নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে সাংবাদিক ওমর ফারুক বিশাল (২৭) নিহত হয়েছেন। তিনি একাধারে গীতিকার, কবি ও লেখক। নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়নের ধুকুন্দী গ্রামের নূরুল হকের ছেলে।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় ফেরার পথে এ দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। এসময় তার সঙ্গে থাকা ইমাম হোসেন সজল নামে এক যুবক আহত হয়েছেন।ভৈরব হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেলটি আহত ইমাম হোসেন সজলের ছোট ভাই এমদাদুলের। এমদাদুল পুলিশে চাকরি করেন বলে জানা গেলেও তার পদবি ও কর্মস্থল কোথায় এখনো জানা যায়নি।
বিশালের কর্মস্থল জি নিউজ-এর বার্তা সম্পাদক সুমন মোস্তফা বলেন, ‘বিশাল পরশু বিকালে একদিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন। আজ অফিসে যোগ দেয়ার কথা। সম্ভবত অফিসের উদ্দেশেই তিনি বাইকে করে ফিরছিলেন। কিন্তু তার তো আর ফেরা হলো না। একদিনের ছুটি নিয়ে আজীবনের ছুটিতে চলে গেলেন। এই বেদনা সহ্য করা যায় না।’
এদিকে ওমর ফারুক বিশালের চাচাতো ভাই মামুন জানান, ‘এক বন্ধুর মোটরসাইকেলে করে সকালে ঢাকায় রওয়ানা দেন বিশাল। মোটরসাইকেলের পেছনে বসে ছিলেন তিনি। আমাদের বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে মরজাল বাস স্ট্যান্ডের পাশে তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয় একটি কাভার্ড ভ্যান। সেখানেই প্রাণ হারান বিশাল। তার বন্ধুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।’
বিশালের শেষ ফেসবুক পোস্ট গ্রামে বন্ধুদের সঙ্গে রবিবার (৬ নভেম্বর) রাতে। লিখেছিলেন, ‘নদীর ধারে হাঁসভোজন’। রবিবার দিনে প্রকাশ করেছেন বিলে মাছ ধরার ছবি, স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা। পোস্টগুলো মনে করিয়ে দেয়- তিনি সম্ভবত বিদায় নিতেই গিয়েছিলেন জন্মগ্রামে!
ওমর ফারুক বিশাল দৈনিক যায়যায়দিন, সমকাল, অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজসহ বেশ ক’টি গণমাধ্যমে কাজ করেছেন গত সাত/আট বছর ধরে। একই সময়ে তিনি অনেক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। বিশালের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে সংগীতশিল্পী সাব্বির নাসিরের গাওয়া ‘তুমি দমে দম’, উপমহাদেশের নন্দিত সংগীতশিল্পী শ্রীকান্ত আচার্যও গেয়েছেন বিশালের গান। বিশালের এই অকাল প্রস্থানে গভীর শোক জানিয়েছে গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ।