যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ১০ বছরে প্রায় ২৭ হাজার আটশ কোটি ডলার কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে।
‘সিলিকন সিক্স’ নামে পরিচিত বড় মার্কিন বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এক সংস্থার অভিযোগ, গত এক দশকে একই মুনাফা করেছে দেশটির এমন অন্যান্য কোম্পানির জন্য নির্ধারিত হারের চেয়ে প্রায় ২৭ হাজার আটশ কোটি ডলার কম কর দিয়েছে তারা। বিডিনিউজ২৪.কম
অ্যামাজন, মেটা, অ্যালফাবেট, নেটফ্লিক্স, অ্যাপল ও মাইক্রোসফট এই ছয়টি বিগ টেক জায়ান্ট কোম্পানি একসঙ্গে ‘সিলিকন সিক্স’ নামে পরিচিত।
গত ১০ বছরে এসব কোম্পানি ১১ ট্রিলিয়ন ডলার আয়ের পাশাপাশি ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
মার্কিন ‘ফেয়ার ট্যাক্স ফাউন্ডেশন’ বা এফটিএফ বলেছে, মুনাফা করার পরও এসব কোম্পানি জাতীয় ও ফেডারেল কর্পোরেশন কর হিসেবে গড়ে ১৮.৮ শতাংশ অর্থ দিয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জন্য করের হার ছিল গড়ে ২৯.৭ শতাংশ।
সংস্থাটি আরও বলেছে, নিজেদের বিভিন্ন ব্যবসায়িক মডেলে ‘হার্ডওয়্যারড’ কর এড়াতে পেরেছে সিলিকন সিক্স।
এফটিএফ-এর বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ঐতিহাসিক এ কর ফাঁকির সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রে এককালীন প্রত্যাবাসন কর বাদ দেওয়া হলে গত দশকে এ ছয়টি কোম্পানির গড় কর্পোরেট কর নেমে আসে ১৬.১ শতাংশে।
এফটিএফ-এর প্রধান নির্বাহী পল মোনাঘান বলেছেন, “আমাদের বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যাচ্ছে, কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি এখনও কর্পোরেট কাঠামোর মধ্যে রয়ে গেছে। সিলিকন ভ্যালির এ ছয়টি কোম্পানির কর্পোরেট কর, শতাংশের দিক থেকে, বিশ্বের অনেক অংশে ব্যাংকিং ও জ্বালানির মতো বিভিন্ন খাত যে পরিমাণ কর দেয় সে তুলনায় অনেক কম।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিষেক অনুষ্ঠানে অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস, অ্যাপল প্রধান টিম কুক ও মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ’সহ মার্কিন বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতির মাধ্যমে এসব কোম্পানির প্রভাবকে তুলে ধরার পর এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ পেল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে গার্ডিয়ান।
এফটিএফ বলেছে, মুনাফার তুলনায় কর দেওয়ার হার সবচেয়ে কম নেটফ্লিক্সের, কেবল ১৪.৭ শতাংশ, যেখানে মাইক্রোসফট দিয়েছে ২০.৪ শতাংশ কর। নানা বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যামাজনের আচরণ খারাপ হলেও কোম্পানিটি কর দিয়েছে ১৯.৬ শতাংশ, যেখানে মেটা দিয়েছে ১৫.৪ শতাংশ ও অ্যাপল দিয়েছে ১৮.৪ শতাংশ।
মেটার একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় কর নিয়ম মেনে চলি আমরা এবং যেসব দেশে ব্যবসা করি সেসব দেশে প্রয়োজনীয় সব ধরনের কর পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিতও করি।”
এ বিষয়ে নেটফ্লিক্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “বিভিন্ন দেশের সরকার কর নিয়ম ও হার নির্ধারণ করে এবং কোম্পানিগুলো তা মেনে চলে। আমরা যেসব দেশে কাজ করি সেখানকার প্রাসঙ্গিক কর নিয়ম ও প্রবিধান মেনে চলে নেটফ্লিক্স।”
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট ও অ্যাপলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো জবাব পায়নি গার্ডিয়ান।