কণ্ঠশিল্পী রুকসার রহমানের কবিতা

সুখ সেতো হাতের নাগালেই

আমি কষ্ট চেপে রেখে

শুধু স্বপ্ন বুনে চলেছি,

আঘাতগুলো মাটিতে

পুঁতে রাখতে শিখেছি।

কঠিন অংকগুলোকে,

খুব সহজ করে নিয়েছি,

ধৈর্যগুলোকে আজ

জিদ করে নিয়েছি।

জমে থাকা যন্ত্রণাকে,

চিরতরে কবর দিয়েছি।

চাপা কান্নাগুলো উড়িয়ে দিয়ে,

বাঁচতে ও বাঁচাতে শিখেছি।

স্বপ্নগুলোকে রঙে-ঢঙে রুপ দিয়ে,

মনের মতো সাজাতে শিখেছি।

অল্পতে তুষ্ট থাকায় সুখ খুঁজে,

মনটাকে সামলে নিয়েছি।

ছাড় দিয়েছি আবার,

কখনো ছেড়েও দিয়েছি।

পরাধীনতার শেকলে নয়,

অন্ধ বিশ্বাসেই ঠকেছি।

তাতে কি, কেউ তো জিতেছে,

তা দেখে শান্তি খুঁজে পেয়েছি।

 

তারপর,

নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি,

ছক বদলে জীবন গড়েছি।

নিজেকে ব্যস্ততায় রেখে,

সুখ স্বপ্ন দেখাটাও ছেড়েছি।

মধ্য রজনীতে জায়নামাজে,

শুধু তাকেই কেঁদে বলেছি,

ধৈর্যকে আমার শক্ত করো,

বেঁচে থাকার সাহায্য চেয়েছি।

হঠাৎ একদিন থরথরে কাঁপা দেহ,

ফোনে হাউমাউ কান্নার শব্দ,

বলে আমি দারুণ ঠকা ঠকেছি।

পথিমধ্যে প্রতিদিনই পিছু পিছু হাঁটা,

পথ আটকানো, রাস্তা থামানো,

অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখলেও,

বারবার করুণ ওই চেহারা,

চোখের সামনে এসে হাজির।

নারী মনে যে বড্ড মায়া হয়,

দেখি চোখেমুখে তার কষ্টের বন্যা।

বলে ওগো উদ্ধার করো আমায়,

চোখের পানি আর আকুতিকে থামায়,

পুরো গল্প শুনে, আমি যেন,

ঠপাস করে আকাশ থেকে পড়েছি।

নিশ্চুপ হয়ে একধ্যানে শুনেছি,

ব্লাকমেইলে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

শত্রুর কবলে তার জীবন যায় যায়।

 

নরম মনে জায়গা হলো তার,

পাহাড় সমান অপরাধেও,

জানলাম সে, চক্রান্তের শিকার।

দুমড়ানো নিষ্প্রাণ দেহটাকে,

আবার নতুন প্রাণ দিয়েছি।

নোংরা জলে ডুবতে বসার আগেই,

জীবন বাঁচাতে তাকে টেনে তুলেছি,

বাঁচার জন্য আকুতি মিনতি করলে,

হাতটি ধরে তাকে শক্তি দিয়েছি।

‘জিরো’তে ভেঙে না পড়ে, আবারো

শুরু করার সাহস জুগিয়েছি।

 

মনে মনে সংকল্প গড়েছি,

শূন্যকে পরিপূর্ণ করার সে এক,

কঠিন জিদ ধরে বসেছি।

চেষ্টাগুলোকে পাশে থেকে,

সফলতাটাকে দেখতে চেয়েছি।

বদলানোর যথেষ্ট সুযোগ

দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি,

না হয় সময়ের কাছে আমি,

একটু সাময়িক হেরেছি।

ঠকে গিয়েও আলগা হেসে,

চুপটি করে বসে থেকেছি।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানি,

মনে প্রাণে ঠিকানা তার একটাই,

ধ্যানে, জ্ঞানে, সংকল্প, বাসনায়,

স্বপ্ন, সুখে, ভাবনা আর আরাধনায়,

তার একটাই সুখ, একটাই সাধনা,

সে তো আমি ছাড়া, আর কেউ নয়।

 

ক্ষুদ্র ভুলেতে, কারো নিজের লজ্জায়,

তার সাথে কি মানায়, রাগ-অভিমান।

দোষে-গুণে আমরা মানুষ,

কেউ তারেঊর্ধ্বে নয়।

আমারো ভুল, তোমারও ভুল

কারো কম, কারো বেশি।

ভুলে ভুলে যদি হও মশগুল,

জীবন তোমাকে নেবে কুপথে,

ক্ষণেক্ষণে ফোটাবে হুল।

জীবন থেকে ঝরে যাবে,

সদ্য ফোটা অগণিত সুবাসিত ফুল।

 

চলার পথে কাঁটা থাকবে,

বোকার মতো ফাঁদে না পড়ে,

একটু সামলে চলতে হয়।

সৃষ্টিকর্তার বিচার সঠিক,

একটু ধৈর্যের সময় পার।

হয় আজ, না হয় কাল,

সকল হিসাব মিলবে আমার।

 

কঠিন ভেবেছে যারা,

তা চ্যালেন্জ করে নিয়েছি।

বারবার পোশাক বদলের মতো,

মন বদলের সহজ হিসাবের,

দলে আমি যে নই।

পুরোনো জিনিস আরেকটু

ঘষামাজাতে দোষ কই?

কেউ বলবে ভালো,

আবার কেউ বলবে কালো,

কেউ আড়ালে হাসবে,

আবার কেউ একটু কাশবে,

তাতে আমার কি যায় আসে?

শুভাকাঙ্ক্ষীরা মন থেকে,

দোয়া করবে, ভালোবাসবে।

টিটকারি মারো, ফিটকিরি মারো,

আমার জীবন, আমার কাছে।

নিজের সুখ বিসর্জনে,

যদি অন্য সবাই হাসে,

সেই সুখেতে জীবন সুখী,

আমার জীবন, আমার ভাবনা,

তাতে অন্যের কি যায় আসে।

 

যা শুধু জানে আমার ‘মন’

আর আমার ‘বিধাতা’,

হাসিমুখে কত নিরব যুদ্ধ

গোপনে চালিয়ে গিয়েছি,

বিশ্বস্ততা ও ধৈর্যের প্রতিদান

আজ ঠিকই পেয়েছি।

কিছু গোপন ইচ্ছাগুলো,

অন্তর্যামীকে একান্তে বলেছি।

যত খড়-কুটো পুড়িয়ে হোক,

আমি তার ফলাফল পেয়েছি।

 

হাসিখুশিটাকে ফেরি করেছি,

কষ্টের হাঁড়িতে ঢাকনা লাগিয়েছি।

জীবন অংকে গোজামিল হিসাবেও,

ফলাফল ঠিক মিলিয়েছি।

তবে এখন আমার মাঝে আমাকে

লুকিয়ে রাখতে শিখে গেছি,

টিকে থাকার ফর্মুলাকে বেশ

আয়ত্তে নিয়ে ফেলেছি,

নিজের ভুলগুলোকেও

গণনা করে শুধরে নিয়েছি।

তারপরও ভাগ্যের উপর

কারো নেই হাত, তাই সব,

নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়েছি।

মনের বুঝে, পাবো খুঁজে,

বারবার শতবার চেষ্টা তো করেছি।

সুখ-দুঃখ দুই মিলেই জীবন,

পরিশেষে আমি তাই মিলিয়ে দেখেছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

20 + 18 =