অবশেষে জরিমানা গুণেই রেহাই মিলল সুগার

ট্রাফিক আইন ভাঙার মামলায় শেষ পর্যন্ত কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি জনপ্রিয় এই কে পপ তারকাকে। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে বিটিএস তারকা সুগার রেহাই মিলেছে কেবল জরিমানা দিয়ে। ট্রাফিক আইন ভাঙার মামলায় শেষ পর্যন্ত কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি জনপ্রিয় এই কে পপ তারকাকে। খবর বিডিনিউজ২৪.কম

দক্ষিণ কোরিয়ার আইনি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে সুগার বিরুদ্ধে এমন কোনো বড় ধরনের মামলা হয়নি, যার জন্য তাকে বড় ধরনের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

দেশটির আইন অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত বিচার প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে কোনো ধরনের শুনানি ছাড়াই সুগার জরিমানা নির্ধারণ করা হয়। এবং সুগা সেই যৎসামান্য জরিমানা দিয়ে এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।

গত ৬ আগস্ট হাননামের বাড়ি থেকে বৈদ্যুতিক স্কুটার নিয়ে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েন ৩১ বছর বয়সী সুগা। এরপর মদ্যপ অবস্থায় স্কুটার চালানোর অভিযোগে সুগার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দেশটির পুলিশ।

তখন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয় সুগাকে।

দক্ষিণ কোরিয় আইন অনুসারে, কারও রক্তে শূন্য দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কিংবা এর বেশি অ্যালকোহল পাওয়া গেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

ওই সময় গায়কের রক্ত পরীক্ষা করে নির্ধারিত মাত্রার চেয়েও বেশি, শূন্য দশমিক ২২৭ শতাংশ অ্যালকোহল পাওয়া যায়। পরে ইয়ংসন পুলিশ স্টেশনে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সুগার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।

সে সময় বলা হয়েছিল সুগার বিরুদ্ধে ২০ মিলিয়ন ওয়ান জরিমানাসহ তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডও হতে পারে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুগা অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে যে কোনো শাস্তি ও সমালোচনাকে মাথা পেতেন নেবেন তিনি।

এছাড়া বিটিএসের মিউজিক এজেন্সি বিগহিট মিউজিক থেকেও বিবৃতি দিয়ে সুগার পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। আরো বলা হয়, ওই দুর্ঘটনায় সুগা নিজে তার স্কুটার থেকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিলেন কিন্তু কোনো পথচারী এতে আহত হননি।

দুঃখ প্রকাশ করে অগাস্টের শেষ নাগাদ এক বিবৃতিতে সুগা বলেন, “এত মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত। আমার অসতর্কতার জন্য আমাকে যারা ভালোবাসেন তাদেরও কঠিন সময় পাড়ি দিতে হচ্ছে। আমার ভুলে কারণে ব্যান্ডের সদস্য এবং ভক্তদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করেছি।”

দলের সুনামও ‘নষ্ট হচ্ছে’ বলেও আক্ষেপ ঝরেছে সুগার কণ্ঠে।

ভ্যারাইটি লিখেছে মামলা হওয়ার পর সুগার কঠিন শাস্তি দাবি করে উঠেপড়ে লাগে বিটিএস বিরোধী একটি দল। সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই সুগাকে বিটিএস ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।

এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার দুইটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম জেটিবিসি এবং আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপ একটি ভিডিও প্রকাশ করে। যে ভিডিওতে দেখা গেছে রাস্তা দিয়ে এক তরুণ বেপরোয়াভাবে বাইক চালিয়ে যাওয়া সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই ভিডিওর তরুণটি সুগা নয়। কারণ সুগার দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ফুটপাতে। পরে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য জেটিবিসি ক্ষমা প্রার্থনাও করে।

কেবল জরিমানা দিয়ে সুগার পার পেয়ে যাওয়া নিয়েও সরব হয়েছে বিটিএস বিরোধীরা। তাদের অনেকেরই ভাষ্য, সুগাকে যথেষ্ঠ ‘শাস্তি দেওয়া হয়নি’।

সুগার শাস্তি নির্ধারণের আগে সুগাবিরোধী দল এবং সুগা ভক্তরা সোশাল মিডিয়ায় মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়।

নিজেদের বিটিএসের সমর্থনে ‘প্রকৃত কণ্ঠস্বর’ হিসেবে দাবি করা ‘গ্লোবাল আর্মি ইউনিয়ন’ নামের একটি গ্রুপ সুগার হয়ে মাসখানেক ধরে কথা বলে আসছে। বিটিএস অনুরাগীদের নিয়ে গঠিত ১২৭ দলের এই গ্রুপটির দাবি ছিল, বর্তমান আইনেরর বাইরে গিয়ে সুগাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না।

গ্লোবাল আর্মি ইউনিয়ন’র অভিযোগ হল সুগা অর্থাৎ বিটিএস এর সুনাম ধসিয়ে দিতে কোরিয়ার কিছু সংবাদমাধ্যম ‘বাড়াবাড়ি ভূমিকা’ নিয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

তাদের ভাষ্য, একটি মামুলি মামলাকে গুরুতর করে তোলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে সুগার বিরুদ্ধে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা বিটিএস ভক্ত যারা নিজেদের ‘বিটিএস আর্মি’ বলে পরিচিয় দিয়ে থাকেন, তারা সুগাকে সমর্থন করে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন।

এই কদিনে সুগার গান এতবেশি বাজানো হয়েছে যে বিলবোর্ডের শতকরা ৫০ ভাগ জায়গা দখল করেছে এই গায়কের গান।

সুগা বর্তমানে সেনাবাহিনীতে আছেন। তবে বাহিনীতে যোগদানের পরই স্বাস্থ্যগত কারণে সুগাকে সামরিক প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাই সেনাবাহিনীতে সামাজিক সেবা কর্মকর্তা হিসেবে সুগা তার প্রশিক্ষণের শতকরা ৫০ ভাগ শেষ করেছেন।

কিছুদিন আগে বিটিএস সদস্য হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন জিন।

জিন, সুগা ছাড়া অন্য পাঁচ সদস্য জে হোপ, ভি, আরএম, জিমিন ও জাংকুক এখনো সেনাবাহিনীতে সেবা দিচ্ছেন। ২০২৫ সালে পুরো ব্যান্ড দল আবার একসঙ্গে হবে বলে জানিয়েছে, বিগ হিট মিউজিক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

10 − 7 =