সালেক সুফী
আধুনিক ধুম-ধারাক্কা ক্রিকেটের রমরমা সময়ে খুব কম টেস্ট ৫ দিন খেলেও বন্ধ্যা থাকে। চট্টগ্রামের সাগর পারের সাগরিকায় সদ্য সমাপ্ত টেস্ট ম্যাচটিতে ৫ দিনে ২.৬ ইনিংস শেষ হলো। উইকেটে হয়তো কিছু ছিল স্পিন এবং পেসারদের জন্য। নাহলে বাংলাদেশ নাঈম, তাইজুল, সাকিব কেন স্পিন দিয়ে চ্যালেঞ্জ করলো? কেনই বা বাংলাদেশ রাজিতার সুইং খেলতে হিমশিম খেলো? তবে বলতেই হয় বাংলাদেশের জয়ের ক্ষুধা ছিল না। নাহয় চতুর্থ দিন সকালের সেশনে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেও অতি রক্ষণাত্মক খেলে এগিয়ে যাবার সুযোগ হাত ছাড়া করতো না। যাহোক আরো একটি জয় পরাজয় অনির্ধারিত টেস্ট শেষে পরিসংখ্যান দাঁড়ালো বাংলাদেশে খেলা দুই দলের ৯ টেস্টে শ্রীলংকার জয় ৬, তিনটি ড্র, জয় পায়নি বাংলাদেশ। বাগে পেয়েও বাংলাদেশ কৌশলগত ভুলে জয় পেলো না। তাসকিন, মেরাজের ইনজুরির পর শরিফুলও ছিটকে গেলো আহত হয়ে। এখন ঢাকা টেস্টে পেস এটাক সাজাতে নির্বাচকদের হিমসিম খেতে হবে।
জয় পর্যায়ের বাইরে অর্জনের আছে দুটি দলের বেশ কিছু। অতিথি দলের মাথেউস, করুনারত্নে, মেন্ডিস, চান্দিমাল, দিকওয়ালা সবাই ভালো ব্যাটিং করেছে। স্পিনার্সরা সাদামাটা মনে হলেও পেসাররা কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা উন্মোচন করেছে। শ্রীলংকার প্রথম ইনিংসটি এঙ্গেল একই ধরে রেখেছিলো।
বাংলাদেশের পক্ষে তামিম, মুশফিক, লিটন, জয় ভালো ব্যাটিং করেছে। তামিমের ১০ম শত রান, মুশফিকের ম্যারাথন ইনিংসে ৮ম শত রান বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয়। জয় বাংলাদেশ দলের দীর্ঘদিনের সূচনাকারী ব্যাটসম্যান হিসাবে থিতু হবার ইঙ্গিত দিয়েছে। মুশফিক প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে ৫০০০ রানের মাইল ফলক অর্জন করে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব দিয়েছে। মেহেদির স্থানে সুযোগ পেয়ে নাঈম প্রথম ইনিংসে ভালো বল করলো। তাইজুল উভয় ইনিংসে দীর্ঘ সময় বোলিং করেছে। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিজয় ছিনিয়ে আনার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিল। সাকিব স্বভাব সুলভ কিপ্টে বোলিং করে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখেছিলো। শান্ত, মমিনুলের ফর্ম নিয়ে শঙ্কিত হবার কারণ আছে। তামিম, মুশফিক শত রান করলেও আউট হবার ধরণ ভালো লাগে নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওদের উন্নত পেস আতংকের সামনে বাংলাদেশকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হতে পারে।
যাক সে কথা। ৫ দিনে আড়াই ইনিংস শেষ করার জন্য উইকেট যতটুকু দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী দুই দলের বিশেষত বাংলাদেশের রক্ষণাত্মক কৌশল। কিছু অর্জন করতে হলে কিছু কৌশলগত ঝুঁকি নিতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং করার সময় অতি রক্ষণাত্মক ছিল সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেও। জানিনা এগুলো নিয়ে সিরিজ শেষে আফসোস করতে হয় কিনা।