শীর্ষ ১০০ ফুটবলারের সেরা মেসি

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা উপহার দিয়ে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ধরে নেওয়া হয়েছিল আর্জেন্টাইন এই সুপারস্টারের এটিই হবে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। সে কারণে অন্তত একবার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারকে আরো সমৃদ্ধ করতে বিশ্বকাপের শিরোপা হাতে নেবার লক্ষ্য ছিল মেসির। কাতারে তিনি শুধুমাত্র দলকে বিশ্বকাপই এনে দেননি, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বলও জয় করেছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলারের শীর্ষ খেলোয়াড়ের তালিকাটি বছর শেষে ঘোষণণা করে। এবার কাতার বিশ্বকাপ ঐতিহ্যের বাইরে গিয়ে নভেম্বর-ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বিশ্বকাপের পারফরমেন্স শেষেই গার্ডিয়ান সেরা ১০০ জনের নাম ঘোষনা করতে পেরেছে। গতকাল শীর্ষ ১০০ ফুটবলারের তালিকা প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান। বিচারকদের দৃষ্টিতে মেসিই হয়েছেন নাম্বার ওয়ান।

অথচ ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে পরাজিত হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলেছিলেন মেসি। ফাইনালে মেসি পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। ঐ সময় আবেগী মেসি বলেছিলেন, ‘আমার জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচের সুযোগ শেষ হয়ে গেছে। যা করার আমি করে ফেলেছি, চ্যাম্পিয়ন হতে না পারাটা সত্যিই কষ্টের।’

কিন্তু দুই মাস পরে ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মেসি অবসর ভেঙ্গে আবারো জাতীয় দলে ফিরে আসেন। যদিও রাশিয়া বিশ্বকাপে তিনি দলকে সাফল্য দিতে পারেননি। কিন্তু তিন বছর পর কোপা আমেরিকা জিতে দেশকে প্রথম বড় কোন টুর্ণামেন্টের শিরোপা তুলে দেন। কিন্তু ঐ শিরোপার সাথে সাথে বিশ^কাপের প্রত্যাশার চাপও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আর্জেন্টাইনদের হতাশ করেননি দেশের অন্যতম সেরা এই ফুটবল তারকা।

বিচারক প্যানেলের ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মেসি। ১৩ শতাংশ বিচারকের চোখে বছরের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন করিম বেনজেমা। সেরা তিনে আছেন এই তিনজন। গত বছর রবার্ট লিওয়ানদোস্কি ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এক নম্বর হয়েছিলেন।

প্রায় এক দশক ধরে গার্ডিয়ান এই তালিকা তৈরি করছে যেখানে মেসি কখনই শীর্ষ তিনের বাইরে যাননি। ধারাবাহিক ভাবেই তিনি নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন। যে কারণে বিচারকদের কাছেও তিনি দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। শীর্ষ দুই থেকে তিনি একবারই বাদ পড়েছিলেন ২০১৮ সালে, যখন লুকা মড্রিচ ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছিলেন।

এই তালিকায় ম্যানচেস্টার সিটির সর্বোচ্চ ১২ জন খেলোয়াড় সুযোগ পেয়েছেন। শীর্ষ ১০০ জনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খেলোয়াড় রয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের। শীর্ষ দশের মধ্য চারজন খেলোয়াড় রয়েছেন গ্যালাকটিকোদের, করিম বেনজেমা, মড্রিচ, ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও থিবো কোর্তোয়া।

জাতীয় দল হিসেবে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ ১৪জন খেলোয়াড় রয়েছেন এই তালিকায়। এতেই প্রমানিত হয় শুধুমাত্র বিশ্বকাপের পারফরমেন্সের উপর একক ভাবে ভিত্তি করে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। লিগ হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়দের আধিক্য রয়েছে। বিশে^র অন্যতম শক্তিশালী এই লিগের ৪৩জন খেলোয়াড় রয়েছেন এই তালিকায়।

বর্তমান ও সাবেক ফুটবলার ছাড়াও কোচ, সাংবাদিকেরা মিলে মোট ২০৬ জন বিচারক মূল্যায়ন করেছেন ফুটবলারদের। প্রত্যেককে ৪০ জন খেলোয়াড়ের নাম দিতে হয়েছে। কোন বিচারকের তালিকায় ১ নম্বরে থাকা খেলোয়াড় পেয়েছেন ৪০ পয়েন্ট, দুইয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৯ পয়েন্ট। এভাবে ৪০ নম্বর খেলোয়াড় পেয়েছেন ১ পয়েন্ট। তবে অন্তত পাঁচ বিচারকের ভোট না পেলে কেউ বিবেচিত হননি তালিকায়। একাধিক খেলোয়াড়ের মোট পয়েন্ট সমান হলে যে খেলোয়াড় বেশি বিচারকের ভোট পেয়েছেন তাকে ওপরে রাখা হয়েছে।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

18 − thirteen =