সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ৯.৬৫ শতাংশ: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ৯.৬৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ সালে সুন্দরবনের জাতীয় পশু বাঘ জরিপে ১২৫টি বাঘ পাওয়া গেছে। প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ২.৬৪। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ১১ টি, বৃদ্ধির হার ৯.৬৫ শতাংশ  এবং এই হার ২০১৫ সালের তুলনায় ১৭.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সুন্দরবন বাঘ জরিপ ২০২৪ এর ফলাফল  ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ ছিল, আর ঘনত্ব ছিল ২.১৭।

২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায়, আর ঘনত্ব ছিল ২.৫৫। ২০১৮ সালে বাঘের সংখ্যা ৮টি বেড়েছিল এবং বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।

রিজওয়ানা বলেন, ২০২৩-২৪ সালের জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছেএ তবে শাবকদের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ ছোট বয়সে শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ২০১৫ ও ২০১৮ সালে মাত্র ৫টি শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জরিপের ছবি ও তথ্য বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। একাজে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়। জরিপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হয়। সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রীডে ১ হাজার ২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন রেখে দেয়া হয়। যার মধ্যে ৩৬৮টি গ্রীডে বাঘের ছবি পাওয়া যায়। প্রায় ১০ লক্ষাধিক ছবি ও ভিডিও থেকে ৭ হাজার ২৯৭টি বাঘের ছবি পাওয়া যায়। এত বেশি সংখ্যক বাঘের ছবি এর আগে পাওয়া যায়নি। রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির এই খবর দেশের সবার জন্য আনন্দের। বাঘ সংরক্ষণে সরকার ৫৩.৫২ শতাংশ বন রক্ষিত এলাকা ঘোষণা, ৬০ কি.মি. নাইলন ফেন্সিং, ১২টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, ক্ষতিপূরণ ও পুরস্কার প্রদান এবং ৪৯টি ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম গঠনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছে। বাঘ সংরক্ষণ ও বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমএ আজিজ, খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে ও প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বাঘ জরিপ কার্যক্রমের ওপর ভিডিও প্রদর্শন, বাঘ জরিপের রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ও পুরো প্রক্রিয়া পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের পর পরিবেশ উপদেষ্টা বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাথে মতবিনিময় করেন। যেখানে ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সদস্যবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আলোচনা করেন।

বাসস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

sixteen − 7 =