সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা জন্মদিন আজ

দেশীয় সংগীতাঙ্গনে যারা কালজয়ী প্লে-ব্যাক শিল্পী হিসেবে আলোকিত হয়ে আছেন, তাদের মধ্যে কনকচাঁপা অন্যতম। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গুণী সংগীতশিল্পী নিজেকে সবসময় একজন কণ্ঠশ্রমিক হিসেবেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েই তিনি শ্রোতা-দর্শকের ভালোবাসার কনকচাঁপায় নিজেকে পরিণত করেছেন। ১৯৯৪ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যতগুলো ছবি হয়েছে প্রায় সবগুলো ছবিতেই ছিল কনকচাঁপার কণ্ঠের উপস্থিতি। বিশেষ করে শাবনূরের ছবি মানেই ছিল কনকচাঁপার গান। শাবনূরের কণ্ঠের সঙ্গে কনকচাঁপার কণ্ঠের অনেকটা সাদৃশ্যতার কারণেই সে সময় কনকচাঁপাকে দিনে চার-পাঁচটি গানও রেকর্ড করতে হয়েছে।

এই প্রথিতযশা কণ্ঠশিল্পী আজ পা রাখছেন জীবনের ৫৬তম বছরে। রাত ১২টার পর থেকেই ভক্ত-অনুরাগী ও কাছের মানুষদের কাছ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছায় ভাসছেন কনকচাঁপা। তবে জন্মদিনকে ঘিরে কনকচাঁপা সচরাচর বিশেষ কোনো আয়োজন করেন না। দিনটিতে তিনি অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই অতিবাহিত করেন। তাই যথারীতি এবারের জন্মদিনেও তার জন্মদিনকে ঘিরে নেই বিশেষ আয়োজন। তবে দিনটিতে তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তার বহু ভক্তের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন। চলচ্চিত্র ও সংগীত জগতের বহু শিল্পী তার জন্মদিনকে উপলক্ষ করে যে স্ট্যাটাস দেন তাতেও তিনি সাড়া দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মিডিয়া, পত্র-পত্রিকাও তার জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ সংবাদ করে থাকে। আজকের দিনে পুরোটা সময়ই তিনি পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন বলে মনস্থির করেছেন।

কনকচাঁপা বলেন, ‘জন্মদিনে আমার কখনোই নিজ উদ্যোগে কোনো বিশেষ আয়োজন করা হয় না। তবে মাঝেমধ্যে আমার স্কুলের শিক্ষার্থী, ভক্তরা বিশেষ আয়োজন করে ফেললে তখন অনেকটা নিরুপায় হয়েই তাতে অংশ নিতে হয়। যেহেতু এই সুন্দর একটি দিনে পৃথিবীতে আমার জন্ম হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সুন্দর একটি জীবন হয়েছে আমার। সুস্থ-সুন্দরভাবে বেঁচে আছি, তাই মহান আল্লাহর কাছে সব সময়ই আমি শোকরিয়া করি। আগামী দিনগুলোতেও যেন এভাবে বেঁচে থাকতে পারি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।’

কনকচাঁপার পারিবারিক নাম রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা। ১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯ সালে ঢাকার শান্তিবাগে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার দাদার বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে। তার বাবা আজিজুল হক মোর্শেদ। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় কনকচাঁপা। বাবা আজিজুল হক মোর্শেদের কাছেই প্রথম সংগীতের হাতেখড়ি। তার পর বাংলা সংগীতের মহারথী প্রয়াত সংগীতশিল্পী বশীর আহমেদ এবং স্বনামধন্য সুরকার (স্বামী) মইনুল ইসলাম খানের কাছে সংগীতে তালিম নিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করেন এই সুরের পথিক। চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুলসংগীত, লোকগীতিসহ প্রায় সব ধরনের গানে তিনি সমান পারদর্শী।

প্রায় ৪০ বছর ধরে সংগীতাঙ্গনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন কনকচাঁপা। নারী শ্রেষ্ঠ প্লে-ব্যাক কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিন ও রুনা লায়লার পরে তিনিই একাধিক তিনবার জাতীয় চলচ্চিত পুরস্কার লাভ করেন। এ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে তিন হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা। প্রকাশিত হয়েছে ৪৬টি একক গানের অ্যালবাম এবং ১৫টি যৌথ অ্যালবাম। করেছেন ৪ হাজারের বেশি স্টেজ শো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

4 × 4 =