার হ্যামলেটসেই। তার বাবা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর মনির উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশে তাদের আদি বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। রাজনীতি বিষয়ে কুইনমেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে স্নাতক এবং ২০১২ সালে সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কমিউনিটি লিডারশিপ বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন তিনি।

লেখাটির পিডিএফ দেখতে হবে ক্লিক করুন: নিবন্ধ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

5 × 5 =