ক্রেজি ইন লাভ গানের ভিডিওতে বাবলগাম ফোলানো কিংবা হোল্ড আপের ভিডিওতে বেসবল ব্যাট দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর—বিয়ন্সের মিউজিক ভিডিওগুলোতে এমন অসাধারণ অনেক দৃশ্য দেখা গেছে। আশির দশকে মাইকেল জ্যাকসন অথবা পরবর্তী সময়ে ম্যাডোনা যেভাবে মিউজিক ভিডিওতে যুগান্তকারী বদল এনেছিলেন, সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন বিয়ন্সে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘লেমনেড’ অ্যালবামের গানগুলোর ভিডিওতেও পাওয়া যায় কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও নারীশক্তির উদ্যাপন।
এরপর হঠাৎ মিউজিক ভিডিও নির্মাণ বন্ধ করেন দেন বিয়ন্সে। সর্বশেষ দুই অ্যালবাম ‘রেনেসাঁ’ (২০২২) ও ‘কাউবয় কার্টার’ (২০২৪) তিনি প্রকাশ করেছেন কোনো ভিডিও ছাড়াই। যদিও ভক্তরা এতে বেশ নিরাশ হয়েছেন। কিন্তু বিয়ন্সের এ পদক্ষেপ ছিল সুচিন্তিত ও ইচ্ছাকৃত। সম্প্রতি জিকিউ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিয়ন্সে খোলাসা করেছেন, কেন তিনি এখন মিউজিক ভিডিও নির্মাণের পক্ষে নন।
বিয়ন্সে বলেন, ‘একটা গান ভালোভাবে বুঝতে, তৈরি করতে, মাসের পর মাস সময় লাগে। সংগীত উপভোগের জন্যও সময় দরকার। একটা গানে শিল্পীর কণ্ঠ, যন্ত্রসংগীত—এসব থেকে মাঝে মাঝে শ্রোতাদের মন অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয় মিউজিক ভিডিও। প্রতিটি গানের পেছনে এত পরিশ্রম, তারপর সেগুলো নিয়ে অ্যালবাম তৈরি করা—এ প্রক্রিয়ায় বছরের পর বছর সময় যায়। মনে হয়, শুধু সংগীতটাই যথেষ্ট। এখন আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে চারপাশে ভিজ্যুয়ালের জয়জয়কার। আমাদের এখন ভিডিওর চেয়ে কণ্ঠস্বরের দিকে মনোযোগী হওয়া বেশি দরকার।’
এ ক্ষেত্রে ২০২২ সালের অভিজ্ঞতা অনেক সমৃদ্ধ করেছে বিয়ন্সেকে। ওই বছর রেনেসাঁ অ্যালবাম প্রকাশের পর ‘রেনেসাঁ ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ শিরোনামে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ৫৬টি কনসার্ট করেন তিনি। ওই ট্যুর নিয়ে তৈরি সিনেমা মুক্তি পায় গত বছর, যা বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।
বিয়ন্সে বলেন, ‘সারা বিশ্বের ভক্তরাই রেনেসাঁর গানগুলোর ভিজ্যুয়াল হয়ে উঠেছিলেন। আমরা আলাদা করে মিউজিক ভিডিওর শুটিং করিনি, ট্যুর থেকেই ভিজ্যুয়াল পেয়ে গিয়েছিলাম।’ বিয়ন্সের মতে, গান ভালো হলে দর্শকেরা তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপভোগ করবেন। তাই মিউজিক ভিডিও নির্মাণের চেয়ে লাইভ কনসার্ট করার দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিয়ন্সে।