অচেনা অস্ট্রেলিয়াকে গুড়িয়ে জয়যাত্রা অব্যাহত রাখলো দক্ষিণ আফ্রিকা

সালেক সুফী

এমন বিবর্ণ অস্ট্রেলিয়াকে কখন দেখেছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে? প্রথমে ভারত এবং কাল দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে লড়াই ছাড়া শোচনীয় ভাবে হেরেছে সেটি সচরাচর দেখা যায় না। জানিনা কাল টস জয় করে কেন তুখোড় ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাটিংয়ে আমন্ত্রণ করেছিল পাট কামিন্স? অস্ট্রেলিয়ানদের বোলিংকে তুলোধোনা কুইন্টন ডি কক (১০৬ বলে ১০৯), এইডেন মারকরাম (৫৬), টেম্বা বাভুমা (৩৫) করায় আবারো ৩১১/৭ রানের বিশাল স্কোর গড়লো দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ দশ ওভারে হেজেলউড, স্টার্ক, কামিন্স কিছুটা নিয়ন্ত্রণ না করলে কালও কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ৪০০ রানের কাছাকাছি পৌঁছে যেত। বিস্মিত হয়েছি রান তাড়া করায় অস্ট্রেলিয়ার যুদ্ধ ছাড়া আত্মসমর্পনে। ওয়ার্নার ,মার্শ, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল, না পারলো পেস খেলতে না পারলো স্পিন সামাল দিতে। একমাত্র কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিল মারনাস লেবুশাঙ (৪৬)। আমি ১৮ বছর অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাস জীবনে নানা পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দেখি। এবারের দুই ম্যাচে পাট কামিন্সের অস্ট্রেলিয়াকে দেখে কি বলবো আমার রূপালী গিটারের আয়ুব বাচ্চুর সূরে গাইতে মন চাচ্ছে। ….”সেই তুমি কেন অচেনা হলে।”

উড়ন্ত ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে অবশ্যই সাধুবাদ দিবো। প্রথম ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ডস দুমড়ে মুচড়ে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রীলংকাকে গুড়িয়ে দিয়েছিলো। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ স্কোর ৪২৮/৫, তিন তিনটি সেঞ্চুরী, এইডেন মার্ক্রমের ৪৯ বলে শতরান।  ওই ম্যাচের বিশাল জয় যে বিস্ময়কর একমাত্র অর্জন না তা কাল ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে কাল প্রমান করলো। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা দক্ষিণ  আফ্রিকাকে ওদের চোকার নাম ঘুচিয়ে এবার প্রমানের পালা।  ভাবতে পারেন দলটি বিশ্বকাপ জয় দূরের কথা ফাইনালেও পৌঁছতে পারেনি।

কাল কুইন্টন ডি কক উপর্যুপরি সেঞ্চুরি করা ছাড়াও, ভালো ব্যাটিং করে প্রথম ম্যাচের ওপর সেঞ্চুরিয়ান এইডেন মারকরাম (৫৬), টেন্ডা বাভুমা (৩৫)। সুবিধা জনক অবস্থানে থেকেও শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিযার ভালো বোলিংয়ে কিছু উইকেট দ্রুত হারানোয় কাল ৩৮০ বা ৪০০ হয়নি।

কিন্তু ৩১১ পুঁজি নিয়েও কাল দক্ষিণ আফ্রিকার পেস এবং স্পিন বোলাররা কাল সংহারীমূর্তি ধারণ করে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ভেঙে চুরমার করে দেয়।  কাগিসো রাবাদা (৩/৩৩), কেশব মহারাজ (২/৩০), তাব্রিজ শামসি (২/৩৮) আর মার্কো জানসেন (২/৫৪) কাঙারুদের দাঁড়াতেই দেয় নি। দুই ম্যাচে দুই পরাজয় নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার এবার সেমি ফাইনাল গভীর অনিশ্চয়তার মুখে।  অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনা জ্বলন্ত সূর্যের মত দেদীপ্যমান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

thirteen + six =