
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলতি পর্বের গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজ সিরিজের পাঁচ টেস্টের প্রথম তিনটি জিতে অ্যাশেজ নিজেদের কাছে ধরে রাখলো অস্ট্রেলিয়া।পার্থ, ব্রিসবেন, এডিলেড তিন টেস্টে দাপুটে জয় বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি পর্বে পয়েন্টস টেবিলে শীর্ষ স্থানে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান সুরক্ষিত করল।
বর্তমান ফর্মে অস্ট্রেলিয়া এমসিজিতে বক্সিং ডে টেস্ট এবং এসসিজিতে নববর্ষের টেস্ট জিতে ইংল্যান্ডকে ক্যাঙ্গারু ওয়াশ করলে অবাক হবো না। আজ এডিলেড টেস্টের শেষ দিনে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রতিরোধ ৩৫২ রানে সাঙ্গ করে ৮২ রানে টেস্ট জয় করে অস্ট্রেলিয়া।
এবারের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা বার বার আহত হচ্ছে। সিরিজে খেলাই হলো না জস হেজেলউডের।পার্থ এবং ব্রিসবেনে ছিল না অধিনায়ক পাট কামিন্স।বিশেষ কৌশলের কারণে ব্রিসবেনে নেওয়া হয়নি নাথান লায়নকে। এডিলেডে শেষ মুহূর্তে ছিটকে পরে স্টিভ স্মিথ।
কিন্তু ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং সকল ক্ষেত্রেই অস্ট্রেলিয়ার দক্ষতা, দৃঢ়তার সঙ্গে ইংল্যান্ডের পার্থক্য এতো বিশাল যে সিরিজ অনেকটাই একপেশে হয়ে পড়েছে। এডিলেড টেস্টে তবু কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলো। টেস্ট ম্যাচটি শেষ দিনে গড়ালো। এই টেস্টে দলে ফেরা পাট কামিন্স আর নাথান লায়নের কাছে হেরে গেলো ইংল্যান্ড।
আর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া তথা এডিলেডের ঘরের ছেলেরা আলেক্স কারী ব্যাট হাতে ১০৬ এবং ৭২ এবং উইকেটের পেছনে ৬টি শিকার ধরে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হলো। ট্রাভিস হেড স্বভাব সুলভ ঢংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে করলো ১৭০ রান। ইংল্যান্ড অন্তত এডিলেড টেস্টে জাক ক্রলি, বেন স্টোকস, জেমি স্মিথের ব্যাট হাতে লড়াই আর জোফরা আর্চারের বোলিং থেকে স্বস্তি পেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ এখন বিশ্বসেরা। এই বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে সফল হবার মতো ব্যাটিং দক্ষতা কোন দলের আছে বলে মনে হয় না।
যাহোক অ্যাশেজ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এমসিজি আর এসসিজি উইকেট অনেকটাই ভিন্ন ধরনের। কিন্তু বর্তমান ইংল্যান্ড দলের বোলিং মান অস্ট্রেলিয়াকে বিপদে ফেলার মতো না। অস্ট্রেলিয়া হয়ত ক্যামেরুন গ্রিনকে নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে আছে। খাদের কিনার থেকে ফিরে এসেছে উসমান খাজা।
মেলবোর্ন স্মিথ ফিরে আসবে, অস্ট্রেলিয়া হয়তো বিউ ওয়েবস্টারকে খেলাতে পারে। আহত নাথান লায়নের স্থানে হয়ত স্পিন অপসন খুঁজবে। ইংল্যান্ডের কিন্তু বিকল্প সীমিত। মেলবোর্ন এবং সিডনিতে হয়ত সোয়েব বশির খেলবে। ইংল্যান্ডের মূল সমস্যা কিন্তু বোলিং এবং অত্যন্ত সাধারণ মানের ফিল্ডিং।
একসময়ে অ্যাশেজ সিরিজগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জমজমাট ছিল। এখন অ্যাশেজের তুলনায় দিন দিন বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
অ্যাশেজ সিরিজ। এডিলেড টেস্ট
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৩৭১ অল আউট (আলেক্স কারি ১০৬, উসমান খাজা ৮২, মিচেল স্টার্ক ৫৪, জোশ ইংলিস ৩২, জোফরা আর্চার ৫/৫৩, ব্রেইডন কার্স ২/৮৯, উইল জ্যাক্স ২/১০৫)
অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ৩৪৯ অল আউট (ট্রাভিস হেড ১৭০, আলেক্স ক্যারি ৭২, উসমান খাজা ৪০, জস টং ৪/৭০, ব্রাইডন কেস ৩/৮০) )
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস ২৮৬ অল আউট (বেন স্টোকস ৮৩, হ্যারি ব্রুকস ৪৫, জোফরা আর্চার ৫১, পাট কামিন্স ৩/৬৯, স্কট বোলান্ড ৩/৪৫, নাথান লায়ন ২/৭০)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ৩৫২ অল আউট (জাক ক্রলি ৮৫, জেমি স্মিথ ৬০, উইল জ্যাক্স ৪৭, ব্রাইডন কেস ৩৯, পাট কামিন্স ৩/৪৮, মিচেল স্টার্ক ৩/৬২, নাথান লায়ন ৩/৭৭)
অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে টেস্ট জয়ী।
ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়: আলেক্স কারি