স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে

সামান্য সচেতনতাই বাঁচিয়ে দিতে পারে আমাদের আপনজনকে। পরিবারের নারী সদস্যদের সহায়তা ছাড়া আমাদের একটা দিন কল্পনা করাই দায়।

কিন্তু তারা নিজেদের খোঁজ রাখারই সুযোগ পান না। কোনো ব্যাধি তাদের শরীরে বাসা বাঁধছে কি না, সে ব্যাপারেও তারা উদাসীন।

প্রতি বছর অনেক নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। যেখানে ৩৮ শতাংশ স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় কেবল প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে।

৩০ বছরের পর থেকে নিয়মিত নিজে নিজে ঘরে বসেই স্তন পরীক্ষার মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ শনাক্ত করা সম্ভব।

এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা সহজ হয় এবং অল্প সময়েই ক্যান্সার থেকে মুক্তি মেলে। কারণ স্তন ক্যান্সারের বিশ্বমানের সব ধরনের উন্নত চিকিৎসাই এখন দেশে রয়েছে।

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের কিছু বিষয়

ব্যায়াম: অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে, ব্যায়াম স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারী। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের বা ৭৫ মিনিটের জোরালো কার্যকলাপের পরামর্শ দেয়।

ওজন পর্যবেক্ষণ: যেকোনো সচেতন মানুষের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক কঠিন রোগের পূর্ব লক্ষণ ওজন বাড়া বা কমা থেকে পাওয়া যায়। তাই, সবসময় এটি পর্যবেক্ষণ করুন। তাছাড়া অতিরিক্ত ওজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

অবসর সময়: তথ্য বলছে, অবসর সময়ে বা ঘুমের সময় বৃদ্ধির জন্য ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ছে। যারা দিনে ৬ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় বসে ব্যয় করেন ক্যানসারের দশগুণ বেশি ঝুঁকিতে আছেন তাদের থেকে যারা ৩ ঘণ্টার বেশি বসে সময় কাটান না।

কম চর্বিযুক্ত খাবার: কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে। তাছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে, অন্য রোগ থেকেও দূরে রাখে।

মদ্যপান থেকে বিরত থাকা: মদ্যপান করলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।

ধূমপান পরিত্যাগ: যারা অল্প বয়স থেকে ধূমপান করেন তাদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ধূমপান পরিত্যাগ করুন।

স্তন ক্যানসার নিয়ে কথা হয় চিকিৎসক মো. মেজবাহ উল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, মধ্যবয়সী সব নারীদের উচিত নির্দিষ্ট সময় পর নিজেদের স্তন পরীক্ষা করানো। স্তন ক্যান্সারে সচেতনতার বিকল্প নেই।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্তন ক্যানসার পরীক্ষার জন্য নিয়মিত চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি, আলাদা একটি বিশেষায়িত সেন্টারও চালু আছে। আসুন পরিবারের নারী সুস্থতা কামনা করতে এই দায়িত্ব আমরা নেই। পরিবারের আর একজন আপন মানুষকেও আমাদের হাত ছেড়ে দূরে হারিয়ে যেতে দেব না আমরা, এমনই প্রত্যাশা রইল ১০ অক্টোবর স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবসে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 − 1 =