যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে কোয়ার্টারে নেদারল্যান্ডস

যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে সবার আগে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ড। শনিবার দোহার খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মার্কিনীদের ৩-১ গোলে পরাজিত করেছে কমলা নেদারল্যান্ডস। ডাচদের হয়ে গোল করেছেন যথাক্রমে মেমফিস ডিপে, ডিফেন্ডার ডিলে ব্লিন্ড ও ডেনজেল ডামফ্রাইস। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে একমাত্র গোলটি পরিশোধ করেছেন হাজি রাইট । এ’ গ্রুপে সেনেগাল, ইকুয়েডর ও স্বাগতিক কাতারকে টপকে শীর্ষস্থান লাভ করে লুইস ফন গালের দল নেদারল্যান্ড। অপরদিকে গ্রুপ-বি’তে ইংল্যান্ডের পরে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে নক আউট পর্বে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্র।

২০০২ সালের পর থেকে উয়েফার কোন দলকে বিশ্বকাপে হারাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে ইউরোপীয়ান দলের বিরুদ্ধে পাঁচটিতে পরাজিত ও ছয়টিতে ড্র করেছে। বিশ্বকাপে এর আগে নক আউট পর্বে ইউরোপীয়ান দলগুলোর বিরুদ্ধে তিনটি নক আউট ম্যাচের কোনটিতেই জয়ের মুখ দেখেনি যুক্তরাষ্ট্র।

যে কারণে আজ সাফল্য অর্জনের মরিয়া ছিল মার্কিনিরা। শুরু থেকে ইতিবাচক ম্যাচও উপহার দেয় তারা। তৃতীয় মিনিটেই গোলের দারুন একটি সুযোগ সৃস্টি করে দলটি। এই সময় তারকা স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ ডাচ বক্সের সামনে একেবারে ফাকায় বল পেয়ে বাঁ পায়ে টোকা দিয়ে জালে জড়াতে গেলে বলটিতে ছোঁয়া লাগে ডাচ গোল রক্ষক আন্দ্রিয়েস নোপার্টের। ফলে এ যাত্রায় বেঁচে যায় নেদারল্যান্ডস।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিবাচক খেলার সামনে নেদারল্যান্ড প্রথম আক্রমণটি রচনা করে ৬ষ্ঠ মিনিটে। তবে আক্রমন রুখে দিতে বেগ পেতে হয়নি মার্কিন গোল রক্ষক ম্যাট টার্নারের। তবে চার মিনিট পরেই আচমকা গোল করে বসে হল্যান্ড । ১০ম মিনিটে ডিফেন্ডার ডনজেল ডামফ্রাইসের নিখুঁত ক্রসে ডি বক্সে বল পেয়ে যান ডিপে। চলন্ত বলটি ছোট বক্সের লাইন থেকে জোরালো শটে জালে জড়ান ডাচ স্ট্রাইকার (১-০)।

এরপর গোল পরিশোধের জন্য দ্রুত লড়াইয়ে ফিরে আসে যুক্তরাস্ট্র। ম্যাচের ১৫ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে পাওয়া পাসের বল নিয়ে দ্রুত ডাচ রক্ষনে ঢুকে পড়েন পুলিসিচ। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোছানো রক্ষনের সামনে কিছুই করতে পারেননি তিনি।

১৮ মিনিটে ব্লিন্ডের দারুন একটি সুযোগ রুখে দেন মার্কিন গোল রক্ষক টার্নার। ২১ মিনিটে ডিপের শটের বল ফিরে যায় মার্কিন ডিফেন্ডার টিম রিমের গায়ে লেগে। ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট বল দখলের লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে থাকলেও টার্গেটে শট নিতে পারেনি তারা। এই সময় বলের  ৫৪ শতাংশ দখলে ছিল যুক্তরাস্ট্রর। ৪২ মিনিটে ওয়াকার জিমারমানের ভলি দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন ডাচ গোল রক্ষক ।

তবে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ব্যবধান দ্বিগুন করে নেদারল্যান্ড। এ সময় ডেনজেল ডামফ্রাইসের ক্রসের বল জোড়ালো শটে জালে জড়ান ডিলে ব্লিন্ড (২-০)। ফলে লিড নিয়েই বিরতিতে যায় লুই ফন গালের শিষ্যরা।

বিরতি থেকে ফেরার পর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রতিআক্রমণ থেকে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে ডাচরা। এদিকে একের পর এক আক্রমনের সুফল পেতে ৭৬ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। এ সময় বদলি হিসেবে মাঠে নামা  ডিআন্দ্রে ইয়েডলিন দারুন ভাবে একটি বল পাঠিয়ে দেন আক্রমণের দায়িত্বে থাকা পুলিসিচকে। তিনি বলটি ক্রস করেন হাজি রাইটকে। বিলম্ব না করেই বলটি জালে ফ্লিক করে দেন রাইট (২-১)।

এতে ব্যবধান কমিয়ে আনলেও সেটি বেশীক্ষন ধরে রাখতে পারেনি মার্কিনিরা। ম্যাচের ৮১ মিনিটে গোল করে ডাচদের ফের আগের ব্যবধানে নিয়ে যান ডেনজেল ডামফ্রাইস। ব্লিন্ডের ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল করেন তিনি (৩-১)। এরপর আর লড়াইয়ে ফিরতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত  ৩-১ গোলের পরাজয় নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় তারা। অপরদিকে প্রত্যাশিত জয় নিয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে নেদারল্যান্ডস।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

twelve − three =